আফগানদের সাথে হারলেই শ্রীলঙ্কার বিদায়
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৪২, আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:৩২
এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই বড় হোঁচট খেয়েছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৩৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারের একদিন পরই মাঠে নেমে পড়তে হচ্ছে মালিঙ্গাদের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ম্যাচটি শুরু হবে। আর রশিদ খান, মোহাম্মদ নবীদের কাছে হারলেই বাড়ি ফেরার টিকিট নিশ্চিত শ্রীলঙ্কার।
এশিয়া কাপের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। সাঙ্গাকারা, জয়বর্ধানের অবসরের পর ধুকতে থাকা লঙ্কান ক্রিকেট দলের হাল ধরেছেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ হাথুরুসিংহে। সাবেক শীষ্যদের কাছে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছেন। তাই আফগানিস্তানের সাথে তাদের ডু অর ডাই ম্যাচ। আজকের ম্যাচে হারলেই খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হবে ম্যাথুসদের।
২০১৪ সালে এশিয়া কাপে অভিষেক হয়েছিল আফগানদের। গতবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হলেও জায়গা মেলেনি রশিদ খানদের। এবার আরব আমিরাতে ফিরে শিরোপা জেতার হুংকার রশিদ খানের! ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের শীর্ষে থাকা এ বোলারের চোখ শিরোপায়, ‘অবশ্যই (শিরোপা জিততে পারি আমরা)। টুর্নামেন্টটা উপভোগ করতে চাই। চাপের সময়গুলো ঠাণ্ডা মাথায় কাটাতে পারলে যেকোনো কিছু সম্ভব।’
এশিয়া কাপে অভিষেকে বাংলাদেশকে হারিয়েছিল আফগানিস্তান। ফতুল্লার সেই ম্যাচে আফগানদের ২৫৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২২২-এ। আসগর ৯০ ও সামিউল্লাহ সেনওয়ারি করেছিলেন ৮১ রান। অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী নেন ৩ উইকেট। চার বছর পর দলটা প্রায় একই আছে।
বাড়তি শক্তি হিসেবে রশিদ খান আর মুজিব উর রহমানের মতো দুই তরুণ যোগ হয়েছেন। গত দুই বছরের রেকর্ডও সমীহ জাগানিয়া আফগানিস্তানের। ৩৪ আন্তর্জাতিক ম্যাচে জিতেছে ১৯টিতে। টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশকে। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। ক্যারিবীয়দের সেই টুর্নামেন্টে হারিয়েছিল আবার দুইবার। তবে হঠাৎ ব্যাটিংয়ে ধস নামাটা বড় দুর্বলতা হয়ে আছে তাদের ক্রিকেটে। এটা কাটিয়ে উঠতে পারলে লঙ্কানদের চমকে দেওয়ার সামর্থ্য আছে আফগানিস্তানের।
দীনেশ চান্ডিমাল আর দানুশকা গুনাথিকালাকে ছাড়াই শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপে এসেছে। অন্যদিকে গত দুই বছরে দলটির নেতৃত্বে ছিলেন সাতজন। বারবার এমন পরিবর্তনে নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে হাতুরুসিংহের দল।
এশিয়া কাপের শুরু হয়েছে ১৩৭ রানের বড় হারে। মাশরাফিদের ২৬১ রানের জবাবে ৩৫.২ ওভারে গুটিয়ে গেছে ১২৪ রানে। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটা তাদের সবচেয়ে কম রানের ইনিংস। এ জন্য হতাশা লুকাননি অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, ‘আমরা অনেক ক্যাচ ফেলেছি। ব্যাটসম্যানরা উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছে বাজে শট খেলে।’ এর মধ্যেও ইতিবাচক হচ্ছে দীর্ঘদিন পর ফিরে লাসিথ মালিঙ্গার ৪ উইকেট নেওয়া। তা ছাড়া আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ খেলে দুটিই জিতেছে শ্রীলঙ্কা। আজ টিকে থাকার লড়াই বলে নিজেদের সেরাটা খেলতে প্রত্যয়ী ম্যাথুজের দল।
আরো পড়ুন: আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াই শ্রীলঙ্কার
বাসস, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৪তম আসরের প্রথম ম্যাচে গতরাতে বাংলাদেশের কাছে ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে শ্রীলংকা। এই হারে টুর্নামেন্টের শেষ চারে উঠার পথ কঠিন হয়ে গেছে লঙ্কানদের। আগামীকাল ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামবে শ্রীলংকা। টুর্নামেন্টের শেষ চারে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে আফগানদের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই শ্রীলংকার। অন্যদিকে, শ্রীলংকাকে হারাতেই পারলেই বাংলাদেশকে নিয়ে এই গ্রুপ থেকে শেষ চার নিশ্চিত করে ফেলবে আফগানিস্তান। দুবাইয়ে শ্রীলংকা-আফগানিস্তানের ম্যাচটি শুরু হবে বিকেল সাড়ে ৫টায়।
সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকবারই মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। তারপরও ফেভারিটের তকমাটা গায়ে মাখতে পারেনি কোন দলই। তবে মাঠের পারফরমেন্সে আলো ছড়িয়েছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। বিশেভাবে মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিথুন। ১ রানে ২ উইকেট হারানোর অল্প কিছুক্ষণ পর হাতের কব্জিতে ব্যাথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। ফলে শুরুতেই বড় ধরনের চাপে পড়ে বাংলাদেশ দল।
কিন্তু মাথা ঠান্ডা করে চতুর্থ উইকেটে ১৩১ রানের মহামূল্যবান জুটি গড়েন মুশফিক ও মোহাম্মদ মিথুন। এ জুটির কল্যানেই লড়াই করার পুজি পায় বাংলাদেশ। মিথুন আউট হলে পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও নিজেকে আরও একবার প্রমান করেন মুশফিক। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৪৪ রানের দর্শনীয় ইনিংস খেলেন মুশি। ২৬১ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
এরপর জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ বোলারদের তোপের মুখে অসহায় আত্মসমর্পন করে শ্রীলংকার ব্যাটসম্যানরা। শেষ পর্যন্ত ১২৪ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলংকার ইনিংস। ফলে হার দিয়ে এবারের আসরে যাত্রা শুরু করে কঠিন সমীকরণের মুখে শ্রীলংকা। টুর্নামেন্টের শেষ চারে খেলতে হলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় ছাড়া কোন উপায় শ্রীলংকার সামনে খোলা নেই।
তাই কঠিন সমীকরণের মুখে দাঁড়িয়ে ঘুড়ে দাঁড়ানোর প্রত্যায় ব্যক্ত করেছেন শ্রীলংকার ওপেনার উপুল থারাঙ্গা। তিনি বলেন, ‘প্রথম ম্যাচে আমাদের ব্যাটসম্যানরা ভালো করতে পারেনি। ২৬২ রানের টার্গেটে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হয়। কিন্তু আমরা পুরোপুরি ব্যর্থ। এখন আমাদের সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিততেই হবে। জয় ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। আফগানরা সম্প্রতি ভালো ক্রিকেট খেলছে। তাই জয় পেতে নিজেদের সেরাটা খেলতে হবে আমাদের। যেভাবেই হোক আমরা ঘুড়ে দাঁড়াতে চাই।’
শ্রীলংকার মত কোন চাপ নেই আফগানিস্তানের। বেশ ফুরফুরা মেজাজেই শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলতে নামছে আফগানরা। তবে এবারের এশিয়া কাপে জয় দিয়ে নিজেদের মিশন শুরু করতে চাইছে আফগানিস্তান। এমনটাই জানালেন দলের অধিনায়ক আসগর আফগান। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয়বারের মত এশিয়া কাপ খেলছি আমরা। আগের আসরে ভালো পারফরমেন্স করতে পারিনি। এবার আমাদের লক্ষ্য ভালো ফল করা। তাই জয় দিয়ে আসর শুরু করতে চাই। এ ম্যাচে জয় পেলেই শেষ চারে আগেভাগেই চলে যেতে পারবো আমরা। কারন বাংলাদেশের কাছে শ্রীলংকা নিজেদের প্রথম ম্যাচ হেরেছে। তাই এক জয়ে শেষ চারের টিকিট পেলে মন্দ হয়না।’
ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত দু’বার মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান। দু’বারই জয় পেয়েছে আফগানরা। ২০১৪ সালে ১২৯ রানে ও ২০১৫ সালের ম্যাচে ৪ উইকেটে জিতেছিলো শ্রীলংকা।
শ্রীলংকা: অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ (অধিনায়ক), কুসল পেরেরা, কুসল মেন্ডিজ, উপুল থারাঙ্গা, নিরোশান ডিকবেলা, শেহান জয়াসুরিয়া, থিসারা পেরেরা, দাসুন শানাকা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, আকিলা ধনঞ্জয়া, দিলরুয়ান পেরেরা, আমিলা আপোনসো, কাসুন রাজিথা, সুরঙ্গ লাকামাল, দুসমন্ত চামিরা, লাসিথ মালিঙ্গা।
আফগানিস্তান : আসগর আফগান (অধিনায়ক), মোহাম্মদ শাহজাদ, ইহসানুল্লাহ জানাত, জাবেদ আহমাদি, রহমত শাহ, হাশমত শহিদি, মোহাম্মদ নবী, রাশিদ খান, নজিবুল্লাহ জাদরান, মুজিব উর রহমান, আফতাব আলম, সামিউল্লাহ সিনওয়ারি, মুনির আহমেদ কাকার, সৈয়দ আহমদ শেরজাদ, শরাফুদিন আশরাফ, ওয়াফাদার।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা