২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শোয়া থেকে ‘ওঠা’ হলো না আফ্রিকার

- ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপের ২৫তম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটে হেরে সেমিফাইনালের আশা অনেকটা শেষ হয়ে গেলো দক্ষিণ আফ্রিকার। সবসময়ের সেমিফাইনালিস্টরা এবার শুরু থেকেই নিজেদের চেনাতে পারছিলো না পুরনো রূপে। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে খেলা গড়ায় শেষ ওভার পর্যন্ত। আন্দিল পেহলিকায়োর করা শেষ ওভারে কিউইদের প্রয়োজন ৮ রান। স্ট্রাইকে থাকা অলরাউন্ডার মিচেল স্যান্টনার প্রথম বলে এক রান নিয়ে প্রান্তবদল করে কেন উইলিয়ামসনকে স্ট্রাইক দেন। দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ ট্রাই করেন উইলয়ামসন। তৃতীয় বলে চার মেরে বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠেন স্যান্টনার-কেন।

বৃষ্টি ভেজা মাঠে ম্যাচটি শুরু হতে কিছুক্ষণ দেরী হওয়ায়, এক ওভার কমিয়ে খেলা নির্ধারণ করা হয় ৪৯ ওভারে।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান সংগ্রহ করে আফ্রিকানরা। দলের হয়ে ভ্যান ডার দুসেন (৬৭) ও হাশিম আমলা করেন (৫৫) রান।

২৪২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে অপরাজিত ম্যাচ জেতানো সর্বোচ্চ (১০৬) রান করেন কেন উইলয়ামসন। কলিন ডি গ্রান্ডহ্যামের ব্যাট থেকে আসে (৬০) রান।

সেমিফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখার ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা করার সুযোগ নেই দক্ষিণ আফ্রিকার। এমন সমীকরণে বুধবার বার্মিংহ্যামের এজবাস্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে মাঠ ভেজা থাকায় খেলা শুরু হতে কিছুক্ষণ দেরী হয়। টস জিতে কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

টস হেরে আগে ব্যাট করতেগ নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি আফ্রিকানদের। দলীয় স্কোর বোর্ডে ৯ রান যোগ হতেই ব্যক্তিগত ৫ রান করে ইনিংসের দ্বিতীয় ও ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ওপেনার কুইন্টন ডি কক। শুরুতেই চাপে পড়া দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন আরেক ওপেনার হাশিম আমলা এবং ওয়ানডউনে ব্যাট করতে নামা ফাফ ডু প্লেসিস। দ্বিতীয় উইকেট জুটতে দুজনে মিলে তোলেন ৫০ রান। এরপর আর এগোতে পারেনি এ জুটি। ২৩ রান করে ফার্গুসনের করা ইনিংসের ১৪তম ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে দলীয় ৫৯ রানের মাথায় ফেরেন ডু প্লেসিস। একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকা এ ম্যাচে করেন দ্বিতীয় দ্রুততম ৮ হাজার রানের মাইলফলক ন্সপর্শ করার রেকর্ড। ১৭৬ ইনিংসে আমল পূর্ণ করে ৮ হাজার রান, তার থেকে এক ইনিংস কম খেলে বিরাট কোহলি এর দ্রুততম ৮ হাজার রান পূর্ণ করার রেকর্ড গড়েন। ৮৩ বলে ৫৫ রান করে দলীয় ১১১ রানের মাথায় স্যান্টনারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। শেষদিকে ডেভিড মিলারের ৩৭ বলে ৩৬, দুসেনের অপরাজিত ৬৭ রানের ওপর ভর করে ৪৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

কিউই বোলারদের মধ্যে লাকি ফার্গুসন ৩টি, ট্রেন্ট বোল্ট, কলিন ডি গ্রান্ডহ্যাম ও মিচেল স্যান্টনার একটি করে উইকেট শিকার করেন।

২৪২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে কাগিগো রাবাদার শিকার হয়ে ৯ রান করে ফিরে যান কিউই ওপেনার কলিন মুনরো। ওয়ানডউনে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন আরেক ওপেনার  মর্টিন গাপটিলকে সঙ্গে নিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয় কাটানোর মনস্থির করেন। দুজনে মিলে শুরু করেন দেখে-শুনে। দুজনেরে জুটি যখন ৬০ রানে তখনই আন্দিল পেহলিকায়োর বলে ফুল শট খেলতে গিয়ে পিছলিয়ে পড়ে স্ট্যাম্পে পা লেগে বেল পড়ে গেলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৩৫ রান করে ফেরেন গাপটিল। দলীয় ৭২ রানের মাথায় গাপটিল আউট হলে, ব্যাট করতে নেমে দলীয় স্কোরে দুই রান যেঙাগ হতেই ৭৪ রানের মাথায় ক্রিস মরিসের দারুণ ডেলিভারিতে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে দিয়েিউইকেটরক্ষক ডি ককের তালুবন্দী হয়ে ফেরেন দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান রস টেলর। (১) রান করে টেলর ফিরে গেলে ব্যাট করতে আসেন টম লাথাম। দল যখন বিপর্যয়ে ক্রিস মরিসের পরের ওভারে ফের টেলরের মতই খুঁচিয়ে দিয়ে ডি ককের হাতে ক্যাচ দিয়ে (১) রান করে ফেরেন লাথম। ৮০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দল যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে তখন জেমস নিশামকে নিয়ে উত্তরণের পথ খুঁজেন উইলিয়ামসন। কিন্তু ১৩৭ রানের মাথায় ২৩ রান করে নিশাম আউট হলে ফের চাপে পড়ে কিউইরা। ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে গ্রান্ডহ্যাম-কেন মিলে ৯১ রানের জুটি গড়ে দলকে অনেকটা নিরাপদে নিয়ে আসেন দুজনে। ৪৭ বলে ৬০ রান করে নিগিদির শিকার হয়ে ফেরেন গ্রান্ডহ্যাম। ২২৮ রানের মাথায় তার আউটের পর ব্যাট করতে নামেন স্যান্টনার। তখন খেলার বাকি ১১ বল। শেষদিকে ম্যাচ হয়ে ওঠে কিছুটা শ্বাসরুদ্ধকর। আন্দিল পেহলিকায়োর করা শেষ ওভারে কিউইদের প্রয়োজন ৮ রান। স্ট্রাইকে থাকা অলরাউন্ডার মিচেল স্যান্টনার প্রথম বলে এক রান নিয়ে প্রান্ত বদল করে কেন উইলিয়ামসনকে স্ট্রাইক দেন। দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ ট্রাই এবং নিজের ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুৃরি করেন উইলয়ামসন। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠেন স্যান্টনার-কেন। ১৩৮ বলে ৯ চার ও এক ছয়ে ১০৬ রান করে অপরাজিত থাকেন উইলয়ামসন। স্যান্টনার থাকেন ২ রান করে অপরাজিত।

আফ্রিকান বোলারদের মধ্যে ক্রিস মরিস ৩টি, লুঙ্গি নিগিদি, কাগিসো রাবাদা ও ইমরান তাহির একটি করে উইকেট শিকার করেন।

ম্যাচ জয়ী ১০৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।


আরো সংবাদ



premium cement