১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এখন ইয়াবা ঢুকছে ভারত হয়ে

এখন ইয়াবা ঢুকছে ভারত হয়ে - সংগৃহীত

মিয়ানমার সীমান্তে কঠোর নজরদারি থাকায় ভারত সীমান্ত হয়ে এখন ইয়াবা ঢুকছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে কিছু নৌপথ হয়ে কুয়াকাটা ও বরগুনা হয়েও ঢুকছে। আগে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট থাকলেও এখন সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালান না। ফলে ইয়াবার কোনো কোনো চালান নির্বিঘেœই পৌঁছে যাচ্ছে গন্তব্যে। যে কারণে ইয়াবার কারবার আগের মতোই রয়ে গেছে। মিয়ানমার সীমান্তে কঠোর নজরদারি, সেখানকার শীর্ষ মাদককারবারিদের গ্রেফতার করা হলেও ইয়াবার প্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না।

কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া এবং বান্দরবানসহ মিয়ানমার সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ, র্যাব ও বিজিবিসহ প্রত্যেক বাহিনীর সদস্যরা ছাড়াও এ এলাকায় ইয়াবা প্রবেশ ঠেকাতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু শীর্ষ ইয়াবা কারবারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। অনেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। আবার কেউ কেউ আত্মসমর্পণ করেছেন। যারা এখনো গ্রেফতার হয়নি তারাও ওই এলাকায় ইয়াবা কারবারে এখন আর সুবিধা করতে পারছে না, যে কারণে তারা অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। 

মিয়ানমার সীমান্তে এভাবে কড়াকড়ি চলতে থাকায় ইয়াবা কারবারিরা ভিন্ন পথ ধরেছে। তারা এখন ভারত সীমান্ত হয়ে ইয়াবা নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে বলে একাধিক সূত্র জানায়। এসব চালান মিয়ানমার থেকে ভারতে ঢুকছে এবং ভারত থেকে বিভিন্ন সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। সূত্র জানায়, এ চালানগুলো পঞ্চগড়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন সীমান্ত পথ দিয়ে এ দেশে আসছে। আগে যারা এসব সীমান্ত পথ দিয়ে ফেনসিডিলের কারবার করত তারা এখন ইয়াবার কারবারে ঢুকেছে। এ দিকে নতুন রুট সৃষ্টি হয়েছে কুয়াকাটা ও বরগুনা। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ইয়াবা ঢুকছে এ দুই রুট হয়ে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ইয়াবা কারবারিদের একটি বড় ঘাঁটি রয়েছে। এ নদীতে মাঝে মধ্যেই দেখা যায় বড় বড় জাহাজ নোঙর করা। এসব জাহাজের কোনো কোনোটিতে ইয়াবার চালান আসছে। নলসিটির এক ইউপি চেয়ারম্যান এ কারবারে জড়িত এবং তার লোকজন এ চালানগুলো ওই নদী থেকে গ্রহণ করে। বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা ও পিরোজপুরে এখন অলিগলিতে ইয়াবার কেনাবেচা হয় বলে জানায় স্থানীয় সূত্র। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মহাসড়কে আগের মতো চেকপোস্টগুলো সক্রিয় নেই। এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে থাকেন। যে কারণে অনেক সময় অনেক মাদকের চালান কোনো বাধা ছাড়াই নির্দিষ্ট গন্তব্যে চলে যায়। চেকপোস্ট থাকলে ওইসব রুট অনেক সময় মাদক কারবারিরা এড়িয়ে চলত। এখন মাদক কারবারিদের মধ্যে সেই ভীতিটুকু নেই।

মাদক পাচারের রুটগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখা সাগর জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কিছুই করার থাকে না। আর সেই তথ্য দিতে অবশ্যই অভিজ্ঞ লোক দরকার। সে রকম অভিজ্ঞ লোক এখন পাওয়া মুশকিল। যে কারণে মাদকের অনেক চালান ধরা পড়ছে না। সাগর বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ হওয়ায় এখন ইয়াবা কারবারিরা ভারতীয় সীমান্ত হয়ে ইয়াবার চালান এ দেশে নিয়ে আসছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি এখনো পড়ে আছে সেই মিয়ানমার সীমান্তের দিকেই।


আরো সংবাদ



premium cement