২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইরাকে মাহদি সরকারের পতন

-

ইরাকে ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মুখে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদি পদত্যাগ করেছেন। পার্লামেন্ট মাহদি ও তার মন্ত্রিসভার পদত্যাগ অনুমোদন করেছে। দুই মাসব্যাপী প্রচণ্ড বিক্ষোভে চার শতাধিক লোক নিহত হওয়ার পর মাহদি সরকারের পতন হলো। এর আগে গত সপ্তাহান্তে পবিত্র শহর নাজাফে ইরানি কনসুলেটে আগুন দেয়ার ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৭০ জন প্রতিবাদকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তেহরান সমর্থিত আধা সামরিক বাহিনী গুলিবর্ষণ করে দূতাবাসে হামলায় অংশ নেয়া প্রতিবাদকারীদের হত্যা করে। লেবানন, ইরাক ও ইরানের নিজের রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে দমনাভিযান কি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারবে? ইরাকে সরকারের দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশী হস্তক্ষেপের অভিযোগসহ নানা প্রতিবাদে রাজপথ উত্তপ্ত করে তোলেন আন্দোলনকারীরা। প্রধানমন্ত্রী মাহদির নিজ শহর নাসিরিয়া ও নাজাফে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অর্ধশত বিক্ষোভকারী নিহত হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর ওপর পদত্যাগের চাপ আরো বেড়ে যায়। পরদিন তিনি পদত্যাগ করেন। তেহরান ইরাকের পবিত্র শহরে তাদের উপস্থিতি আরো জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি তারা সেখানে ২০ হাজার ইরানি সিকিউরিটি পার্সোনাল পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
মাহদির পদত্যাগে বিক্ষোভকারীরা উল্লাস প্রকাশ করেছে। কিন্তু মাহদির পদত্যাগে কি অবস্থার উন্নতি হবে?
লেবাননে হিজবুল্লাহ আন্দোলনকারীদের সাথে সঙ্ঘাতে লিপ্ত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট আউন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিবরান বাসিল হিজবুল্লাহকে সমর্থন দিচ্ছেন। তবে হাসান নসরুল্লাহ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বিক্ষোভকারীদের হত্যা করা হলে তারা লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধেই ঐক্যবদ্ধ হবে।
ইরাক ও লেবাননে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ পয়েন্ট অব নো রিটার্নে পৌঁছে গেছে। জনপ্রিয় এই বিক্ষোভ দমাতে যারাই চেষ্টা করুক না কেন, শেষ পর্যন্ত হয়তো তারাই আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। ইরাক ও লেবাননে ইরানি কর্তৃত্বের অবসানের জন্য যে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছেÑ তার পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা এখনো অনিশ্চিত। তবে স্থানীয় জনগণের বিরুদ্ধে বাইরের শক্তি ইরান হস্তক্ষেপ ও দমনাভিযান অব্যাহত রাখলে শেষ পর্যন্ত তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করে।


আরো সংবাদ



premium cement