২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাল্টা প্রতিরোধেও বড় স্কোর হলো না পাকিস্তানের

৯৪ রানে আউট হয়ে মাঠ ছাড়ছেন সরফরাজ আহমেদ -

প্রাথমিক বিপর্যয়, এরপর আবার ঘুরে দাড়ানো। আবুধাবিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাড়িয়েও স্কোরটাকে তিন শ’ পার করতে পারলো না পাকিস্তান। প্রথম দিন শেষ বিকেলে তারা অলআউট হয়েছে ২৮২ রানে। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ২০ রানে ২ উইকেট হারিয়েছে।

অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ ও অভিষিক্ত ফখর জামানের ১৪৭ রানের জুটি একটা পর্যায় পাকিস্তানকে ধ্বংসস্তুপ থেকে তুলে আনলেও স্কোরটাকে টেস্টের জন্য মানানসই পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেনি। ফখর, সরফরাজ দুজনেই শিকার হয়েছেন নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার হয়েছন। দুজনেরই রান সংখ্যা ৯৪, আবার আউট হয়েছেন একই বোলারের বলে।

অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে ফিরতে হলো পাকিস্তানের বামহাতি ওপেনার ফখর জামানকে। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেছেন এই তরুণ ওপেনার। তবে অভিষেক টেস্টে নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার হলেও যাওয়ার আগে দলকে ঠিকই টেনে তুলেছেন বিপর্যয় থেকে। চা বিরতির ঠিক আগের ওভারে মারনুস লাবুসক্যাগনির একটি বলে লাইন মিস করেন ফখর। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়েছিলেন পাকিস্তানি ওপেনার, তবে সফল হতে পারেননি। যার ফলে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি মিসের দুঃখ নিয়ে তাকে মাঠ ছাড়তে হয়।

মঙ্গলবার সকালে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৫ রানে হারায় আগের টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মাদ হাফিজের উইকেট। মিচেল স্টার্ক ফিরিয়েছেন দ্য প্রফেসরকে। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ফখর জামান ও আজহার আলী ৫২ রান তোলার পরই যেন ভুতের আছর লাগে পাকিস্তানের ইনিংসে। দলীয় ৫৭ রানে পরপর চারটি উইকেট হারায় পাকিস্তান। অসি স্পিনার নাথান লিগের ঘুর্নিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় পাক টপ অর্ডার।

ইনিংসের ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে আজহার আলীকে ফেরান লিয়ন। পরের বলে ক্রিজে নেমেই ট্রেভিস হেডের হাত ক্যাচ তুলে দেন হারিস সোহেল। নিজের পরের ওভারেই আবার আসাদ শফিক ও বাবর আজমকে ফেরান এই বামহাতি স্পিনার। ফলে ১ উইকেট ৫৭ রান থাকা পাকিস্তান মুহুর্তেই হয়ে যায় ৫ উইকেটে ৫৭। এই বিপর্যয়ে যতটা না নাথান লিয়নের কৃতিত্ব তার চেয়ে বেশি দায়ী পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা। প্রতিটি আউট ছিলো উইকেট বিলিয়ে দেয়ার মতো। ধারাভাষ্যকাররা বারবারই বলছিলেন বিষয়টি।

সতীর্থদের এই আসা যাওয়ার মধ্যেও এক প্রান্তে টিকে ছিলেন এই ম্যাচেই টেস্ট অভিষেক হওয়া ফখর জামান। ৬ষ্ঠ উইকেট তার সাথে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক সরফরাজ। এই জুটি দলকে ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার করতে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেন। শেষ পর্যন্ত ১৪৭ রানের এই জুটি ভাঙতে সফল হয় অস্ট্রেলিয়া। ফখর তার সময়োপযোগী ৯৪ রানের ইনিংসটি খেলেছেন ১৯৮ বলে। ছিলো ৮টি চার ও একটি ছক্কা।

ওয়ানডেতে মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত ফখর টেস্ট খেলতে নেমে যেন আমূল বদলে গেলেন। টেস্টে মেজাজেই খেললেন সাদা পোষাকে নিজের প্রথম ইনিংসটি, যা দলের বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে দারুণ ভুমিকা রেখেছে। তবে সেঞ্চুরি পেলে হয়তো আরো পূর্ণতা পেত ইনিংসটি।

ফখরের আউটের সাথে সাথেই দ্বিতীয় সেশনের খেলা বন্ধ ঘোষণা করে আম্পায়াররা। ফলে ৬ উইকেটে ২০৪ রান নিয়ে চা বিরতিতে যায় পাকিস্তান। উইকেটের অপর প্রান্তে ৭৮ রান নিয়ে থাকা পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ চা বিরতির পর লোয়ার অর্ডারকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান। কিন্তু ব্যক্তিগত ৯৪ রানে ক্যাচ দেন পিটার সিডলের হাতে। ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরিটা তাই হতে হতেও হলো না।
সরফরাজের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি পাকিস্তান। অন্যদের মধ্যে ইয়াসির শাহ ২৮ রান করেন।
অসি বোলারদের মধ্যে নাথান লিয়ন ৪টি ও মারনুস ৩টি উইকেট নেন।

সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement