২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ট্রাম্পের বিচারক নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক

-

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ডোনাল্ড ট্রাম্পের। একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য, ঘন ঘন টুইট আর কয়েক দিন পরপর কর্মকর্তাদের পদচ্যুত করে সব সময় তিনি গণমাধ্যমের আলোচনার কেন্দ্রে থাকেন।
বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশের নেতা হিসেবে এ আলোচনা ইতিবাচক হতো যদি তিনি ‘বিতর্ক’ শব্দটা দূরে রাখতে পারতেন। চলতি মাসেই (অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি পদে ব্রেট কাভানাকে মনোনয়ন দেন। এরপরই শুরু হয় তুমুল আলোচনা। কারণ ৩৬ বছর আগে ছাত্র থাকা অবস্থায় কাভানা যৌন নির্যাতন করেছিলেন সহপাঠিনী ড. ক্রিস্টিন ব্লেজিকে। বিচারক পদে নাম আসার পর ব্লেজি এ অভিযোগ করেন। এমনিতে পশ্চিমা দেশগুলোতে এসব অভিযোগ তেমন আলোচনায় আসে না। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তি যখন রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে উঁচু অবস্থানে আসবেন, তখন তার জীবনের আদ্যোপান্ত ইতিহাস নিয়ে চলে নানা অনুসন্ধান।
তবে কাভানার নিয়োগের ক্ষেত্রে ওসব বাধা হতে পারেনি। উল্টো ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে একজন জোন মানচিন দলের বাইরে গিয়ে কাভানাকে ভোট দিয়েছেন। এতে ৫০-৪৮ ভোটে কাভানা জয় পেয়ে যান। কাভানার এ জয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টেও রিপাবলিকানেরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে কাভানার বিচারপতি হওয়া সুপ্রিম কোর্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বড় ধরনের বিজয়। বিশেষ করে একের পর এক বিতর্ক ও প্রতিবাদ উপো করে যেভাবে তিনি নিয়োগ পেলেন তাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থায় ডানপন্থীদের অবস্থান আরো শক্তিশালী হলো বলে মনে করছেন তারা।
বিবিসির খবরে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাভানাকে বিচারপতি হিসেবে মনোনীত করার পরই তার বিরুদ্ধে একের পর এক যৌন হয়রানির অভিযোগ আসতে শুরু করে। এসব অভিযোগ নিয়ে তদন্তও শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। এই তদন্ত যখন প্রায় শেষ মুহূর্তে এসে উপনীত, ঠিক তখনই তার নিয়োগের পে রায় দিলো।
এ নিয়ে গার্ডিয়ান পত্রিকার কলামে রিচার্ড উল্ফ লিখেছেন, কাভানার বিরুদ্ধে যৌন হামলার অভিযোগ নিয়ে যখন সবাই সোচ্চার হয়ে উঠেছে, ঠিক সেই সময় এসব অভিযোগ তদন্ত ছাড়াই সিনেটে তিনি প্রধান বিচারপতি হিসেবে মনোনীত হয়ে গেলেন। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কলঙ্কজনক অধ্যায়ের দিকে ঠেলে দেয়া হলো।
আমেরিকায় সর্বোচ্চ বিচারকদের মনোনয়ন দেন প্রেসিডেন্ট। তবে দু’টি রক্ষাকবচের কারণে যাকে খুশি বিচারক পদে নিয়োগ দিতে পারেন না। প্রথম কারণটি হলো, প্রেসিডেন্ট মনোনীত প্রার্থীকে প্রকাশ্য জিজ্ঞাসাবাদ করার অধিকার রয়েছে সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির। এ জিজ্ঞাসাবাদকালে প্রেসিডেন্টের মনোনীত ব্যক্তির অতীত যেকোনো কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। দ্বিতীয়ত, সিনেটে ভোটাভুটি। সিনেট কমিটির দেয়া প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে যে ভোটাভুটি হয়, তাতে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেন যেকোনো সিনেটর। কিন্তু হতাশার কথা হলো, সিনেট অধিবেশনে কাভানার পক্ষে তার সমর্থকেরা শুধু সমর্থনই দেননি; তারা সেখানে সৎ-চরিত্রবান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একই সাথে তারা বিচার বিভাগীয় পক্ষপাতহীনতা নিয়ে দীর্ঘ ভাষণও শুনিয়ে দিয়েছেন। এতে বোঝা যায় বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে ট্রাম্প দলীয় পরিচয়টাকে কতটা গুরুত্ব দিয়েছেন এবং দলের অন্য সদস্যদের কাছ থেকে সমর্থন আদায় করেছেন।
কাভানার নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার পর ট্রাম্প বলেন, কাভানাকে ডেমোক্র্যাটদের ভয়াবহ আক্রমণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেই নারীকে (ক্রিস্টিন) কম অপমানের সম্মুখীন হতে হয়নি। ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত ক্রিস্টিন ভুল করেই কাভানার নাম বলেছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টিন ব্লেজি ফোর্ড ১৭ বছর বয়সে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনলে সুপ্রিম কোর্টে কাভানার নিয়োগ ঝুলে পড়ে। ক্রিস্টেন বলেন, ১৯৮২ সালের সেই ঘটনার সময় কাভানা মাতাল ছিলেন। হাইস্কুলে পড়ার সময় এক নৈশ পার্টিতে কাভানা মাতাল অবস্থায় তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। অন্য এক অভিযোগে ডেবোরাহ রামিরেজ নামের এক নারী জানান, ইয়েল বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ার সময় ডরমিটরি পার্টিতে কাভানা জোরপূর্বক তার শরীরে স্পর্শ করেন। জুলি নামের আরেক নারী জানান, ১৯৮২ সালে কাভানার উপস্থিতিতে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।
এসব অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছেন কাভানা। বরং তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে তার বিরুদ্ধে এমন অরুচিকর অভিযোগ তোলা হয়েছে। এটি ডেমোক্র্যাটি ষড়যন্ত্র।
তবে কাভানার বিরোধীরা এখনো নিয়মিত রাস্তায় তার নিয়োগ নিয়ে ছোট ছোট বিক্ষোভ করছে। যেখানে প্ল্যাকার্ডে লেখা থাকে ‘লজ্জা, লজ্জা’। এ কারণেই প্রশ্ন উঠেছে ট্রাম্প মূলত কতটা ন্যায়বিচারের পক্ষে? ঘ


আরো সংবাদ



premium cement
অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি, বন্ধ থাকবে পরীক্ষা কুড়িগ্রামে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত বার্সেলোনাতেই থাকছেন জাভি চতুর্থ দফা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি : এবারের তাপদাহ শেষেই বৃষ্টিপাতের আশা ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজে হাজারো মুসুল্লির কান্না পোরশার নোচনাহারে আগুনে ৩টি দোকান পুড়ে গেছে খুলনা বিভাগ ও ৬ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ ‘১ টাকার কাজ ১০০ টাকায়, ৯৯ যায় মুজিব কোটে’

সকল