১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আর কত বছর খেললে বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে?

আর কত বছর খেললে ক্রিকেটাররা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন?
- ছবি : সংগৃহীত

টেস্ট ক্রিকেটে সদ্য পা রাখা আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৯ বছরের অভিজ্ঞ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নাজুক হার। যা মাকে-মাসির গল্প শোনানোর মতোই। একবার এক অজুহাতে হারের ব্যাখ্যা দেন ক্রিকেটাররা। এরকম অজুহাত দীর্ঘ সময় ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে লেগে আছে।

একমাত্র টেস্ট ম্যাচ শেষে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুরু থেকেই টেস্ট ম্যাচের দৃশ্যের মতোই ব্যাটসম্যানরা আসা-যাওয়ার মাঝে ব্যস্ত থাকে। যদিও টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামা আফিফ হোসেনের ব্যাটে ম্যাচটি জয় পায় বাংলাদেশ। আর তুলনামূলকভাবে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট এখন পেশাদার কোনো দলের নাম নয়। এমন দলের বিপক্ষেও সন্তুষ্টির জয় পায়নি বাংলাদেশ।

কিন্তু পরের ম্যাচেই আফগানিস্তানের ফুটে উঠল আসল চিত্র। আফগানদের কাছে টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টিতেও পাত্তাই পেল না বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দেরাদুনে সবশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও আফগানদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল সাকিবের দল। টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশের পরেই আফগানদের অভিষেক ঘটে। দল হিসেবে তাদের তুলনায় বাংলাদেশ দলে রয়েছে অভিজ্ঞ এবং সিনিয়র প্লেয়ারে ঠাসা।

রোববার ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান সেটাই অকপটে স্বীকার করে নেন। সাকিব বলেন, আমার মনে হয়, দলে আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। এর কারণেই এমনটা হচ্ছে। আর আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে বলেই ব্যাটসম্যানের মাইন্ডসেটও পরিষ্কার নয়, তারা কী করবে। দুটো জিনিসই একটা আরেকটার পরিপূরক।

আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচটা জেতা দরকার ছিল বলে মনে করেন বাংলাদেশ দলপতি। উইকেটও ছিল ব্যাটিং সহায়ক। অধিনায়ক বলেন, যেটা দেরাদুনে হয়েছে, সেটা এখানেও হয়েছে- এটা প্রমাণ হয়ে গেলো। গত ম্যাচের উইকেটে ব্যাট করা কঠিন ছিল। কিন্তু, এই ম্যাচের উইকেটটা ব্যাট করার মতো ছিল। আমরা ম্যাচটা ওদের দিয়ে এসেছি। সুযোগটা নেয়া দরকার ছিল, যেটা পারিনি।

সাকিব মনে করেন, টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তান ভালো দল। আর ভালো দলের বিপক্ষে জিততে কষ্ট তো হবেই!

দলে সিনিয়ির ৬/৭জন খেলোয়াড় থাকা সত্ত্বেও খেলা শেষে নিয়মিত ধারাবাহিক যুক্তি দিয়েই ম্যাচের রেস কাটান অধিনায়ক। দায়ী করেন ক্রিকেটারদের ‘আত্মবিশ্বাসকে’। পরাজয়ের ধরনটা যদি হয়- মাঠে নামার আগেই হেরে গেলাম, তবে সেই পরাজয় নিয়ে সমালোচনা হবেই। কিন্তু দলে কাদের আত্ম বিশ্বাসের অভাব?

সাইফউদ্দিন বল হাতে সেরাটা দিয়েছেনে আফগানদের বিপক্ষে। মোসাদ্দেক শেষ পর্যন্ত লডাই করার চেষ্টা করেছেন। আফিফও প্রথম ম্যাচের মতোই খেলতে চেষ্টা করেছেন কিন্তু উইকেটহীন অল্প বলে ডাবলের চেয়ে বেশি রানে বড় শর্ট খেলতে গিয়ে বেশিদূর এগোতো পারেননি। নতুনরা যথেষ্ট চেষ্টা করেছে বলাই যায়। তাহলে আত্মবিশ্বাসহীনতা কাদের?

তাদের বাদ দিলে বাকি থাকে সিনিয়র খেলোয়াড়রা। সাকিব আল হাসান বিশ্বকাপের পর থেকেই ফর্ম হারালেন। নিজেকে এখনো মেলে ধরেতে পারছেন না। মুশফিকের বেলায়ও সেই একই। মাহমুদুল্লাহ এক ম্যাচ ভালো খেললে তিন ম্যাচ খারাপ করছেন। সৌম্য সরকার টানা অফ-ফর্মে রয়েছেন। লিটন দাসের অবস্থাও একই।

প্রথম ম্যাচেও নতুনরাই ভালো করেছেন আফিফ, সাইফউদ্দিন, মোস্তাফিজ ও মোসাদ্দেকরা। তাদের হাত ধরেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় পায় দল।

তাহলে কি সিনিয়ররা আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগেন?

কিন্তু তারা আর কত বছর খেললে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন? ক্যারিয়ারের শেষ সময়ও ঘনিয়ে আসছে কারো। আর কত খেললে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আত্মবিশ্বাস পাবে?


আরো সংবাদ



premium cement