২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চাগোস দ্বীপ নিয়ে মরিসাস-ব্রিটেন বৈরিতা

-

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতন হলেও তাদের সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতা যেই তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই আছে। তাদের বিশাল সাম্রাজ্যের সূর্য অস্ত যাওয়ার পর কিছু ক্ষুদ্র ভূখণ্ড এখনো সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতা নিয়েই দখল করে রেখেছে। ভারত মহাসাগরের চাগোস দ্বীপ এরই একটি। ব্রিটেন, হংকং, ম্যাকাত্ত এবং অন্যান্য উপনিবেশ সমঝোতার মধ্যে দিয়ে ছাড়লেও আফ্রিকার ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্র মরিসাসের সাথে দ্বন্দ্ব রেখেই চলেছে।
১৮৫৪ সালে ব্রিটেন চাগোস দ্বীপ দখল করে। ১৯৬৮ সালে মরিসাসের স্বাধীনতা লাভের পরও ব্রিটেন চাগোস দ্বীপ ইস্যুতে দেশটির ওপর অন্যায় চাপ অব্যাহত রেখেছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে হেগের আন্তর্জাতিক আদালত ব্রিটেনকে চাগোসের নিয়ন্ত্রণ মরিসাসের কাছে হস্তান্তরের রায় দেয়। আন্তর্জাতিক আদালতের মতে, মরিসাসে বিদেশী দখলদারিত্বের অবসান আইন অনুযায়ী হয়নি। কারণ, স্বাধীনতা প্রাপ্তির তিন বছর আগে ব্রিটেনের ইঙ্গিতে চাগোস দ্বীপ মরিসাসের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। অতীতে উপনিবেশ শাসনের সময় ব্রিটিশরা ডিভাইড অ্যান্ড রুল এবং ত্যাগের সময় ডিভাইড অ্যান্ড ক্যুইট নীতি প্রয়োগ করেছে। মরিসাসেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এই বলে যে, এটি রায় নয়, অ্যাডভাইজরি মতামত। হেগে মরিসাসের নিযুক্ত প্রতিনিধির মতে, মরিসাসের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় আয়নার মতো স্বচ্ছ। এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। এখন মরিসাস ও ব্রিটেনের কাজ হচ্ছে একত্রে বসে রায় বাস্তবায়ন। চাগোস ইস্যুতে পর্দার আড়ালে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র মরিসাসের বিরুদ্ধে এক মেরুতে কাজ করছে।
মরিসাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জগন্নাথ আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে মরিসাসবাসী ও চাগোনিয়ানদের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে অভিহিত করেছেন। আফ্রিকান ইউনিয়নের লিগ্যাল কাউন্সিল নামিরা নেগেস বলেন, এটি এখনো অচিন্তনীয় ব্যাপার যে, আফ্রিকার কিছু অংশ এখনো ইউরোপিয়ানদের ঔপনিবেশিক শাসনের আওতায়।
আন্তর্জাতিক আদালতের রায়, মরিসাসের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সমর্থন তারপরও শঙ্কা থেকেই যায়। কারণ, ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ নিজের দখলদারিত্বে রাখতে আর্জেন্টিনার সাথে যুদ্ধে নামতেও ব্রিটেন দ্বিধা করেনি।
মরিসাস তথা আফ্রিকার উপনিবেশ মুক্তকরণ অনেক দীর্ঘ যন্ত্রণা আর রক্তপাতের। আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে এখনই ব্রিটেনকে চাগোস দ্বীপ ছাড়তে হবে। তাহলেই আফ্রিকা ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল