২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মোহাম্মদ নবীর মুখে আফগান ক্রিকেটের সংগ্রামী গল্প

মোহাম্মদ নবী। ছবি - এএফপি

আফগানিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম উজ্জল নক্ষত্র মোহাম্মদ নবী। তিনি আফগানিস্তান ক্রিকেটের উথান থেকে ছিলেন। বর্তমান দলটির সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের একজন তিনি। বর্তমান দলটির এই অবস্থানে আসতে কেমন পরিশ্রম ও কষ্ট করতে হয়েছে এসব নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

মোহাম্মদ নবী বলেন, আফগানিস্তান ক্রিকেটকে শূন্য থেকে টেস্ট মর্যাদায় পৌছাতে আমাদের অনেক লড়াই করতে হয়েছে।বিগত ১৮ বছর ধরে দেশটির ক্রিকেটে যা হয়েছে আমি তার প্রতক্ষ্যদর্শী।

নবী তার ক্রিকেট জীবনের শুরুর প্রসঙ্গে বলেন, ১৯৯৪-৯৫ সালের গৃহ যুদ্ধের সময় আমরা শরণার্থী হিসেবে পাকিস্তানের পেশোয়ারে ছিলাম। সেখানেই স্কুলে যাওয়া শুরু করি। এসময় স্কুলে বা রাস্তায় দেখতাম সবাই ক্রিকেট খেলছে। সেখান থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা জন্মে।

এরপর ২০০০ সালের দিকে নবীর পরিবার অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে আফগানিস্তানে ফেরত আসে। নবী বলেন, ১৯৯৬ সালের দিকে তালেবান শাসনের সময় আফগানিস্তানে একটি ক্রিকেট দল ছিল বলে শুনেছিলাম। সেটাই আমাকে আশা জাগাল। তারপর কাবুলে মোহাম্মদ শেহজাদ, আসগর আফগান ও শাপুর জার্দানের সাথে পরিচয় হয়। আর তাদেরকে সাথে নিয়েই আফগানিস্তানের মূল ক্রিকেট দল গঠিত হয়।

মোহাম্মদ নবীর ৩৪ বছরের জীবনে ক্রিকেট নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা নিজেদের উৎসাহ দেয়ার জন্য বলতাম আমরাই একসময় আফগানিস্তান ক্রিকেটের রুল মডেল হবো।

তিনি বলেন, এখন নতুনরা আসার পরও আমরা কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছি যাতে তারা দেখে বুঝতে পারে যে, একটা ভালো অবস্থানে যাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করা খুবই দরকার। আমরা আমাদের সংগ্রামের গল্পগুলো তরুণ খেলোয়াড়দের বলি।

ক্রিকেট নিয়ে এই সংগ্রাম আফগানিস্তানকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আফগানিস্তানে আপনি ক্রিকেটের সরঞ্জাম কেনার মতো দোকান পাবেন না। এছাড়া পরিবারের সমর্থন না থাকাও আফগান ক্রিকেটের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। এরপরেও এখানকার কিছু মানুষ তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে লড়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা পাকিস্তান ও ভারত থেকে ক্রিকেটের বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনে থাকি। আমাদের ভালোমানের মাঠও নেই। আসগর আর আমার পরিবার মোটামুটি সচ্ছল হলেও দলের বাকীদের পারিবারিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। আর এসব কারণেই আমাদের নিজেদের টাকা দিয়ে এসব কিনতে হয়।

আমরা আমাদের ক্রিকেটকে খুব ভালোবাসি আর এজন্য ক্রিকেট নিয়ে লড়ে যাচ্ছি। আমরা যখন আইসিসির বিভিন্ন বিভাগে খেলতাম তখন নিজেদেরকে একটা কথাই বলতাম। আমাদের একটাই রাস্তা আছে তা হলো আমাদের জিততে হবে।

দলের প্রাথমিক অবস্থা নিয়ে নবী বলেন, আইসিসি ট্রুনামেন্টে আমরা প্রাথমিক স্তর থেকে খেলা শুরুর করি। আর আমরা খুব দ্রুতই নিজেদের খেলার উন্নতি হয়। আমরা যখন আফগানিস্তানের হয়ে বিভিন্ন ট্রফি জিততে শুরু করি তখন জনগন বিমানবন্দরে আমাদের সংবর্ধনা দিতে আসত। সংবাদ মাধ্যম, মন্ত্রী, এমপিরাও আমাদের সাথে দেখা করতে আসতেন। আমরা নতুনদের এসব চমকপ্রদ কাহিনী বললে তারাও উৎসাহিত হয়।

মোহাম্মদ নবী ও শাপুর আফগান ক্রিকেটের প্রথম তারকা খেলোয়াড় হলেও বর্তমান সময়ে রশিদ খান ও মুজিব জাদরানরা ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করে তুলছে।


আরো সংবাদ



premium cement