২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নার্ভাস পাকিস্তান!

বাবর আজম আউট হয়েছেন ৯৯ রানে - ছবি : সংগ্রহ

ক্যারিয়ারের ১৫তম টেস্টে এসে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির খুব কাছ থেকে ফিরে আসতে হলো পাকিস্তানের মিডল অর্ডার বাটসম্যান বাবর আজমকে। ব্যক্তিগত ৯৯ রানে মিচেল মার্শের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন বাবর। আম্পায়ারের সঙ্কেতের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়েছিলেন বাবর, কিন্তু সফল হননি। তাই ক্যারিয়ারের ১৫তম টেস্টে এসেও সেঞ্চুরি পাওয়া হলো না তার। চমৎকার ব্যাটিং করা বাবরের ১৭১ বলের ইনিংসে ছিলো ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা।

বাবরকে নিয়ে এই টেস্টে পাকিস্তানের নার্ভাস নাইন্টিসে আউটের ঘটনা তিনটি। প্রথম ইনিংসে ৯৪ রান করে আউট হয়েছিলেন ফখর জামান ও সরফরাজ আহমেদ। এক টেস্টে তিনজন ব্যাটসম্যানের নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার হওয়ার ঘটনা খুব বেশি নেই।

প্রথম ইনিংসে একই ঘটনার শিকার হয়েছিলেন ফখর জামান। অভিষেক টেস্টটাকে সেঞ্চুরির আলোয় রাঙাতে যখন মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ফখর জামান তখনই ফিরে যান মারনুস লেবুশেনের বলে। একই ইনংসি সরফরাজ আহমেদও ফিরেন ব্যক্তগত ৯৪ রানে, একই বোলারের বলে।

৯৯ রানে আউট হওয়ার আগে বাবর আজম দলেকে দিয়ে গেছেন বড় রানের ভিত্তি। বাবর সরফরাজ জুটিতে পাকিস্তান পেয়েছে ১৩৩ রান।  ইতোমধ্যেই পাঁচশোর বেশি লিড হয়ে গেছে পাকিস্তানে। টেস্টে এখন চালকের আসনে পাকিস্তান। 

আরো পড়ুন: পাকিস্তানকে টেনে তুললেন অভিষিক্ত ফখর জামান

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকেই রেকর্ড গড়েছেন ফখর জামান। প্রথম পাকিস্তানি ওপেনার হিসেবে অভিষেক টেস্টের দুই ইনিংসেই অর্ধশত করেছেন তিনি। অথচ এই অভিষিক্ত ব্যাটসম্যানের কাছে এতোটা আশা করেননি কোচ মিকি আর্থার ও অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। যখন তাকে স্কোয়াডে যুক্ত করা হয় তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৫০ এর নিচে, সেটা বিবেচনায় আনেননি কেউ। প্রথম টেস্টের পর ওপেনার ইমাম-উল-হক ইনজুরিতে থাকায় ফখরকে দ্বিতীয় টেস্ট স্কোয়াডে যুক্ত করা হয়। আর অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ৯৪ রানের ঝলমলে একটি ইনিংস উপহার দিয়েছেন দলকে। আর দ্বিতীয় ইনিংসে সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ৬৬।

তার এই দুই ইনিংসে ভর করেই অনেকটা এগিয়েছে পাকিস্তান। আবু ধাবি টেস্টের প্রথম ইনিংসে যখন ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারালো পাকিস্তান, তখন হয়ত কেউ ভাবেনি অভিষিক্ত ওপেনার ফখর দলকে সেই দুঃসময়ে টেনে তুলতে পারবেন। সেই সময় অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের বুদ্ধিমত্তার সাথে মোকাবেলা করেছেন ফখর, যা মুগ্ধ করেছে কোচ ও অধিনায়ককে।


কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন ফখর? উইসডেন ডট.কম রেডিওকে এক সাক্ষাৎকারে সেই কথা বলেছেন এই ব্যাটসম্যান। বলেছেন, 'আসলে পরিস্থিতির কারণে আমি খেলার ধরণ পাল্টেছি।'

তিনি বলেন, 'আমি সহজাত খেলাটাই খেলে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ৫৭ রানে যখন ৫টি উইকেট পড়ে গেলো, আমি তখন স্থির হতে সময় নিচ্ছিলাম। কারণ আমাদের অবস্থা ভালো ছিল না। তাই সহজাত খেলাটা খেলছিলাম না।'

সেই পরিস্থিতে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। তার সাথে ১৪৭ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন ফখর। তবে সেই সময়টায় রান তোলার কাজটি করছিলেন সরফরাজ। মধ্যাহ্নের পর সজোরে ব্যাট চালিয়েছেন তিনি। পরে ফখরের প্রশংসা করেছেন তিনি, ও আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। নিজেকে নতুনভাবে আবিস্কার করেছি।

সরফরাজ বলেন, 'আসলে ফখর সব সময় খুব ভালোভাবে স্পিনারদের মোকাবেলা করতে পারে। আমি এ কাজটি তেমন করতে পারি না। তাই আমি শুধু স্পিনারদের বলগুলো আটকে দিয়ে সময় নিয়েছি।'

'আমরা সময় নিয়েছি। ধীরে ধীরে উইকেট আর্দ্র হয়েছে। আমরা মধ্যাহ্নের পর ব্যাট চালিয়েছি। দলের রান বাড়িয়েছি।'

ফখর ও সরফরাজের পার্টনারশিপ সেদিন পাকিস্তানকে ২৮০ রানের স্কোর গড়তে সহায়তা করে। বাকি কাজটুকু করে দেন রকস্টার মোহাম্মদ আব্বাস। দিন শেষে দুটি উইকেট শিকার করে দলকে স্বস্তি দেয়। আর দ্বিতীয় সকাল থেকেও চলে তার তাণ্ডব। একাই ৫ উইকেট ঝুলিতে পুরে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস ১৪৫ রানে গুটিয়ে দেয়।


আরো সংবাদ



premium cement