২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এক ম্যাচ দিয়ে রাব্বিকে বিচার করা যাবে না

ফজলে হোসেন রাব্বি - সংগৃহীত

প্রথমবার জাতীয় দলে। নার্ভাস হতে পারেন স্বাভাবিকভাবেই। ফজলে হোসেন রাব্বি ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করেই নির্বাচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। যখন খেলতে নামেন তখন নিজেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রমাণ করার জন্যই নেমেছেন। প্রথম ম্যাচে হয়নি- তাই বলে কি পরের ম্যাচে হবে না! এমনটা বলা যায় না। সেজন্য নতুনদের সুযোগ দিতে হবে। এক ম্যাচ বিবেচনা করে রাব্বির ক্যারিয়ারের সমালোচনা করা যাবে না। অধিনায়ক মাশরাফি অভিজ্ঞ বলেই ম্যাচ পুর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘নতুনদের সুযোগ দিতে হবে। তাদেরকে দীর্ঘমেয়াদে পরখ করতে হবে। নিজেদের সেট করতে সময়ের প্রয়োজন। সে সময় তাদের দিতে হবে। আমাদের পাইপলাইনের কথা চিন্তা করেই সেটি করতে হবে।’

১৪ বছর ধরে খেলছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। রাব্বির প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক সেই ২০০৪ সালে। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচও খেলেছেন সে বছরই। এরপর অনেক চড়াই-উতরাই গেছে তার ক্যারিয়ারে। ক্রিকেট ছেড়ে চাকরিও করেছেন! আবার ক্রিকেটে ফিরেছেন। ফিরে পেয়েছেন নিজেকে নতুন করে। ঘরোয়া ক্রিকেটে গত তিন-চার বছর ধরেই ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলছেন রাব্বি। এবারের জাতীয় লিগের প্রথম রাউন্ডে খেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ১৯৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। তার আগে ‘এ’ দলের হয়ে আয়ারল্যান্ড সফরেও ভালো করেছেন।

সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে স্কোয়াডে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছিলেন ফজলে রাব্বি। স্কোয়াডে ডাক পাওয়ার পর থেকেই বুঝা যাচ্ছিল এই সিরিজ দিয়েই অভিষেক হচ্ছে তার। ১২৯তম বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে অভিষেকও হলো তার। যদিও নিজের অভিষেক ম্যাচটা ব্যাট হাতে রাঙাতে পারেননি বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। চার বল খেলেও রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। চাতারার বল রাব্বির ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটের পেছনে। উইকেটরক্ষক ব্রেন্ডন টেলর এক হাতেই সেই বল লুফে নেন। আর এতে ১৩তম বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক ম্যাচে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরলেন তিনি।

বাংলাদেশে ১২৮ জন ক্রিকেটারের মাঝে এমন বিব্রতকর অভিষেক হয়েছে মোট ১২ জনের। ফজলে হোসেন রাব্বির আগের সঙ্গীরা হলেন নুরুল আবেদিন, গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, জাহাঙ্গীর শাহ, সামিউর রহমান, হারুনুর রশীদ, জাকির হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, আফতাব আহমেদ, এনামুল হক জুনিয়র, ডলার মাহমুদ ও জিয়াউর রহমান।

অভিষেকের আগেও বয়সের কারণে কিছুটা আলোচনায় ছিলেন রাব্বি। ৩০ বছর ২৯৫ দিন বয়সে ওয়ানডে অভিষেক হয় তার। ত্রিশের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অভিষেকের সংখ্যা খুবই কম। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের ওয়ানডে অভিষেক ম্যাচে ত্রিশের বেশি ক্রিকেটার ছিলেন জাহাঙ্গীর শাহ, রকিবুল হাসান ও সামিউর রহমান। পরবর্তী সময়ে ত্রিশের বেশি বয়সে অভিষেক হয়েছে কেবল মাহবুবুর রহমান ও ওয়াহিদুল গনির। দুজনের অভিষেক হয়েছে ওই নব্বইয়ের দশকে। কিন্তু বিংশ শতাব্দীতে রাব্বিই একমাত্র বাংলাদেশী ক্রিকেটার, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যার অভিষেক হলো বয়স ত্রিশের পর।

এই বয়সেও ওয়ানডে দলে ডাক পাওয়ার কারণ মূলত সাকিব আল হাসানের ইনজুরি ও ঘরোয়া ক্রিকেটের রাব্বির ধারাবাহিক পারফরম্যান্স। অন্যদিকে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিং এবং ফিল্ডিংয়েও পারদর্শী রাব্বি। ক্যারিয়ার শুরুর সময় ৫০ ওভারের ম্যাচে ওপেনিং করতেন তিনি। তিনেও ব্যাট করেছেন দীর্ঘদিন। পাঁচ-ছয় নম্বরে খেলারও অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ ছাড়াও বাঁহাতি স্পিন, প্রয়োজন বুঝে ব্যাট করার মানসিকতা, ফিল্ডিং ও ফিটনেস অন্যদের থেকে আলাদা ছিল বলেই রাব্বি জাতীয় দলে।


আরো সংবাদ



premium cement