১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাঁচ হাজারি ক্লাবে প্রবেশ করলেন মুশফিক

পাঁচ হাজারি ক্লাবে প্রবেশ করলেন মুশফিক - সংগৃহীত

টুর্নামেন্টের শুরুতে ওয়ানডে ক্রিকেটের পাঁচ হাজারি ক্লাবে প্রবেশ করতে মুশফিকুর রহিমের প্রয়োজন ছিলো ১৭২ রান। শ্রীলঙ্কা বিপক্ষে ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রানের ইনিংস খেলে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করার পথে।

তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে বিশ্রাম ও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ২১ রান করে আউট হওয়ায় বেড়ে যায় অপেক্ষা। অবশেষে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচে ব্যক্তিগত এ মাইলফলক ছুঁয়ে ফেললেন মুশফিক।

রোবারের ম্যাচে নামার আগে মুশফিকের প্রয়োজন ছিল ৭ রান। ইনিংসের একাদশতম ওভারে গুলবাদিন নাইবের ওভারে ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে বাংলাদেশের তৃতীয় ও বিশ্বের ৮৪তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন মুশফিক। তার আগে বাংলাদেশের পক্ষে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান নিজেদের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন।

আরো পড়ুন : ওয়ানডে অভিষেক হলো কোবরা ড্যান্সার নাজমুলের
নয়া দিগন্ত অনলাইন ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:৩৬

বাংলাদেশের ১২৮তম খেলোয়াড় হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হলো বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর। কোবরা ড্যান্সের জন্য তার খ্যাতি রয়েছে।

এশিয়া কাপের ১৪তম আসরের সুপার ফোরে আজ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নাজমুলকে নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। ফলে প্রথমবারের মত ওয়ানডে খেলার সুযোগ পেলেন ২৭ বছর বয়সী নাজমুল।


দেশের হয়ে শুধুমাত্র টি-২০ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে নাজমুলের। ১৩ ম্যাচে ৮ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

ঘরোয়া আসরে লিষ্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৬৮ ম্যাচে ৮৬ উইকেট ঝুলিতে রয়েছে নাজমুলের।

কোবরা ড্যান্স এলো কোথা থেকে

শ্রীলংকার বিপক্ষে নিদাহাস ট্রফিতে মুশফিকুর রহিম দলকে জেতানোর পর এমন নাচেন।আর এরপরই এটি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের উইকেট হারানোর সময়গুলোতে কোবরা ড্যান্স ভঙ্গি করতে দেখা গেছে গ্যালারিতে শ্রীলংকার সমর্থকদের।

পরে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বাংলাদেশের জেতার পর বাংলাদেশের খেলোয়াড় ম্যানেজার সবাইকেই এ নাচ প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।

তবে এ নাচের সূচনা হয়েছিল অনেক আগে নাজমুল ইসলাম অপুর মাধ্যমে ।। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি আসরে তিনি এই নাচ প্রথম নাচেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পরও নাজমুল উইকেট পাওয়ার পর এমন নাচ দেখান।

আরো পড়ুন : টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আগে ব্যাটিং পেয়েছে বাংলাদেশ।
ভারতের বিপক্ষে খেলা আগের ম্যাচ থেকে দু’টি পরিবর্তন এনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। মোসাদ্দেক হোসেন ও রুবেল হোসেনের পরিবর্তে দলে এসেছেন ইমরুল কায়েস ও নাজমুল ইসলাম অপু।

পক্ষান্তরে আগের ম্যাচের একাদশ থেকে একটি পরিবর্তন এনেছে আফগানিস্তান। নাজিবুল্লাহ জাদরানের পরিবর্তে একাদশে সামিউল্লাহ শেনওয়ারি।
ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বাংলাদেশের।

বাংলাদেশ একাদশ : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ মিথুন, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, মোস্তাফিজুর রহমান, নাজমুল হোসেন শান্ত ও ইমরুল কায়েস।

আফগানিস্তান একাদশ : আসগর আফগান (অধিনায়ক), মোহাম্মদ শাহজাদ, ইহসানুল্লাহ জানাত, রহমত শাহ, হাশমত শহিদি, সামিউল্লাহ সিনওয়ারি, মোহাম্মদ নবী, গুলবাদিন নাইব, রশিদ খান, আফতাব আলম ও মুজিব উর রহমান।

আরো পড়ুন : যে পাঁচ কারণে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট
বিবিসি

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল শেষ দুই ম্যাচে আফগানিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে যথাক্রমে ১১৯ ও ১৭৩ রানে অলআউট হয়ে যায়। মূলত তামিম ইকবাল আঘাত পেয়ে টুর্নামেন্ট থেকে চলে যাওয়ার পর এই ব্যাটিংয়ে এই সংকট দেখা দিয়েছে। তবে বাংলাদেশ প্রায়শই এমন সংকটে ভুগছে, যে সিনিয়র ক্রিকেটাররা ভালো না খেললে সমষ্টিগতভাবে দল খারাপ করছে।

প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর কী কারণে বাংলাদেশ এশিয়া কাপে হঠাৎ পিছিয়ে পড়লো? এমন প্রশ্নের জবাবে বেশ কয়েকটি উত্তর সামনে চলে আসে।


ঘরোয়া ক্রিকেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার তৈরি করছে না
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল একজন কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তার মতে, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার তৈরিতে ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘তামিম ইকবাল না থাকার ফলে পুরো ব্যাটিং ধ্বসে যাবে এটা মানা যায় না। সাকিব, মুশফিক ও রিয়াদের ওপর শুধু তাকালে হবে না।’

সালাউদ্দিনের মতে, ‘আবার নতুনরা যেভাবে উঠে আসছে তাতে বড় মঞ্চের জন্য যে প্রস্তুত না সেটা বোঝা যায়। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুই এক ম্যাচ দেখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নামানো বুমেরাং হয়ে পড়ে।’

‘এ’ দলের কার্যক্রম কম
চলতি বছর বাংলাদেশে 'এ' দল পুনরায় খেলা শুরু করেছে। তবে দীর্ঘ বিরতি থাকায় কারা আসলে দলে সুযোগ পাওয়ার মতো আছে সেটা বিবেচনা করা কঠিন হয়ে যায়।

মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলছেন, ‘দলে অতিরিক্ত পরিবর্তন ইতিবাচক না। এতে ক্রিকেটার ও দল উভয়ের মধ্যে আস্থা থাকে না। কেউই ভবিষ্যৎ নিয়ে সুস্পষ্ট ভাবনা ছাড়াই ক্রিকেট খেলে ফলে চাপ থাকে।’

স্পিন বলে ভালো করছে না বাংলাদেশ
ভারত ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ মোট ১০টি উইকেট স্পিনারদের বিপক্ষে হারিয়েছে। রশিদ খানের ৯ ওভারে ১৩ রান, মোহাম্মদ নবীর ১০ ওভারে ২৪, মুজিব উর রহমানের ৮ ওভার এক বলে ২২ রান নেয় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

এর কারণ হিসেবে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন মনে করেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব ভালো মানের স্পিনারের বিপক্ষে খেলে না ব্যাটসম্যানরা। যথাযথ বল বিবেচনা, শট সিলেকশনে এখনো পিছিয়ে আছে তাই।

তিনি বলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে যেসব উইকেট বল করা হয়, সেখানে বল নিচু হয়ে আসে, যথেষ্ট বাউন্স থাকে না। আর যারা বল করছেন তারা স্বভাবতই উইকেটের সুবিধা পান। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো অধিকাংশ সময়ই স্পোর্টিং উইকেটে হয়, সেখানে বল করার মতো বাংলাদেশে খুব কম স্পিনারই সক্ষম। যার প্রভাব ব্যাটিং এ পড়ছে।’

সিনিয়র ক্রিকেটারদের ব্যাক আপ না থাকা
প্রতিটা ক্রিকেটারের ব্যাক আপ হিসেবে যারা আছেন তারা খুব একটা ভালো করছেন না। জাতীয় দলে যারা পুনরায় বিবেচনায় আসছেন তারা ভালো ক্রিকেট খেলে দলে ফিরছেন না। অন্যকেউ খারাপ করলে সেক্ষেত্রে ডাক পাচ্ছেন দলে।

মোহাম্মদ সালাউদ্দিন মনে করেন, প্রতিটা জায়গায় মানসম্মত ব্যাটসম্যান না থাকা ও সেই সাথে ব্যাক আপ না থাকা ক্রিকেটের জন্য খারাপ।

বাজে শট সিলেকশন
ভারতের বিপক্ষে ৩৩তম ওভারের মধ্যে সাকিব, মুশফিক ও রিয়াদ প্যাভিলিয়নে ফেরেন। এর পরিবর্তে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত নিজেকে প্রমাণের মঞ্চ পেয়েও ব্যর্থ হন। রবীন্দ্র জাদেজার বলে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে এমএস ধোনির হাতে 'কট বিহাইন্ড' হন সৈকত।

তামিম ইনজুরিতে থাকায় যে দুজনের প্রমাণ করার সুযোগ ছিল সেই লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তও বাজে শট খেলে আউট হন। এছাড়া সাকিব জাদেজার দু বলে দুটি বাউন্ডারি মারার পর স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন। আর মুশফিক ৪৪ বল খেলে ২১ রান করার পর রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হন যা কিনা খেলার গতিপথের বিপরীতে।

 


আরো সংবাদ



premium cement