২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ফখরুল জাতিসঙ্ঘে যেয়ে রাজনীতিবিদদের ছোট করেছেন : তোফায়েল

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ - সংগৃহীত

জাতিসঙ্ঘের একজন সহকারী সেক্রেটারির সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের ছোট করেছেন বলে অভিযোগ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ওই লেভেলে বৈঠক করা বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের জন্য চরম অপমানজনক। কারণ, ফখরুল আপনি বিএনপির মহাসচিব এবং একজন মন্ত্রীও ছিলেন। আমরা এই লেভেলে বৈঠক করি না।

বিএনপি মহাসচিবের জাতিসংঘ সফর সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাকে জানাতে নিউ ইয়র্ক গেছেন এটি সঠিক নয়। কারণ, ওই দিন জাতিসংঘ মহাসচিব নিউ ইয়র্কে ছিলেন না। তিনি জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঘানায় গিয়েছিলেন। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেসের সঙ্গে তার কোনও বৈঠক হয়নি। তার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে একজন সহকারী সেক্রেটারি ও একজন ডেস্ক অফিসারের সঙ্গে। আমরা এই লেভেলে বৈঠক করি না।’

বিএনপির উদ্দেশে তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, ‘বিশ্বের যেকোনও জায়গায় নালিশ করা যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচন হবে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী। অনুরোধ করি, নির্বাচনে আসেন। জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারি ও ডেস্ক অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করে আমাদের আর ছোট করবেন না। বিশ্বে বাংলাদেশ এখন মডেল।’

জাতীয় ঐক্য’র দাবি সংবিধান পরিপন্থি

‘জাতীয় ঐক্য’র কথা বলে যে দাবিগুলো করা হয়েছে তা সংবিধান পরিপন্থি ও গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তোফায়েল আরও বলেছেন, জাতিসংঘে যেয়ে বিএনপি মহাসচিব দেশের রাজনীতিবিদদের ছোট করেছেন।

গতকাল সচিবালয়ে নেপালের রাষ্ট্রদূত চোপলাল ভূষালের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এবং ভিয়েতনামে অনুষ্ঠিত আসিয়ান ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকের বিষয়ে এক ব্রিফিং অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।

গত শনিবার একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য পাঁচ দফা দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবং নয়টি লক্ষ্য বাস্তবায়নে জোটবদ্ধ নির্বাচন করার ঘোষণা দেয় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্য।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘গণফোরামের প্রধান ড. কামাল হোসেন এবং অন্যান্যরা মিলে যে যুক্তফ্রন্ট করতে যাচ্ছে এটাকে স্বাগত, অভিনন্দন জানাই। কারণ বহুদলীয় গণতন্ত্র বাংলাদেশে, তাতে যদি কোনো দল জোট করে, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। কারণ আমরাও জোট করেছি অতীতে। এখনও আমাদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট আছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট আছে। আরেকটা জোট যদি হয় এটাকে আমরা অভিনন্দন জানাই।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু তারা যে প্রস্তাব করেছেন, সেগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ নির্বাচন হবে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের অধীনে, সংবিধান অনুসারে, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তারিখ মতে। নির্বাচনকালীন সরকার দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করবে। নীতিগত বড় কোনো সিদ্ধান্ত তারা নেবেন না এই তিন মাস। নির্বাচনকালীন সরকার নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সামগ্রিক সহায়তা প্রদান করবে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এই সংবিধানের বাইরে আমরা যাব না। ড. কামাল হোসেন বা তার সঙ্গে যারা ছিলেন তারা যে বক্তব্য রেখেছেন সেটা সংবিধান পরিপন্থী, সংবিধান সেটা অ্যালাউ করবে না। নির্বাচনকালীন এই সরকার থাকবে না, পার্লামেন্ট থাকবে না। আমাদের সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে ছোট করে দেখি না। কিন্তু আমরা চাই নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হোক।’

মন্ত্রী বলেন, “ড. কামাল হোসেন বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া সিটে এমপি হয়েছিলেন। ছিয়াশি ও একানব্বই সালে তাকে (আওয়ামী লীগ থেকে) মনোনয়ন দেওয়া হলেও কোনো নির্বাচনে বিজয়ী হননি। আমরা আশা করি এবার তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন এবং বিজয়ী হবেন সেই কামনা করি। কামাল হোসেন ও বি চৌধুরীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার অনুমতি চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয় বলে জানান তোফায়েল। তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার অনুমতি দেওয়া হয় না বলে তারা দাবি করেছেন। দরখাস্তই করেননি, বলে পারমিশন পায়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাদের সেখানে সভা করার অনুমতি দেওয়া হবে, মঞ্চও করে দেওয়া হবে।”




আরো সংবাদ



premium cement