ছেলে বলেছিল তোরা আমারে মারিসনে সব নিয়ে নে : শাহীনের মা (ভিডিও)
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ০১ জুলাই ২০১৯, ১৭:০৬, আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯, ০৬:৫১
‘সকাল ৭টার দিকে শাহীন ভ্যান নিয়ে বের হয় বাড়ি থেকে। কারা যেন তাকে ভাড়ায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কিন্তু পথে ওরা আমার ছেলেকে মেরে ভ্যান ও মোবাইল নিয়ে যায়। শাহীন তখন বলেছিল তোরা আমারে মারিসনে সব নিয়ে নে। কিন্তু শাহীনের কোনো কথাই শুনলো না। ছোট মানুষ। দু একটা চড় থাপ্পর দিয়ে তো সব নিয়ে নিতে পারতো। এভাবে আঘাত করার কী দরকার ছিল বলেন?’
আজ সোমবার দুপুরে আলাপকালে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুর্বৃত্তদের আঘাতে গুরুতর আহত সাতক্ষীরার কিশোর ভ্যানচালক শাহীনের মা খাদিজা খাতুন।
তিনি জানান, তিন ভাই-বোনের মধ্যে শাহীন বড়। দুই বোন তার ছোট। সে ক্লাস সেভেনে পড়ে। সময় পড়া লেখার পর সময় পেলে সে ভ্যান নিয়ে বের হতো। পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস ওই ভ্যান। পাঁচ মাস হলো ২৫ হাজার টাকা কিস্তি নিয়ে বাড়ির পুরনো ভ্যানটিতে মোটর লাগানো হয়েছে।
প্রতি সপ্তাহে ৭ শ’ টাকা কিস্তি দিতে হয়। এখন কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না।
ঢাকায় আসার পথে যারা তাকে মেরেছে তাদের সম্পর্কে শাহীন অনেক কিছু বলতে চেয়েছিল। বলেছিল তারা আমাকে এভাবে মারতে পারলো। আরো কিছু বলতে চেয়েও পারেনি। বার বার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিল।
খাদিজা বলেন, মোবাইল না থাকায় শাহীন প্রায়ই আবদার করে বলতো একটি মোবাইল কিনে দেয়ার জন্য। ১২ শ’ টাকা দিয়ে একটি মোবাইলও কিনে দিয়েছিলাম।
শাহীনের চাচা মনসুর আলী জানান, আমার ভাই খুবই সহজ সরল একজন মানুষ। তার পরিবারের সাথে এমন আচরণ করা হবে ভাবতেও অবাক লাগছে। ভাতিজার চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী, মেডিকেল কর্তৃপক্ষ ও দেশের মানুষের যে ভালোবাসা আমরা পেয়েছি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। বালাদেশ সহ পৃথীবির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফোন দিয়ে অনেকে খোঁজ নিচ্ছেন। সবাই শাহীনের জন্য দোয়া করছেন।
তিনি জানান, অপারেশনের পর শাহীনের এখনো জ্ঞান ফিরেনি। তবে অক্সিজেন লাগানো অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিচ্ছে। মাঝে মধ্যে হাত ও পা নাড়ছে। যখন ঢাকা মেডিকেলে আনা হয় তখন তার হৃদযন্ত্রের জিসিএস ছিল ৪। গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডাক্তার অসীত চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, এখন সেটি ৭-এ আছে। আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে।
মনসুর জানান, আজ একটি সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট নিয়ে আজ আবার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা সিদ্ধান্ত জানাবেন।
এর আগে গত শুক্রবার সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়া কৃষ্ণনগর গ্রামের আমজামতলায় যাত্রীবেশে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা শাহীনকে (১৪) কুপিয়ে তার ইঞ্জিনচালিত ভ্যানটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
সে কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার মোড়লের ছেলে। শাহীনকে ধানদিয়ায় যাওয়ার কথা বলে তিন থেকে চারজন যুবক তার ইঞ্জিনচালিত ভ্যান ভাড়া করে নিয়ে যায়। ধানদিয়া কৃষ্ণনগর আমজামতলা নামক স্থানে পৌঁছানোর পর শাহীনকে কুপিয়ে আহত করে অজ্ঞান অবস্থায় তারা ফেলে রেখে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে পথচারীরা বুঝতে পেরে শাহীনকে উদ্ধার করে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়া হয়। সেখান থেকে শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাকে এখন আইসিইউয়ের ১৬ নম্বর বেডে রাখা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা