অনৈতিক সম্পর্কে রাজি না হওয়া বৃষ্টিকে খুন করেছে দুলাভাই
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৮ জুলাই ২০১৮, ২০:০২, আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮, ০৮:০৬
বৃষ্টি ও সুমন ছিলেন সম্পর্কে শালি-দুলাভাই। কিন্তু সেই সম্পর্কে একপর্যায়ে রূপ নেয় অনৈতিক সম্পর্কে। বড় বোনের স্বামী সুমনের সাথে বেশ কয়েক বছর ধরে বৃষ্টির এ সম্পর্ক চলে আসছিলো। ঘটনা জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা হয়। এরপর নিজের বোনের সংসার বাঁচাতে সুমনের কাছ থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে আসতে থাকে বৃষ্টি।
এমনকি পরিবারের লোকজন বৃষ্টির বিয়েও ঠিক করে। এতে ক্ষিপ্ত হয় দুলাভাই সুমন। বিষয়টি সমযোতার কথা বলে বৃষ্টিকে নিয়ে ঘটনার দিন আবাসিক হোটেল বৈকালীতে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে রুম ভাড়া নেয়। তাদের নিজেদের আগের বিষয়গুলো নিয়ে প্রচন্ড ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সুমন জোর করে বৃষ্টির সাথে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাইলে বৃষ্টি রাজি না হওয়ায় সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে বৃষ্টির ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে।
গত ১৬ জুলাই সোমবার রাজধানীর মগবাজারের ওই আবাসিক হোটেলে একটি কক্ষ থেকে বৃষ্টির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় দুলাভাই রিয়াজ ওরফে সুমনকে (২৯) রাজধানীর মিরপুর পাইকপাড়া থেকে গত মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করে র্যাব-৩।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান।
তিনি বলেন, আসামি সুমন হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছে। সুমন একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালক। ২০১০ সালে ভিকটিম বৃষ্টির মেজ বোন হাসনার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। গত তিন চার বছর ধরে সে তার শ্যালিকাকে উত্যক্ত করত এবং এক পর্যায়ে সেটা অনৈতিক সম্পর্কে গড়ায়। বিষয়টি পরিবারে জানাজানি হলে বৃষ্টির অনত্র বিয়ে ঠিক হয়েছিল কিন্তু বিষয়টি সহ্য করতে না পেরেই বৃষ্টিকে হোটেলে ডেকে হত্যা করে সুমন।
তিনি জানান, হত্যার পর ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে বৃষ্টির গলায় পেঁচিয়ে হোটেল রুমের ফ্যানের সাথে ঝুঁলিয়ে রাখে। পরে সে বুদ্ধি করে হোটেলের বাহিরে যায় এবং প্রায় এক ঘণ্টা পর ফিরে আসে। ফিরে আসার পর বৃষ্টি আত্মহত্যা করেছে বলে চিৎকার করতে থাকে। পরে হোটেলের লোকজন এলে সুমন নিজেই ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা লাশ মাথায় পানি দিতে থাকে। এমন ঘটনার এক একপর্যায়ে সুমন কৌশলে হোটেল থেকে পালিয়ে যান। বৃষ্টি মারা গেছে বিষয়টি জানার পর হোটেল কর্তৃপক্ষ থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
র্যাব জানায়, খবর পেয়ে বৃষ্টির স্বজনেরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ছুটে যান এবং তার লাশ শনাক্ত করেন। পরে বৃষ্টির বাবা মোঃ আনোয়ার হোসেন রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। বিষয়টি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সুমনকে গ্রেফতার করে র্যাব-৩। জানা গেছে, বৃষ্টি মহাখালী সাততলা বস্তিতে বাবা-মায়ের সাথে থাকতো। সে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতো।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা