২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যে কারণে ম্যান অফ দা টুর্নামেন্ট উইলিয়ামসন

- এএফপি

বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার, অর্থাৎ ম্যান অফ দা টুর্নামেন্টের পুরস্কার পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। লর্ডসে শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টাই করে ইংল্যান্ড। এরপর সুপার ওভারেও দুই দলের রান সমান ছিল। নিয়ম অনুযায়ী, মূল ম্যাচে মোট বাউন্ডারিতে এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ড, তাই ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ জিতে নেয়।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে আলোচিত চরিত্র হয়ে থাকবেন কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু কেন তিনি ম্যান অফ দা টুর্নামেন্টের পুরস্কার পেলেন?

কেন উইলিয়ামসনের ব্যাটিং

টুর্নামেন্টের সেরা রান সংগ্রাহকদের তালিকার দিকে তাকালে উইলিয়ামসনের রান খুব বেশি মনে নাও হতে পারে। তবে তিনি যে রান করেছেন তাতে নিউজিল্যান্ড দল বিপদ থেকে মুক্তি পেয়েছে বেশ কয়েকবার। নিউজিল্যান্ড এই টুর্নামেন্ট শুরু করে দুর্দান্তভাবে টানা তিন ম্যাচ জিতে।

প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০ উইকেটে জয় ছাড়া নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি তেমন উল্লেখ করার মতো রান করতে পারেনি। ব্যাট হাতে নিউজিল্যান্ডের ত্রাতার ভূমিকায় ছিলেন কেন উইলিয়ামসন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭৯, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০৬ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৪৮ রান তোলেন নিউজিল্যান্ডের এই অধিনায়ক।

মূলত প্রথম পাঁচ ম্যাচের জয় নিউজিল্যান্ডকে সেমিফাইনালে উঠতে সাহায্য করে। সেমিফাইনালেও ভারতের বিপক্ষে ৬৭ রানের একটি ইনিংস খেলেন যা পরবর্তীতে ম্যাচ জেতাতে সাহায্য করে। ফাইনাল ম্যাচে ৩০ রানে আউট হন কেন উইলিয়ামসন।

অধিনায়কত্ব

কেন উইলিয়ামসনের অধিনায়কত্বের বেশ প্রশংসা শোনা গিয়েছে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে। বিশেষত প্রথম তিন ম্যাচ জয়ের পর যখন কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে নিউজিল্যান্ড।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮০ রানে ৪ উইকেট যাওয়ার পর হাল ধরেন উইলিয়ামসন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও ৭ রানে ২ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড, এদিনও কেন উইলিয়ামসন এসে ইনিংস মেরামতের কাজ করেন।

ব্যাট হাতে নেতৃত্বের পাশাপাশি দল যাতে পরবর্তী ধাপগুলোতে ঠিকঠাক পৌঁছায় সে জন্য কম পুঁজি নিয়েও দারুণ অধিনায়কত্ব করেন উইলিয়ামসন। বিশ্বকাপে একমাত্র দল নিউজিল্যান্ড, যারা একবারও ৩০০ রান ছুঁতে পারেনি।

কিন্তু তিনটি লিগ পর্বের ম্যাচে মাথা ঠান্ডা রেখে দল পরিচালনা করেন উইলিয়ামসন।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ২ উইকেটের জয়, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫ রানের জয়ে উইলিয়ামসন শেষ পর্যন্ত দৃঢ়তার সাথে ফিল্ডিং সাজানো ও বোলিং পরিবর্তনের কাজ করেন যা কাজে দেয়।

ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও ফিফটিসহ ২৪০ রানের পুঁজি ডিফেন্ড করতে দারুণভাবে দলকে উজ্জীবিত করেন অধিনায়ক কেন। রবীন্দ্র জাদেজা ও মাহেন্দ্র সিং ধোনির জুটি জয়ের দিকে এগুচ্ছিল যখন মিচেল স্যান্টনারকে দারুণভাবে ব্যবহার করেন তিনি।

সাকিব যে কারণে ম্যান অফ দ্যা টুর্নামেন্টের পুরস্কার পাননি

সাকিব আল হাসান এই বিশ্বকাপ তো বটেই, অলরাউন্ডার বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই সর্বকালের সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন এবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাকিব আল হাসানের দল বাংলাদেশ আট নম্বরে জায়গা পায়। সেটাই নিয়ামক হয়ে দাঁড়ায়।

ম্যান অফ দা টুর্নামেন্টের একটা অন্যতম বিশেষ দিক হলো ব্যক্তির সাফল্য, দলের সাফল্যে কতটা প্রভাব পড়েছে সেটা, যেমনটা এর আগে দেখা গিয়েছে। ১৯৯২ সাল থেকে ম্যান অফ দা টুর্নামেন্ট দেয়া হচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে।

১৯৯২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যত বিশ্বকাপ হয়েছে সেখানে অন্তত সেমিফাইনাল যারা খেলেছে তাদের মধ্য থেকেই বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন।

আগের ইতিহাস কী বলছে?

বিশ্বকাপে ম্যান অফ দা টুর্নামেন্ট দেয়া হচ্ছে ১৯৯২ সাল থেকে। সে বার টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জিতেছিলেন মার্টিন ক্রো, ৪৫৬ রান করেছিলেন তিনি। তার দল খেলেছিল সেমিফাইনাল।

১৯৯৬ সালে টুর্নামেন্ট সেরা হন সনৎ জয়সুরিয়া, সেবার চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল শ্রীলঙ্কা, ২২১ রানের সাথে ৭টি উইকেট নেন শ্রীলঙ্কান এই ক্রিকেটার। ১৯৯৯ সালে ম্যান অফ দা টুর্নামেন্ট হন ল্যান্স ক্লুজনার, তার দল দক্ষিণ আফ্রিকা সেমিফাইনালে নাটকীয়ভাবে হেরে যায়, ২৮১ রানের পাশাপাশি বল হাতে ক্লুজনার নিয়েছিলেন ১৭টি উইকেট।

২০০৩ সালে ব্যাটিং ইতিহাসে বিশ্বকাপের সেরা একটি পারফরম্যান্স দেখান শচীন টেন্ডুলকার, ৬৭৩ রান নিয়েছিলেন তিনি, ফাইনালে খেলে হেরে গিয়েছিল তার দল ভারত।

২০০৭ সালে চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলার গ্লেন ম্যাকগ্রা ২৬টি উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার পান। ২০১১ সালে যুবরাজ সিং, ৩৬২ রান ও ১৫ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন, সে বার বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। সাকিব আল হাসানের এবারের পারফরম্যান্সের আগে যুবরাজ সিংয়ের এই পরিসংখ্যান ছিল বিশ্বকাপের সেরা অলরাউন্ড পারফরম্যান্স।

২০১৫ সালে আবারো অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়, আবারো এক অস্ট্রেলিয়ান পেস বোলার পান বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার। ২২টি উইকেট নিয়েছিলেন মিচেল স্টার্ক।

এই বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানের পরিসংখ্যান

সাকিব মোট আটটি ম্যাচে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন, ৬০৬ রান তুলেছেন, ৮৬.৫৭ গড়ে। সাকিবের গড় টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বল হাতে সাকিব ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১১টি উইকেট।

অর্থ্যাৎ বল ও ব্যাট উভয় মাধ্যমেই সাকিব দলের তিনটি জয়ে ভূমিকা রেখেছেন। প্রথম দুটি জয়ের একটিতে সেঞ্চুরি করেছেন, একটিতে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি করেছেন।

মোট আট ম্যাচ খেলা সাকিব ৭টি ইনিংসেই ন্যূনতম ৫০ রান অতিক্রম করেছেন। বিশ্বকাপে তার সর্বনিম্ন সংগ্রহ ৪১ রান। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ৬০০ এর ওপর রান ও ১০টিরও বেশি উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সূত্র : বিবিসি।


আরো সংবাদ



premium cement
আবারো চেন্নাইয়ের হার, ম্লান মোস্তাফিজ 'কেএনএফ' সন্ত্রাস : সার্বভৌম নিরাপত্তা সতর্কতা অর্থনীতিতে চুরি : ব্যাংকে ডাকাতি পাকিস্তানে আফগান তালেবান আলেম নিহত যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য না করলে এ বছরই রাশিয়ার কাছে হারতে পারে ইউক্রেন : সিআইএ প্রধান রাশিয়ার সামরিক শিল্পক্ষেত্রে প্রধান যোগানদার চীন : ব্লিংকন ইরাকে সামরিক ঘাঁটিতে 'বিকট বিস্ফোরণ' শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ

সকল