‘আমরা আমাদের হৃদয় দিয়ে খেলেছি’
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:২৯, আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৩৩
শিরোপার একেবারে কাছ গিয়েও জয় হলো না। আরো একবার ফাইনাল ‘দুঃখ গাঁথা’ হয়ে থাকল বাংলাদেশের জন্য। শুক্রবার এশিয়া কাপের ফাইনালে শিরোপার খুব কাছে গিয়েও হেরে গেল বাংলাদেশ। শেষ বলের রোমাঞ্চে টাইগারদের ৩ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছে ভারত। তবে ম্যাচ শেষে অধিনায়ক যা বললেন, তাতে সবার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। আর এর মাধ্যমে মাশরাফি বিন মুর্তজা পরাজয়ের মধ্যও গৌরব থাকার বিষয়টি সামনে নিয়ে এলেন।
শুক্রবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করে ৪৮.৩ ওভারে ২২২ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে শেষ বলে ৩ উইকেটের জয় তুলে নেয় ভারত। এনিয়ে মোট ছয় বার বৈশিক আসরের ফাইনালে উঠেও শিরোপা ছোঁয়া হলো না টাইগারদের।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণি মঞ্চে মাশরাফি বললেন, ‘আমরা আমাদের হৃদয় দিয়ে খেলেছি। আমরা শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করেছি।’ কিন্তু ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগের কিছু ভুল বাংলাদেশকে হতাশায় ডুবিয়েছে বলে মনে করেন মাশরাফি। বলেন- ‘আমরা ব্যাট এবং বল হাতে অনেক ভুল করেছি।’
ব্যাটিংয়ে স্কোরটা আরেকটু বড় না হওয়ার আফসোসের কথা সরাসরিই বলে দিলেন মাশরাফি। সঙ্গে অবশ্য টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত বোলিংয়ের প্রশংসা করতেও ভুললেন না তিনি। বলেন, ‘যদি আপনি আমাদের বোলিংয়ের দিকে তাকান, আমরা ২৪০ বা এর আশপাশে রান করেও প্রত্যেকবার ম্যাচ জিতেছি। এই অবস্থায় আমরা ব্যাটসম্যানদের কাছে এমন কিছুই চেয়েছিলাম। কিন্তু দিন শেষে বোলাররা তাদের দায়িত্ব দারুণভাবে পালন করেছে।’
শেষরক্ষা হলো না বাংলাদেশের
বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারিয়ে সপ্তমবারের মত এশিয়া কাপ ক্রিকেটের শিরোপা জিতে নিয়েছে ভারত। শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে লিটন দাসের দারুণ সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ বড় সংগ্রহের আশা তৈরি করলেও মিডল অর্ডার আর লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ২২২ রান করেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। মাত্র ২২৩ রানের টার্গেট হলেও জয় পেতে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করতে হয়েছে ভারতকে।
ভারতের ইনিংসের শুরুটা দেখে মনে হচ্ছিল সহজ জয়ই পেতে যাচ্ছে তারা। দলীয় রান ৫০ পূর্ণ হওয়ার আগেই ফর্মে থাকা ওপেনার শেখর ধাওয়ান আর ওয়ান ডাউন আম্বাতি রাইয়ুডু আউট হয়ে ফিরে গেলেও মাত্র ২২৩ রান তাড়া করতে নামা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের খেলায় কোনো ধরণের চাপের চিহ্ন ছিল না।
ভারতীয় দলের কপালে প্রথমবার চিন্তার ভাঁজ দেখা দেয় ১৭তম ওভারে রুবেল হোসেনের বলে ব্যক্তিগত ৪৮ রান করে অধিনায়ক রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পর।
তবে অভিজ্ঞ মহেন্দ্র সিং ধোনি আর দিনেশ কার্তিকের ধীরস্থির জুটিতে আবারো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকে ভারত। দিনেশ কার্তিককে লেগ বিফোর করে দু'জনের ৫৪ রানের জুটি ভাঙেন মাহমুদুল্লাহ।
আর ধোনিকে উইকেটকিপারের ক্যাচে পরিণত করে ম্যাচ জমিয়ে দেন মোস্তাফিজ। সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামা কেদার যাদব আগ্রাসী হয়ে উঠতে থাকলেও হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে আহত অবসর নিয়ে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। আবারো কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় ভারত।
তবে রবীন্দ্র জাদেজা আর ভুবনেশ্বর কুমারের ঠান্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে যখন ভারতের জয় প্রায় সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল, তখনই রুবেলের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ তুলে দেন জাদেজা। পরের ওভারেই মোস্তাফিজের বলে অনেকটা একইভাবে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান ভুবনেশ্বর কুমার। কুমার আউট হওয়ার পর ইনজুরড কেদার যাদব আবারো নামেন ব্যাটিংয়ে। ৯ নম্বরে ব্যাট করতে নামা কুলদ্বীপ যাদবকে সাথে নিয়ে নিশ্চিত করেন ভারতের জয়।
এর আগে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বড় স্কোর করার সম্ভাবনা জাগিয়েও মাত্র ২২২ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ধারাটা যেমন ছিল, ফাইনালে দেখা যায় তার সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। সাধারণত লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নামা মেহেদি হাসান মিরাজকে পাঠানো হয় লিটন দাসকে সঙ্গ দেয়ার জন্য।
আসরের প্রথম পাঁচ ম্যাচে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটির সর্বোচ্চ অবদান ছিল ১৬ রান। ফাইনালে প্রথম ২১ ওভারের মধ্যে ১২০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ভারতকে দারুণ চাপে ফেলেন লিটন আর মেহেদি। তবে দূর্দান্ত শুরু করেও শেষপর্যন্ত ভারতের সামনে চ্যালেঞ্জিং স্কোরও দাড়া করাতে পারেনি বাংলাদেশ নিজেদের ব্যর্থতার কারণেই।
লিটন-মেহেদির ওপেনিং জুটি ভাঙার পর লোয়ার মিডল অর্ডারে নামা সৌম্য সরকার বাদে বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যানই দু্ই অঙ্কের কোঠায় পৌঁছাতে পারেননি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা