নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫ ডিসেম্বর ২০১৭,শুক্রবার, ১৮:১৯
খুলনা সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ঐতিহাসিক খান জাহান আলী দীঘির আকার ও আকৃতি পরিবর্তনের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে আদালত জাহান আলী দীঘি সুরক্ষার নির্দেশ প্রদান করেছেন।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি গ্রহণ করে রুলসহ অন্তবর্তীকালীন এ আদেশ দেন।
রুলে খান জাহান আলী দীঘির দীঘি সুরক্ষা, পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে বিবাদীগণের ব্যর্থতা কেন বেআইনি, আইন বহির্ভূত ও জনস্বার্থের পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না এবং কেন ঐতিহাসিক দিঘীটি ভরাটের কবল থেকে সংরক্ষণ করার ও ভরাটকৃত অংশ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ প্রদান করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
আদেশে ওই দিঘি ভরাটের ক্ষেত্রে মো: জাকির হোসেন মৃধা, শেখ মারুফ হোসেন ও কাজী মাহবুবুর রহমান মৃধার কার্যক্রমের উপর ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ভরাটকারীদের কার্যক্রম কঠোরভাবে তদারকিপূর্বক দিঘিটির বর্তমান অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিল করতে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনার জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালককে এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।
আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী ও সাঈদ আহমেদ কবীর।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ৯নং ওয়ার্ডে মুজগুন্নী-খালিশপুর এলাকায় মুজগুন্নী মৌজায় ঐতিহ্যবাহী খানজাহান আলী দিঘিটি অবস্থিত। এলাকার পানি নিষ্কাশনের অন্যতম আধার হিসেবে এই দিঘিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া সুপেয় পানির সংকট থাকায় এলাকার নিম্নবিত্ত পরিবার দৈনন্দিন গৃহস্থালি কাজে এই দিঘির পানি ব্যবহার করে থাকে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে দীঘিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২০১৫ সাল থেকে কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি এই দিঘিটি ভরাট করার অপপ্রয়াস শুরু করে। মো: জাকির হোসেন মৃধা, শেখ মারুফ হোসেন ও কাজী মাহবুবুর রহমান মৃধা নামক এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি (মামলার অন্যতম বিবাদী) নিজেদের স্বার্থে জনগুরুত্বপূর্ণ এ দিঘী ভরাট করতে শুরু করলে এলাকাবাসীর আবেদনে বেলা জনস্বার্থে মামলাটি দায়ের করে যার পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য আদালত দিঘীটি সংরক্ষণে উল্লেখিত রুল ও নির্দেশ প্রদান করেন।