১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

তামিমের পরিবর্তে ওপেনিংয়ে কে?

তামিম ইকবাল। - ছবি: এএফপি

দলের প্রয়োজনে ভাঙা কব্জি নিয়েই মাঠে নেমে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু তার হাতের যে অবস্থা, তাতে এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচগুলো আর খেলা সম্ভব নয়। দেশসেরা ওপেনার তাই ফিরে এসেছেন দেশে।

এশিয়া কাপের উদ্ধোধনী ম্যাচেই ইনজুরিতে আক্রান্ত হন তামিম। ফলে বাধ্য হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। তামিম না থাকা বাংলাদেশ দলের জন্য বড় ধাক্কা নিঃসন্দেহে। বিপক্ষ শিবিরও কিছুটা খোশ মেজাজে থাকবেন। ফলে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে নতুন ওপেনিং জুটি দেখা যাবে। ওপেনিংয়ে তামিমের জায়গাটা নেবেন কে?

তামিম বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, এই জায়গায় তাই বাঁহাতি একজন ব্যাটসম্যানের কথাই ভাবা হচ্ছে। দলে বিকল্প হিসেবে আছেন দুই বাঁহাতি-মুমিনুল হক আর নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের মধ্যে যে কোনো একজন ওপেনিংয়ে খেলবেন। অন্যদিকে মোহাম্মদ মিঠুনের ওপেনিংয়ে খেলার অভিজ্ঞতা আছে।

শান্তই টিম ম্যানেজম্যান্টের প্রথম পছন্দ। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের এখনও ওয়ানডে অভিষেক হয়নি। আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষেই সেটা হয়ে যেতে পারে তার। সেক্ষেত্রে শান্ত-লিটনের নতুন এক জুটি দেখা যাবে।

তামিমের জায়গায় কে আসছেন, সেটি অবশ্য পরিষ্কার করেননি মাশরাফি বিন মর্তুজা। তবে টাইগার অধিনায়ক জানিয়েছেন, যে-ই সুযোগ পাক, ভালো একটা শুরুই আশা করছেন তিনি।

ওপেনিং জুটি নিয়ে মাশরাফি বলেন, 'তরুণ খেলোয়াড়দের চেষ্টা করতে হবে। অবশ্যই আমরা তাদের কাছ থেকে তামিমের মতো সার্ভিস আশা করি না। তবে যদি তারা নিজেদের সেরাটা দিতে পারে, তবে তামিম যা করতো, তা পারবে। আমি শুধু তাদের কাছে ভালো একটি শুরু আশা করছি। একইসঙ্গে যদি তারা সেট হয়ে যেতে পারে, তবে ভালো কিছুই করতে পারবে।'

 

আরো পড়ুন:  জুনিয়রদের ওপর ভরসা নেই?
বিবিসি, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮


বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাকিব আল হাসান জানুয়ারি মাস থেকেই চোটগ্রস্ত, মুশফিকুর রহিমের পাঁজরের নবম হাড়ে চোট আছে বলে জানা গেছে এবং তামিম ইকবাল বা হাতে চোট পেয়ে বেশ লম্বা সময়ের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেছেন।

চোট নিয়েই নিদাহাস ট্রফি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ও এশিয়া কাপ খেলছেন সাকিব। এশিয়া কাপ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে জানা গেছে মুশফিকের চোটের কথা। কিন্তু প্রতিনিয়ত এমন হচ্ছে যে পুরোপুরি সুস্থ না হলেও সিনিয়র ক্রিকেটাররা খেলে যাচ্ছেন। নাজমুল আবেদীন ফাহিম বাংলাদেশের একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেট কোচ। তিনি বলেন, তামিম ইকবালের ইনজুরিটা আগে থেকে এমন ছিল না। শনিবার চোট পেয়েছে বলে এমন হয়েছে। আর মুশফিক যে খেলতে পারেন সেটা তো প্রমাণই করেছে।


চোট নিয়েও তাদের এই খেলে যাওয়ার কারণে প্রশ্ন উঠেছে : নির্বাচকরা কি তাহলে নতুন ক্রিকেটারদের ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না?

ফাহিমের মতে, "আমরা যতটা আশা করেছিলাম নতুন ক্রিকেটারদের নিয়ে সে রকম অংশীদার তারা হতে পারেননি। কখনো কখনো ভালো করেন কেউ কেউ, কিন্তু সেটা দীর্ঘমেয়াদি হয় না। সে কারণেই সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর আস্থাটা এমন বেশি।"

বাংলাদেশের সাবেক নারী ক্রিকেটার সাথিরা জাকির জেসি বলেন, "একজন সিনিয়র যে সুযোগ পান জুনিয়ররা যদি একটু ভালো পারফর্ম করেন তাহলে কিন্তু তারা সিনিয়রদের চেয়েও বেশি সুযোগ পান। কিন্তু তারা এখন পারফর্ম করছে না। যেমন সৌম্য, সাব্বির, সৈকতরা বেশ সুযোগ পেয়েছেন। সৌম্য-মোসাদ্দেকরা যেভাবে শুরু করেছেন তাদের সেই শুরুটা এখন আর নেই।"

কিন্তু একটা সময় যখন তামিম, মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লার মতো ক্রিকেটাররা থাকবেন না তখন এই ক্রিকেটারদের ভালো করতেই হবে বলে মনে করেন জেসি।

আর সাকিবের বিষয়ে নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ক্রিকেট বোর্ড সিদ্ধান্ত নেন কোনো প্রতিযোগিতায় তিনি অংশ নেবেন আর কোনটায় অংশ নেবেন না। এশিয়া কাপের মতো টুর্নামেন্টে সাকিব না থাকলে অনেকটা ভারসাম্য হারায় দল। এজন্য এই টুর্নামেন্টের পরে অস্ত্রপচার করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্রিকেট প্রশাসন।"

সাথিরা জাকির জেসি বলেন, অনুর্ধ্ব ১৯ থেকে শুরু করে 'এ' দলে অনেক ক্রিকেটার আছে কিন্তু সাকিবের জায়গা নেয়ার মতো ক্রিকেটার আছে কি না সেটা দেখার বিষয়।

"মুশফিক ম্যাচের আগে খানিকটা হয়তো অসুস্থ বোধ করছিলেন। কিন্তু মুশফিক যদি মনে করেন যে তিনি কিপিং ও ব্যাটিং করতে পারেন সেটা তার একান্ত সিদ্ধান্ত," এমন মত ফাহিমের।

নামজুল আবেদীন ফাহিম বলেন, "মুশফিকের মানের ব্যাটসম্যান যখন নিজের ইচ্ছায় কিপিং করেন তখন নির্বাচকদের ওপর চাপ কমে যায়। যদি একজনকে শুধু কিপার হিসেবে নেয়া হয়, এবং সে যদি ব্যাটিং ভালো না করে, তারপরও তাকে দলে রাখতে হয়। তাই মুশফিক কিপিং করলে সিদ্ধান্ত নেয়াটা সহজ হয়।"

সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি সিরিজে রানের জন্যে তামিমের ক্ষুধা ছিল বলে মনে করেন ফাহিম। তিনি বলেন, তামিম ইকবালের অভিজ্ঞতা ও ড্রেসিং রুমে তার প্রভাবটা বাংলাদেশ দল মিস করবে।

তার মতে, বাংলাদেশ অনেক দিন ধরে একজন দ্বিতীয় ওপেনারের খোঁজে আছে। সে ক্ষেত্রে প্রথম চয়েস তামিমের না থাকাটা অবশ্যই ভোগাবে।

আরো পড়ুন :মুশফিকের সাফল্যের সিক্রেট
ক্রীড়া প্রতিবেদক

দুই রানে সাজঘরে দুই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। দলীয় সংগ্রহ ৩-এ উন্নীত হওয়ার পরই সবচেয়ে কঠিন ধাক্কা হজমে উৎকণ্ঠিত বাংলাদেশ। বাঁ-হাতে সরাসরি বলের আঘাতের অসহ্য যন্ত্রণা স্পষ্ট উপস্থিতি তামিম ইকবালের মুখাবয়বে। অবসর নিয়ে তার সাজঘরে প্রত্যাবর্তনে ৩ উইকেটে ৩ রান সমীকরণ দুঃস্বপ্নের ফাঁদে বাংলাদেশ! মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের প্রেস্টিজিয়াস আসর এশিয়ার কাপের উদ্বোধনী ম্যাচের সূচনার ওই বিপর্যয়ের দীর্ঘমেয়াদে টাইগার শিবিরে প্রভাব বিস্তারে বাদ সাধেন মুশফিকুর রহীম। তার আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং প্রদর্শনীর দৃপ্ত বাসনায় হার মেনেছে দুবাইয়ের প্রচণ্ড গরমও। শনিবার ওয়ানডে ফরম্যাটের এক খেলায় মুশফিকের বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান সংগ্রহের রেকর্ডের ইনিংসই ‘এক্স ফ্যাক্টর’ ভূমিকা পালন করেছে লঙ্কার অসহায় পরাজয়ে। চরম দলীয় বিপর্যয়ের বাড়তি স্নায়ুচাপের পাশাপাশি লম্বা সময় ব্যাটিং করার ক্ষেত্রে তীব্র গরমের চ্যালেঞ্জও টপকে গেছেন সাবেক অধিনায়ক। 

মূলত কঠোর অনুশীলন প্রক্রিয়া পদ্ধতিই মুশফিককে সহায়তা করেছে দুবাইয়ের প্রতিকূল কন্ডিশনে দুর্দান্ত ব্যাটিং-নৈপুণ্য প্রদর্শনে। সম্প্রতি ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রেনিংয়ে কঠিন পরিশ্রমের ওপর বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করেন মুশফিকুর রহীম। তিনি বলেন, ‘দৌড়ে ৬০ সেকেন্ডের একটি নির্দিষ্ট স্থান ১০ সেকেন্ড কম সময় নিয়ে অতিক্রম ফিটনেসের ক্ষেত্রে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগান দেয়। কঠিন কন্ডিশনে পারফরম করায় সহায়কের ভূমিকা পালন করে। সময়ের আগে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি সম্পন্নের বেলায় আমি কোনো ছাড় দেয় না। সামনে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা বিবেচনা করেই নিজেকে প্রস্তুত করি।’

দলীয় বিপর্যয়ের বাড়তি স্নায়ুচাপ চ্যালেঞ্জ পাড়ি দেয়ার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর চমৎকার নিদর্শন ও উপস্থিতি দুবাইয়ে মুশফিকের ১৪৪ রানের স্মরণীয় ইনিংসে। চতুর্থ উইকেটে মিথুনকে নিয়ে ১৩১ রানের জুটি ম্যাচে টাইগারদের প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত হয়। ৩ রানে শীর্ষ ৩ ব্যাটসম্যানকে হারানোর পর ১০০ প্লাস জুটির সাময়িক স্বস্তির অ্যাডভান্টেজ লুফে নিতে পারেনি বাংলাদেশের মিডলঅর্ডার। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মুশফিক উদ্ভাসিত হন দৃঢ়তা প্রদর্শনের অনন্য চিত্রনাট্যে।

বোলারদের নিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই অব্যাহত রাখেন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে নিজেকে অধিষ্ঠিত করেন টাইগার ব্যাটিং ইতিহাসের নতুন অধ্যায়ে। খেলেন ১৫০ বলে তার ম্যাচউইনিং ১৪৪ রানের ইনিংস। ৪টি ছক্কার পাশাপাশি হাঁকান ১১টি বাউন্ডারি।

 


আরো সংবাদ



premium cement