২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

যেভাবে খাদের কিনারায় থাকা পাকিস্তানকে টেনে তুললেন অভিষিক্ত ফখর জামান

ব্যাট চালাচ্ছেন ফখর জামান - ক্রিকইনফো

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকেই রেকর্ড গড়েছেন ফখর জামান। প্রথম পাকিস্তানি ওপেনার হিসেবে অভিষেক টেস্টের দুই ইনিংসেই অর্ধশত করেছেন তিনি। অথচ এই অভিষিক্ত ব্যাটসম্যানের কাছে এতোটা আশা করেননি কোচ মিকি আর্থার ও অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। যখন তাকে স্কোয়াডে যুক্ত করা হয় তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৫০ এর নিচে, সেটা বিবেচনায় আনেননি কেউ। প্রথম টেস্টের পর ওপেনার ইমাম-উল-হক ইনজুরিতে থাকায় ফখরকে দ্বিতীয় টেস্ট স্কোয়াডে যুক্ত করা হয়। আর অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ৯৪ রানের ঝলমলে একটি ইনিংস উপহার দিয়েছেন দলকে। আর দ্বিতীয় ইনিংসে সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ৬৬।

তার এই দুই ইনিংসে ভর করেই অনেকটা এগিয়েছে পাকিস্তান। আবু ধাবি টেস্টের প্রথম ইনিংসে যখন ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারালো পাকিস্তান, তখন হয়ত কেউ ভাবেনি অভিষিক্ত ওপেনার ফখর দলকে সেই দুঃসময়ে টেনে তুলতে পারবেন। সেই সময় অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের বুদ্ধিমত্তার সাথে মোকাবেলা করেছেন ফখর, যা মুগ্ধ করেছে কোচ ও অধিনায়ককে।

কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন ফখর? উইসডেন ডট.কম রেডিওকে এক সাক্ষাৎকারে সেই কথা বলেছেন এই ব্যাটসম্যান। বলেছেন, 'আসলে পরিস্থিতির কারণে আমি খেলার ধরণ পাল্টেছি।'

তিনি বলেন, 'আমি সহজাত খেলাটাই খেলে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ৫৭ রানে যখন ৫টি উইকেট পড়ে গেলো, আমি তখন স্থির হতে সময় নিচ্ছিলাম। কারণ আমাদের অবস্থা ভালো ছিল না। তাই সহজাত খেলাটা খেলছিলাম না।'

সেই পরিস্থিতে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। তার সাথে ১৪৭ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন ফখর। তবে সেই সময়টায় রান তোলার কাজটি করছিলেন সরফরাজ। মধ্যাহ্নের পর সজোরে ব্যাট চালিয়েছেন তিনি। পরে ফখরের প্রশংসা করেছেন তিনি, ও আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। নিজেকে নতুনভাবে আবিস্কার করেছি।

সরফরাজ বলেন, 'আসলে ফখর সব সময় খুব ভালোভাবে স্পিনারদের মোকাবেলা করতে পারে। আমি এ কাজটি তেমন করতে পারি না। তাই আমি শুধু স্পিনারদের বলগুলো আটকে দিয়ে সময় নিয়েছি।'

'আমরা সময় নিয়েছি। ধীরে ধীরে উইকেট আর্দ্র হয়েছে। আমরা মধ্যাহ্নের পর ব্যাট চালিয়েছি। দলের রান বাড়িয়েছি।'

ফখর ও সরফরাজের পার্টনারশিপ সেদিন পাকিস্তানকে ২৮০ রানের স্কোর গড়তে সহায়তা করে। বাকি কাজটুকু করে দেন রকস্টার মোহাম্মদ আব্বাস। দিন শেষে দুটি উইকেট শিকার করে দলকে স্বস্তি দেয়। আর দ্বিতীয় সকাল থেকেও চলে তার তাণ্ডব। একাই ৫ উইকেট ঝুলিতে পুরে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস ১৪৫ রানে গুটিয়ে দেয়।

 

আবুধাবিতেও ফ্রন্টফুটে পাকিস্তান

দুবাইয়ে প্রথম টেস্টের মতো আবারো চাপে পড়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ১৪৫ রানে অল আউট হয়ে গেছে। গতকাল ২০/২ নিয়ে খেলতে নেমে ওই অবস্থা তাদের। এরপর পাকিস্তান তাদের দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে দিন শেষে সংগ্রহ করেছে ১৪৪ রান ২ উইকেটে। এতে করে দ্বিতীয় দিন শেষে এরই মধ্যে লিড নিয়েছে তারা ২৮১ রানে। দুবাইয়ে প্রথম টেস্টেও পরাজয়ের মুখে থেকে শেষ দিনে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ম্যাচ ড্র করতে সক্ষম হয়েছিল। এবারো ম্যাচের গতিপথ কি তাহলে সে দিকে? পাকিস্তান কি এ ম্যাচও ফ্রন্টফুটে থেকেও জয় পাবে না।

আবুধাবির এ ম্যাচে অনেক প্রশ্নের অবতারণা। তবে আপাততদৃষ্টিতে পাকিস্তানের দিকেই পাল্লা ভারী। বিশেষ করে পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে ২৮২ করার পর প্রতিপক্ষকে ১৪৫ রানে অল আউট করতে পেরেছে। মোহাম্মাদ আব্বাস ও বিলালের মারাত্মক বোলিংয়ে অজিদের ওই অবস্থা। আব্বাস নেন ৫ উইকেট ৩৩ রানে। আর বিলাল নিয়েছেন তিন উইকেট ২৩ রানে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অ্যারন ফিঞ্চ করেন সর্বোচ্চ ৩৯ রান। এ ছাড়া মিচেল স্টার্কের ৩৪ রান উল্লেখযোগ্য। পাকিস্তান এরপর দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে প্রথম ইনিংসের চেয়েও ভালো করছে। দুই ওপেনার ফখর জামান ও মোহাম্মাদ হাফিজকে তারা হারালেও ক্রিজে রয়েছেন আজহার আলী ও হারিস সোহেল যথাক্রমে ৫৪ ও ১৭ রান নিয়ে।

এর আগে ফখর জামান আউট হয়েছেন ৬৬ রানে। ৮৩ বল খেলে সাত চারের সাহায্যে ওই রান করেছেন তিনি। হাফিজ অবশ্য সূচনাতেই আউট হয়েছেন। ১৩ বল খেলে ৬ রান করে আউট হয়ে যান তিনি স্টার্কের বলে। দলীয় ১৫ রানে আউট হয়েছিলেন তিনি। এরপর ফখর ও আজহার আলী মিলে দলের অবস্থার উন্নতি ঘটান। ১৫ থেকে ১০৬ এ নিয়ে যান তারা দলীয় স্কোর।


আরো সংবাদ



premium cement