আজম আলী তৃতীয় বিয়ে করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে ডিভোর্স দেয়ায় আদালতে মামলা হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের ক্ষেণপাড়া গ্রামে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলার দেবীপুর ইউনিয়নের ক্ষেণপাড়া গ্রামের মরহুম আব্বাস আলীর ছেলে আজম আলীর সাথে মুজাবনী ১১ মাইল এলাকার হাফিজ উদ্দীনের মেয়ে হাবিবা বেগমের ১,০৫,০০১ টাকা মোহরানা নির্ধারণ করে সামাজিকভাবে বিয়ে হয় ৯ জুন ২০০৯ সালে।
মামলার বাদি ও দ্বিতীয় স্ত্রী হাবিবা বেগম বলেন, প্রথম বিয়ের কথা গোপন করে আমাকে বিয়ে করে আজম আলী। দীর্ঘ আট বছর ঘর করে সুমাইয়া নামে একটি মেয়ে আছে। হঠাৎ প্রেম করে নারীলোভী স্বামী ্আজম আলী রংপুর জেলাধীন পীরগঞ্জ উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে সুরভীকে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে বিয়ে করে। উল্লেখ্য, সুরভীর এর আগে দুইবার বিয়ে হয়েছিল। আর সুরভীকে বিয়ে করেই আমাকে ডিভোর্স দেয় আজম আলী। তাই বাধ্য হয়েই ঠাকুরগাঁও আদালতে ৫/১০/২০১৫ ইং তারিখে মামলা (নং-৩৫৩) করেছি। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
হাবিবার বাবা হাফিজ উদ্দীন (৬০) বলেন, মেয়ে হাবিবা (২৬) ও নাতনী সুমাইয়া (৫) আমার বাসায় আছে। হাবিবাকে বিয়ে দিয়ে যৌতুকের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেছি। চাল, ডালসহ সার্বিক সহযোগিতা করেছি দীর্ঘ দিন। এত সহযোগিতা করার পরেও জামাই আমার মেয়েকে তালাক দিয়েছে। মামলা করেছি, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। যাতে আর কোনো বাবাকে মেয়ে নিয়ে এত অমানবিক কষ্ট শিকার করতে না হয়।
শিশু সুমাইয়াকে হাসি খুশি মনেই তার নাম ঠিকানা বলে। সে একটি এনজিও স্কুলে শিশু শ্রেণীতে পড়ছে। তার বাবা আজম আলীর কথা জিজ্ঞাসা করলেই সে ভরাক্রান্ত হৃদয়ে বলে, বাবার ফোন ধরি না। নানা আমার জন্য বিস্কুট আনে। পিতা-মাতার সম্পর্কের অবনতি শিশুটির মনে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
হাবিবা বেগম বলেন, ০৫-১০-২০১৫ ঠাকুরগাঁও আদালতে মামলা করেছি, ২-৩ তারিখ পরেই আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। দীর্ঘ দিন হলো আমি আদালতে হাজিরা দেই; কিন্তু সে আদালতে উপস্থিত হয় না। ঢাকায় সে সুন্দর চাকরি করে তৃতীয় স্ত্রী সুরভীকে নিয়ে ঘর-সংসার করছে। আর আমি আদালতে হাজিরা দিতে দিতে ক্লান্ত। বর্তমানে আজম আলী রাজধানী ঢাকার ‘ভি অ্যান্ড আর ফ্যাশন গার্মেন্ট’, পিয়ারা বাজার, চৌরাস্তা, গাজীপুরে মেকানিক পদে কর্মরত।
নারীবাদী সংগঠনগুলো একটু সহযোগিতার হাত প্রসারিত করলেই আমি হয়তো ন্যায়বিচার পাবো।
অভিযুক্ত আজম আলীর মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে ধরা যায়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সইম উদ্দীন বলেন, প্রথম বিয়ে গোপন রেখে হাবিবাকে বিয়ে করে আজম। আর আট বছর ঘর-সংসার করে গোপনে সুরভীকে বিয়ে করে হাবিবাকে ডিভোর্স দেয়া সত্যিই দুঃখজনক। আজমের শাস্তি হওয়া দরকার বলে এলাকাবাসী মনে করেন।