২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

অ্যাশেজের সূচনা : কোন দল কতবার সিরিজ জিতল

- ছবি : ক্রিকবাজ

ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার এই সিরিজ প্রথম খেলা হয় ১৮৭৭ সালে, কিন্তু তখন অ্যাশেজ নামকরণ হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন টেস্ট সিরিজের বিভিন্ন নাম যেমন বর্ডার-গাভস্কর ট্রফি, ফ্রিডম ট্রফি, ফ্র্যাঙ্ক ওরেল ট্রফি ইত্যাদি। সাধারণত নামের পিছনে থাকে সেই দেশের কোনও কিংবদন্তি। কিন্তু অ্যাশেজ নামের পিছনে রয়েছে অনেক বিতর্ক। দেখে নেয়া যাক অ্যাশেজের খুঁটিনাটি।

ধারণা করা হয়- ১৮৮২ সালে প্রথম ‘অ্যাশেজ’ নাম দেয়া হয় এই সিরিজকে। তবে এই নামকরণ নিয়েও দ্বিমত রয়েছে। এক পক্ষের মত, সেই বার ইংল্যান্ড দল প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর এক ব্রিটিশ সংবাদপত্র‘দ্য স্পোর্টিং টাইমস’ লেখে, ‘ইংলিশ ক্রিকেটের পুড়া হয়েছে এবং ছাই (অ্যাশেজ) নিয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়া।’

তার উত্তরে তৎকালীন ইংরেজ অধিনায়ক ইভো ব্লি বলেন, ‘সেই ছাই আমরা ফিরিয়ে আনব।” এই ‘ছাই’ শব্দটাই এরপর সিরিজের নাম হয়ে যায়  ‘দ্য অ্যাশেজ’ নামটি।

যদিও আরও একটি তত্ত্ব রয়েছে এই নামকরণের। শোনা যায়, ১৮৮২ সালে তিন ম্যাচের সিরিজে দুই ম্যাচ জেতার পর ইংরেজ অধিনায়ককে মেলবোর্নের কিছু ভদ্রমহিলা একটি ছাই রাখার পাত্র উপহার দেন। মনে করা হয়, সেটিতে ছিল ক্রিকেটের বেল-এর ছাই। তবে ইভো ব্লি-র উপহার পাওয়া সেই পাত্র-ই অ্যাশেজের এখনকার সেই ছোট্ট ট্রফিটা কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।

এখন যে ছোট্ট ট্রফিটা দেখা যায় সেটা আসলে রেপ্লিকা। এর আসলটা রাখা আছে লর্ডসের বিখ্যাত এমসিসি মিউজিয়ামে। আসল অ্যাশেজ ইংল্যান্ডের বাইরে গিয়েছে দু’বার। ১৯৮৮ সালে দ্বিশততমবর্ষীয় অ্যাশেজ সিরিজের সময় এবং ২০০৬-০৭ সালে এক প্রদর্শনীর সময়।

দু’বছরে অন্তত একবার এই অ্যাশেজ সিরিজ খেলা হয়। ১৯৯৮-৯৯ সালের অ্যাশেজে এক সংস্থা প্রথমবারের জন্য ওই পাত্রের মতো দেখতে ট্রফি বানিয়ে দেয়। সেই ট্রফিই হয়ে ওঠে এই সিরিজের অফিসিয়াল ট্রফি। এবং সেই ট্রফিই জয়ী দলের হাতে তুলে দেওয়া হয় তারপর থেকে।

এবারের অ্যাশেজটি ছিল ৭১তম সিরিজ। এর মধ্যে মাত্র পাঁচটি সিরিজ ড্র হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৩৩ বার এবং সমানে সমানে টক্কর দেয়া ইংল্যান্ড জিতেছে ৩২ বার।

ব্যক্তিগত সাফল্যের নিরিখে যদিও ব্যাট বল দুই বিভাগেই ইংল্যান্ডের থেকে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। ব্যাট হাতে আজও ডন ব্র্যাডম্যানের ৫০২৮ রানের রেকর্ড কেউ টপকাতে পারেননি। কেউ টপকাতে পারেননি শেন ওয়ার্নের অ্যাশেজে ১৯৫টি উইকেট নেয়ার রেকর্ডও।

১৮৯১-৯২ সালে প্রথম বারের জন্য অ্যাশেজ আয়োজন করে অস্ট্রেলিয়া। এবং সে বারেই প্রথম বারের জন্য অ্যাশেজ জেতে অস্ট্রেলিয়া।

আজ অবধি ইংল্যান্ড কখনওই অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি। কিন্তু সেই রেকর্ড অজিরা অর্জন করেছে তিনবার। ১৯২০-২১, ২০০৬-০৭ এবং ২০১৩-১৪ সালে ইংরেজ দম্ভ গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ব্যাগি গ্রিন বাহিনী। ইংল্যান্ডের সব থেকে বড় ব্যবধানে জয় ১৯৭৮-৭৯ সালে ছয় ম্যাচের অ্যাশেজ সিরিজে। তারা ৫-১ জেতে সেই সিরিজ।

সিরিজ জেতায় কাছাকাছি থাকলেও টেস্ট ম্যাচ জেতায় অনেক পিছিয়ে ইংরেজরা। আজ অবধি অ্যাশেজে ৩৩০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে দুই দেশ। যার মধ্যে ১০৬ বার ইংল্যান্ড জিতেছে এবং ১৩৪ বার জিতেছে অজিরা। এবং ঘরের মাঠে ৫১.৫ শতাংশ ম্যাচেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

সর্বশেষ সদ্য (১৫ সেপ্টেম্বর) শেষ হয়া সিরিজ শেষ হয় ২-২ সমতার মধ্য দিয়ে। তবে রীতি অনুযায়ী শিরোপা থাকবে অজিদের কাছেই।

অ্যাশেজ সিরিজ শুধু মাত্র পুরুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। মহিলা ক্রিকেটে এই দুই দেশ ১৯৩৪ সাল থেকে মুখোমুখি হলেও ১৯৯৮ সালে সেই সিরিজকে অ্যাশেজ নাম দেওয়া হয়। ২০১৩ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি ও একদিনের সিরিজের ফলও গ্রহণ করা হয় মেয়েদের অ্যাশেজে।


আরো সংবাদ



premium cement