২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রথম ওয়ানডের আগে বাংলাদেশের জন্য দুঃসংবাদ!

মাশরাফি মর্তুজা ও রুবেল হোসেন - সংগৃহীত

জিম্বাবুয়ে সিরিজকে সামনে রেখে পাঁচ দিন আগে থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্যাম্প। জ্বরের কারণে শুরু থেকে ক্যাম্পে থাকতে পারেননি পেসার রুবেল হোসেন ও স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। জ্বর কাটিয়ে মিরাজ ফিরলেও রুবেলের এখনো ফেরা হয়নি। অবস্থার বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন ডানহাতি এই পেসার। দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে না পারায় আগামীকাল রুবেলকে ছাড়াই মাঠে নামতে হতে পারে বাংলাদেশ দলকে।

এদিকে শরীরের বর্তমান অবস্থা জানিয়ে রুবেল বলেন, 'এই মুহূর্তে আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো আছি। তবে শরীর বেশ দুর্বল।'

তিনি আরো বলেন, 'যত দ্রুত সম্ভব সুস্থ হয়ে ম্যাচ খেলতে চাই। তবে নিশ্চিত খেলতে পারব কি না সেটি বলতে পারছি না। কাল (শনিবার) অনুশীলনে যোগ দেয়ার পর বোঝা যাবে।’

রুবেল প্রথম ওয়ানডে খেলার ব্যাপারে আশাবাদী হলেও জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলছেন অন্য কথা। তার কথায়, ‘এই মুহূর্তে রুবেল অনেকটাই সুস্থ। তারপরও খেলতে না পারলে সমস্যা নেই। আমাদের হাতে যথেষ্ট অপশন রয়েছে। প্রথম ওয়ানডে সে খেলতে পারবে কি না সেটা নিশ্চিত নয়। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ওয়ানডে থেকে সে খেলবে।’

শেষ পর্যন্ত রুবেলকে ছাড়াই মাঠে নামতে হলে বাংলাদেশের জন্য হিসাবটা কঠিনই হয়ে যাবে। তার অনুপস্থিতিতে পেস আক্রমণ কিছুটা ধারহীন হয়ে পড়বে, সেটা বলার অপো রাখে না। কারণ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও পুরোপুরি ফিট নন। ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল ও ঊরুর ইনজুরিতে ভুগছেন তিনি।

রুবেল ছাড়াও স্কোয়াডে আছে আরো চার পেসার। অধিনায়ক মাশরাফি ছাড়াও আছেন মুস্তাফিজুর রহমান, আবু হায়দার রনি ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। পেস বোলিং করেন আরিফুল হকও। তাই রুবেলের অনুপস্থিতি নিয়ে অতটা মাথা ঘামাচ্ছে না টিম ম্যানেজমেন্ট।

 

সৌম্যের সেঞ্চুরি এবাদতের পাঁচ উইকেট

প্রস্তুতি ম্যাচের ভার নিতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। বিসিবি একাদশের বিপক্ষে আট উইকেটের বড় ব্যবধানেই হেরেছে তারা। অবশ্য প্রস্তুতি তো প্রস্তুতিই। এর মাধ্যমে যে মেসেজ তারা পেয়েছে সেটি আসলেই জিম্বাবুয়ের জন্যই বিপদসঙ্কেত। বিসিবিও এর মাধ্যমে পরখ করেছে ফজলে মাহমুদ রাব্বি, সৌম্য সরকার প্রমুখকে। তবে এ এতে সৌম্য যেন আরো এক ধাপ এগিয়ে রইলেন। বরাবরই সৌম্যকে দলভুক্ত করার প্রাণন্ত চেষ্টা। কিন্তু সৌম্য পারেন না নিজেকে মেলে ধরতে। শেষ পর্যন্ত জাতীয় ক্রিকেট লিগে ভালো খেলার ধারাবাহিকতায় প্রস্তুতি ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন এ ব্যাটসম্যান।

বিকেএসপিতে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে জিম্বাবুয়েই প্রথম ব্যাটিং করতে নামে। এতে ৪৫.২ ওভারে অলআউট হয়ে যায়। এবাদত হোসেন নেন পাঁচ উইকেট। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন নেন তিনটি।

পক্ষান্তরে, জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা এতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। শুধু দুই ব্যাটসম্যান দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিংটা করতে পেরেছেন। এর একজন ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা অন্যজন এলটন চিগুম্বুরা। বাংলাদেশের কন্ডিশনটা চিগুম্বুরার ভালোই চেনা। যখনই তিনি আসেন। নিজের কাজটা তিনি সুন্দরভাবেই করেন। এ ম্যাচেও তিনি করেছেন ৮৩ বলে ৪৭ রানের এক ইনিংস। তবে স্বভাবসুলভ ছিল না এটি। দলের ব্যাটসম্যানদের টানা ব্যর্থতার মাঝে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে গিয়েই তাকে ধীরালয়ে ব্যাটিংটা করতে হয়েছে। একটি ছক্কা ও চারটি চার রয়েছে তার ইনিংসে। এ ছাড়া সেঞ্চুরি আছে একটি। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা সেঞ্চুরি করেন। ১৩৮ বলে ১০২ রান করে সফরটি ভালোমতোই শুরুর ইঙ্গিত দেন। একটি ছক্কা ও ১৪টি চারের মার রয়েছে তার ইনিংসে। মূলত ইনিংসের সূচনায় নেমে মাসাকাদজা আউট হন ৯ নম্বরে। দীর্ঘক্ষণ টিকে থেকে দলের স্কোরটা ১৭৬ রানে নিয়ে আউট হন তিনি। এরপর আর ২ রান যোগ করেই ইনিংস শেষ জিম্বাবুয়ের। বিসিবি একাদশের পেস বোলার এবাদত পাঁচ উইকেট নিয়ে তার যোগ্যতার প্রমাণ দেন। ৯ ওভার বোলিং করে তিন মেডেন, ১৯ রানের বিনিময়ে নেন পাঁচ উইকেট।

ম্যাচে রীতিমতো ভীতি ছড়িয়ে রাখেন তিনি জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। আরেক পেসার সাইফুদ্দিনও ভীতি ছড়িয়ে নেন তিন উইকেট। ওই দুই ব্যাটসম্যান ছাড়া আর কেউই পারেননি ডাবল ফিগারে যেতে। এর মধ্যে রয়েছেন ক্রেইগ আরভিন (১), শেন উইলিয়ামস (১), ব্রেন্ডন টেইলর (৬), সিকান্দার রাজা (৯), পিটার মুর (৪)। সাইফুদ্দিন ৩২ রানে নেন তিন উইকেট।

১৭৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামে বিসিবি একাদশের দুই ওপেনার মিজানুর রহমান ও ফজলে রাব্বি খেলতে নামেন। কিন্তু এ জুটি ভালো করেনি। ১১ রানেই আউট মিজান ৮ রান করেন। এরপর সৌম্য এসে জুটি বাঁধেন রাব্বির সাথে। এ জুটিও ভালো হয়নি। এবার আউট হন রাব্বি। প্রত্যাশা ছিল রাব্বি ভালো একটি ইনিংস খেলবেন। কিন্তু একটি জাতীয় দলের বিপক্ষে প্রথম খেলতে নেমে কিছুটা নার্ভাস ছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেটের দুর্দান্ত পারফর্ম করে চলা এ ব্যাটসম্যান। সিকান্দার রাজার বলে মুসাকান্দার হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। তবে অধিনায়ক সৌম্য সরকার ছিলেন অবিচল। ১১৪ বল খেলে ১০২ রান করে আউট হন তিনি। তার ইনিংসে রয়েছে ১ ছক্কা ও ১৩ চারের মার। সৌম্যের ইনিংসটা ছিল দায়িত্বপূর্ণ। নিজে অবশ্য অ্যাটাকিং ব্যাটিংটা করে অভ্যস্ত। কিন্তু এ ম্যাচে ম্যাচ জয়ের টার্গেট সামনে রেখে দেখেশুনে খেলে দলকে যেমন সাফল্য এনে দেন। তেমনি নিজের ইনিংসটাতেও সেঞ্চুরি দিয়ে পূর্ণতা আনেন।

মোসাদ্দেকও ভালো খেলছিলেন। কিন্তু ৩৩ রান করার পর তাকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে এনে সেখানে আরিফুলকে নামানো হয়। আরিফ শেষ পর্যন্ত ৯ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। জিম্বাবুয়ের ৯ বোলার বোলিং করেন।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল