২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মঈন আলীদের এমন রেকর্ড!

মঈন আলীদের এমন রেকর্ড! - ছবি : সংগৃহীত

পাল্লেকেলেতে এক টেস্টে সর্বাধিক উইকেট শিকারের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করল স্পিনাররা। ম্যাচে ৪০টির মধ্যে ৩৮টি উইকেটই নিয়েছেন স্পিন বোলাররা। যা টেস্ট ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করলো। তিন স্পিনার জ্যাক লিচ, মঈন আলী এবং আদিল রশিদের সমন্বিত আক্রমণে ২০০১ সালের পর প্রথমবার স্বাগতিক শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ নিশ্চিত করেছে সফরকারী ইংল্যান্ড।
ওয়ানডে ও টি-২০’র পর এবার পাল্লেকেলেতে ৫৭ রানে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতল ইংল্যান্ড।

স্পিন সহায়ক পিচে উভয় দলের স্পিনাররা ৪০টির মধ্যে ৩৮ উইকেট শিকার করেছেন। এ পর্যন্ত কোন এক টেস্টে যা স্পিনারদেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড। একই সঙ্গে এই প্রথম কোন টেস্ট ম্যাচ হলো যেখানে পেসাররা কোন উইকেট নিতে পারেননি।
এর আগে ১৯৬৯ সালে নাগপুরে ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে স্পিনারদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকার ছিল ৩৭টি। তার আগে দুই বার এক টেস্টে স্পিনারদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকার ছিল ৩৫টি। ১৯৫৬ সালে কোলকাতায় ভারত-অস্ট্রেলিয়া এবং ১৯৮৭ সালে বেঙ্গালুরুতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে স্পিনাররা ৩৫ উইকেট শিকার করেছিলেন।

এক টেস্টে প্রথমবারের মত ৫ উইকেট শিকার করা ইংল্যান্ডের বাঁ-হাতি স্পিনার লিচ ম্যাচ শেষে বলেন, ‘অবিশ্বাস্য খুব ভাল লাগছে। ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করেছে, সত্যিই ছেলেরা কৃতিত্ব পাওয়ার দাবীদার। তবে এখানে বোলিং করাটা খুব সহজ ছিল না। ধারাবাহিকভাবে লাইন লেন্থ ঠিক রেখে বোলিং করতে হয়েছে।’

লিচকে যথার্থ সহায়তা দিয়েছেন মঈন আলী এবং লংকার দ্বিতীয় ইনিংসে এ জুটি মিলে নিয়েছেন ৯ উইকেট। আজ সকালে নিরোশান ডিকবেলার উইকেট শিকার করে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন আলী।

১৭ বছর পর শ্রীলংকার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতল ইংল্যান্ড

দীর্ঘ ১৭ বছর পর শ্রীলংকার মাটিতে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেলো ইংল্যান্ড। শ্রীলংকার বিপক্ষে আজ দ্বিতীয় টেস্ট ৫৭ রানের ব্যবধানে জিতে এক ম্যাচ বাকী রেখেই তিন ম্যাচের সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো ইংলিশরা। সেই সাথে বিদেশের মাটিতে ২০১৫ সালের পর আবারো সিরিজ জয়ের স্বাদও পেল দলটি।
শ্রীলংকার বিপক্ষে ক্যান্ডি টেস্ট জয়ের জন্য শেষ দিনে ৩ উইকেট প্রয়োজন ছিলো ইংল্যান্ডের। পক্ষান্তরে ম্যাচ জিততে শ্রীলংকার দরকার ছিলো ৭৫ রান। ইংল্যান্ডের ছুঁড়ে দেয়া ৩০১ রানের লক্ষ্যে চতুর্থ দিন শেষে ৭ উইকেটে ২২৬ রান করেছিলো শ্রীলংকা।

উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকবেলা ২৭ রান নিয়ে পঞ্চম ও শেষদিনের খেলা শুরু করেছিলেন। লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করার দায়িত্বটা ডিকবেলার উপরই ছিলো। কিন্তু দিনের ২৯তম বলে ও প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে উইকেট পতনের তালিকায় নাম তুলতে হয় ডিকবেলাকে।
ইংল্যান্ডের অফ-স্পিনার মঈন আলীর বলে বেন স্টোকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ডিকবেলা। ৩টি চারে ৪৩ বলে ৩৫ রান করেন তিনি। ডিকবেলা ফেরার পর মাত্র ২৩ বল টিকতে পারলে ২৪৩ রানেই গুটিয়ে লংকান ইনিংস। ফলে ম্যাচ ও সিরিজ হারের লজ্জা পেতে হয় লংকানদের। ইংল্যান্ডের বাঁ-হাতি স্পিনার জ্যাক লিচ ৮৩ রানে ৫টি ও মঈন আলী ৭২ রানে ৪টি উইকেট নেন। ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচেই প্রথমবারের মত পাঁচ বা ততোধিক উইকেট পেলেন লিচ। ম্যাচের সেরা হয়েছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক সেঞ্চুরিয়ান জো রুট। আগামী ২৩ নভেম্বর কলম্বোতে শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। গল-এ সিরিজের প্রথম টেস্ট ২১১ রানের ব্যবধানে জিতেছিলো ইংল্যান্ড।

শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর রুটের ক্ষুধা যেন আরো গেছে ইংল্যান্ড অধিনায়ক রুটের। আরও বড় সাফল্য অর্জন করতে চান তিনি, ‘দুর্দান্ত একটি টেস্ট ম্যাচ হলো। আমরা এখানে ভালো ক্রিকেট খেলতে এসেছিলাম। আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। গেল ১৮ মাস ধরে দলটি বেড়ে উঠেছে কিন্তু আমরা এখানেই থেমে যেতে চাই না। আমরা বিশ্বের এক নম্বর দল হতে চাই এবং তাই বিশ্বের যেকোন কন্ডিশনে আমরা ভালো পারফরমেন্স করতে চাই।’

সিরিজে হেরে ইংল্যান্ডের প্রশংসাই করলেন শ্রীলংকার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তিনি বলেন, ‘এ বছর আমরা প্রথম টেস্ট সিরিজ হারলাম। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দু’টি ম্যাচই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ছিলো। দু’টি ম্যাচেই আমাদের জয়ের ভালো সুযোগ ছিলো। তবে আমাদের চাইতে ইংল্যান্ড বেশি ভালো ক্রিকেট খেলেছে। আমরা এমন ফলকে সাদরে গ্রহণ করেছি। ম্যাচের ভুলগুলো থেকে আমাদের শিখতে হবে।’

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ২৯০ ও ৩৪৬, ৮০.৪ ওভার (রুট ১২৪, ফোকস ৬৫*, ধনঞ্জয়া ৬/১১৫)।
শ্রীলংকা : ৩৩৬ ও ২৪৩, ৭৪ ওভার (ম্যাথুজ ৮৮, করুনারতেœ ৫৭, লিচ ৫/৮৩)।
ফল : ইংল্যান্ড ৫৭ রানে জয়ী।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ইংল্যান্ড।
ম্যাচ সেরা : জো রুট (ইংল্যান্ড)।

 


আরো সংবাদ



premium cement