২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

এমন ঘটনা বাংলাদেশে হলে কি হতো !

- ছবি : সংগৃহীত

শান্তির দেশ হিসেবে চিহ্নিত নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে এমন ঘটনা অবিশ্বাস্য। কেউই মেনে নিতে পারছেন না শান্তি প্রিয় দেশে এমন সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে। এই হামলা সাধারন জনগনের গন্ডি পেরিয়ে ক্রিকেটের উপরও পড়েছে সাবধানী বার্তা। বাংলাদেশ দল নামায পড়তে যাওয়ার সময় সেখানে ছিল না নিরাপত্তার ব্যাবস্থা।

পরে অবশ্য নিরাপত্তার বলয়ে ঘটনার স্থান থেকে টিম হোটেলে নেয়া হয়। এখন কোন দল নিউজিল্যান্ডে সফর করতে না চাইলে ক্ষতিটা ক্রিকেটেরই হবে। বাংলাদেশে যদি এমন ঘটনা ঘটতো তাহলে কি হতো !

বাংলাদেশে এমন ঘটলে, অন্য দলগুলো কি সহজে বাংলাদেশে পা রাখতো। অতীতে হামলার কোন আলামত না থাকলেও বিদেশী দলগুলো সফর করতে আসেনি এখানে। নানারকম নিরপত্তা দল পাঠিয়ে নিশ্চিত হবার পরও শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে সফর বাতিল করেছে। এবার নিউজিল্যান্ডের মতো দেশেও কি এমন ঘটবে।

নিউজিল্যান্ডর এ ঘটনায় বাংলাদেশের ক্রিকেট বোদ্ধারা মনে করেন, বাংলাদেশের যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও বিদেশি দলগুলো বাংলাদেশকে কোন সুযোগ না দিয়েই দেশে ফিরে যেত। বাংলাদেশ যে কঠোর নিরাপত্তার ব্যাপারে উদার এর আগে বহুবার প্রমাণ দিয়েছে। বিদেশি কোন দল বাংলাদেশে টুর্নামেন্ট খেলতে কিংবা দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অংশ নিতে এলেই নজিরবিহীন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে টিম হোটেল, ভেনু সব জায়গাতেই তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে।

বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকের মতে, এমন একটি দেশে এই ঘটনা ঘটেছে দেখে বেশ হতাশ হয়েছি। ওদের ওখানে এমন ঘটনা ঘটা খুবই দুঃখজনক। শুধু নিউজিল্যান্ড নয়, বাইরের সবগুলো দেশই আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করে। অথচ বিদেশী কোন দল খেলতে এলে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা পায়। বাইরের দেশে খেলতে গেলে আমরা তার দশভাগও পাই না।’

তিনি আরো মনে করেন, আমাদের দেশে এমন হামলা হলে কোনও কথাই শুনতো না বিদেশি দলগুলো। সবাই দাবি তুলতো ক্রিকেটারদের ওপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল। আমিতো আজকে চাইলেই দাবি করতে পারি, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে টার্গেট করে এই হামলা চালানো হয়েছে। ¯্রফে কয়েক মিনিটের জন্য ওরা বেঁচে গেছে। আমরা এতো এতো নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েও অস্ট্রেলিয়াকে দুইবার আনতে পারিনি।’

জাতীয় দলের সাবেক পেসার হাসিবুল হোসেন শান্ত মনে করেন, পাকিস্তানে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর যে হামলা হয়েছিল, সেটা কিন্তু নিউজিল্যান্ডের হামলার মতো না। সুতরাং এটা ক্রিকেটকে আক্রান্ত করেছে তা বলবো না। খেলার মাঠে, কিংবা ক্রিকেটারকে টার্গেট বানিয়ে এমন ঘটনা হলে সব দেশের জন্য কঠিন হবে ক্রিকেট খেলা। তবে আমাদের দেশে হলে ঘটনার মোড় অন্যদিকে ঘুরানো হতো।’

সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু মনে করেন বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটলে বিদেশি দলগুলো বাংলাদেশকে কোন সুযোগই দিতো না। নির্দিষ্ট বোর্ড তাদের ফিরিয়ে নিতো দ্রুততার সঙ্গে। আমার মনে হয় ওরা যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে পারেনি। তাই বাংলাদেশ সঠিক কাজটাই করেছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দেশে যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তাতে করে এই ধরনের সন্ত্রাসী হামলার সম্ভাবনা নেই। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বিশ্বকাপসহ অনেক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে করতে অভিজ্ঞ হয়ে উঠছে।

সাবেক স্পিনার মোহাম্মদ রফিক অবশ্য মনে করেন এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কখনোই পড়বে না, যোরা এগুলো ঘটায় তারা ক্রিকেটের শত্রু। এমন ঘটনা বাংলাদেশে হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা ক্রিকেটপ্রেমী জাতি। নিউজিল্যান্ডকে যতখানি জানি সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্ত। তারপরও ঘটে গেছে। আমাদের বেলায় হলে তিলকে তাল বানানো হতো।’

সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক হিসেবে দেখছেন। ছেলেদের জন্য যেটা ভালো হয়েছে আমরা দ্রুততার সঙ্গেই সেটা করেছি। এমন মুহূর্তে কেউই চাইবে না ঘটনাস্থলে থাকতে। সবাইতো চায় নিজ দেশে খেলা হোক। নিউজিল্যান্ডে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। পরে কারা সেখানে যায় বা না যায় তা সময়ই বলে দিবে।’


আরো সংবাদ



premium cement