২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুই গোয়েন্দার অভিযান

-

এক.
উঠে দাঁড়াল সুজা। দুই হাত দুই পাশে ছড়িয়ে দিয়ে ভারসাম্য বজায়ের চেষ্টা করল। কাজ হলো না। স্লেজের রেইল এসে তার গোড়ালি ধরে টান মারল। পিছনে উল্টে পড়ল সে। ফুসফুসের সব বাতাস বেরিয়ে গেল। বরফশীতল পানি যেন গিলে নিলো ওকে।
বরফের কিনার খামচে ধরার চেষ্টা করল সে। বরফের নিচে আটকে পড়ে বাস্তবে কাউকে মরতে দেখেনি, তবে সিনেমায় দেখা ভয়ঙ্কর দৃশ্যগুলো ফুটে উঠল চোখের সামনে। নদীর তলায় জুতো ঠেকল। পানি বেশি না। সোজা হয়ে দাঁড়ালে তার বুকপানি হয়। দশ ফুট চওড়া একটা ফোকর তৈরি হয়েছে বরফে। রেজা আর জোসির নাম ধরে চিৎকার করে ডাকতে লাগল।
‘ভয় নেই, দাঁড়িয়ে থাকো,’ জবাব দিলো রেজা। ‘তোমাকে তুলে আনার ব্যবস্থা করছি আমরা।’
বরফের মতো ঠাণ্ডা পানি মারাত্মক বিপজ্জনক। দেহের অতি মূল্যবান উত্তাপ শুষে নিয়ে দ্রুত শীতল করে ফেলছে দেহটাকে। মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে, নিজেকে বোঝাল সুজা। উপরে ওঠার জন্য দাপাদাপি করলে আরো দ্রুত ফুরাবে জীবনীশক্তি।
ধীরে ধীরে বুক দিয়ে পানি আর ভাঙা বরফের টুকরো ঠেলে কিনারের দিকে এগোতে পারে, কিন্তু সাহস করল না। স্রোতের টানে বা অন্য কোনোভাবে যদি ডুবে গিয়ে বরফের স্তরের নিচে চলে যায়, কোনো দিন আর বেরোতে পারবে না।
দাঁড়িয়ে রইল সে। গায়ের চামড়ায় সুচ ফুটাচ্ছে ভয়ানক ঠাণ্ডা পানি।
ওদিকে স্লেজটাকে আটকে ফেলেছে কুকুরের দল, পানিতে পড়তে দেয়নি। স্লেজের মধ্যে পাগলের মতো কী যেন খুঁজে বেড়াচ্ছে রেজা ও জোসি। অমন করে কী খুঁজছে ওরা, বুঝতে পারছে না সুজা। অবশেষে সোজা হয়ে দাঁড়াল জোসি। হাতে একটা কুড়াল। দৌড় দিলো বনের দিকে। (চলবে)

 


আরো সংবাদ



premium cement