২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ওপেনিংয়ে তামিমের পরিবর্তে কে?

তামিম, আহত
এক সময়ের গুরু হাথুরিসিংহের সাথে আহত তামিম। শনিবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আহত হওয়ার পর। - ছবি: এএফপি

কব্জির ইনজুরির কারণে মাঠ থেকে সোজা হাসপাতালে। এবার সেখান থেকে খবর এলো, এশিয়া কাপই আর খেলতে পারছেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান, ওপেনার তামিম ইকবাল। তার কব্জিতে ছিড় ধরা পড়েছে। যে কারণে, তার এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচগুলো খেলা আর সম্ভব হবে না। খবর ক্রিকইনফো, ক্রিকবাজ।

আঙ্গুলের ইনজুরির কারণে এমনিতেই শঙ্কায় ছিলেন তামিম ইকবাল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলতে পারবেন কি পারবেন না তা নিয়েও ছিল সংশয়। তবে শেষ পর্যন্ত তামিমকে নিয়েই মাঠে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই লিটন আর সাকিবের উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে শুরু করে বাংলাদেশ। বিপদের ওপর বিপদ হয়ে দেখা দেয় পরের ওভারেই তামিমের আহত হয়ে পড়া।

তামিমের এশিয়া কাপ শেষ হয়ে যাওয়া মাশরাফির দলের জন্য এটা বড় একটি ধাক্কা। এই ধাক্কা সামলে কতদর বাংলাদেশ এগুতে পারবে সেটাই একটি বড় দেখার বিষয়। কারণ, দলে এমন কেউ নেই যে তামিমের জায়গাটা তাকে দিয়ে পূরণ করা যাবে। যদিও তামিমের ব্যাকআপ হিসেবে শেষ মুহর্তে দেশ থেকে আরব আমিরাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মুমিনুল হককে।

এছাড়া নাজমুল হোসেন শান্ত রয়েছেন দলে। যদিও তার আঙ্গুলে ইনজুরি রয়েছে। তবে শান্তর ইনজুরি উন্নতির দিকে।

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের। তামিমের জায়গায় এদিন ওপেনিংয়ে নামবেন কে? এ প্রশ্ন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীসহ টিম ম্যানেজমেন্টদেরও।

ওপেনার সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়, ইমরুল কায়েসদের কেউই নেই এশিয়া কাপের দলে। তাই ঘুরেফিরে মুমিনুল হকের নামই আসছে। কারণ তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ব্যাক-আপ হিসাবে দলে নেয়া হয় মুমিনুল হককে। এই দুজনেরই আগে থেকেই ইনজুরিজনিত সমস্যা ছিল। সাকিব আল হাসানের হাতে আঙুলে সমস্যা। এশিয়া কাপ শেষেই তার অপারেশন করার কথা।

অনুমান করা যায় পরবর্তী ম্যাচে ওপেনিংয়ে লিটন দাসের সঙ্গী হবেন মুমিনুল হক। আবার এমনও হতে পারে যে, মোহাম্মদ মিথুনকে ওপেনিংয়ে খেলিয়ে মুমিনুল হককে লোয়ার মিডল-অর্ডারে খেলানো হতে পারে। আবার মোহাম্মদ মিথুনকে ওপেনিংয়ে এনে আরিফুল হককে লোয়ার মিডল-অর্ডারে খেলানো হতে পারে।

এশিয়া কাপে শনিবার শ্রীলঙ্কাকে ১৩৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৩ ওভারে ২৬১ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। পরে শ্রীলঙ্কা ব্যাট করতে নেমে ৩৫.২ ওভারে ১২৪ রান করে অলআউট হয়।

 

আরো পড়ুন:  তামিমকে দেখে ভাষ্যকার : ও মাই গড, আমার চোখে পানি এসে গেছে

নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশ অলআউট ২২৯...লিখতে লিখতে থেমে যেত হলো। কী ব্যাপার, মুশফিক কেন মুস্তাফিজের সাথে বেরিয়ে এলেন না? কারণটা বোঝা গেল। অবাক বিস্ময়ে সবাই আবিষ্কার করল, তামিম এক হাতে ব্যান্ডেজ বেঁধে নেমে পড়ছেন মাঠে!

এর এটা দেখে সাজিবুল নামের এক ভাষ্যকার মন্তব্য করলেন এইভাবে, ‘ও মাই গড তামিম! আমি তোমাকে ভালোবাসি! তার এই অবিশ্বাস্য সাহস দেখে সত্যিই আমার চোখ দিয়ে অশ্রু চলে এলো’। ক্রিকইনফোর লাইভ ধারাভাষ্যে লেখা হলো, ‘অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য। তামিম ইকবাল এগার নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমে হাঁটছেন। তাও মাত্র এক হাত দিয়ে? অসাধারণ দৃশ্য। তামিম ইকবালের পক্ষ থেকে অবিস্মরনীয় এক সাহসীকতার কাজ।’

শুধু ভাষ্যকার নয় দেশের প্রতি তামিমের এই দায়িত্ববোধ দেখে টেলিভিশনের সামনে থাকা অসংখ্য দর্শকদের চোখ দিয়ে অশ্রু বের হয়েছে শনিবার। তাই শ্রীলঙ্কার সাথে খেলার ফলাফল আক্ষরিক অর্থে যাই হোক এই ম্যাচটা নৈতিকভাবে বাংলাদেশ হারবে না, তা এখনই লিখে দেওয়া যায়।

ম্যাচের শুরুতেই কব্জিতে আঘাত। পরে হাসপাতালে করা হলো স্ক্যান। যেখানে দেখা গেল হাতের কব্জিতে চিড় ধরা পড়েছে। জানা গেছে এশিয়া কাপেই আর খেলতে পারবেন না তিনি। পরে টিভিতেও দেখা গেল হাতে ব্যান্ডেজ এবং গলায় সেই হাত ঝুলিয়ে রেখেছেন তিনি।

এমন পরিস্থিতিতে তামিমের মাঠে নামার কথা চিন্তা করাটাই যেন বোকামি। কিন্তু দেশপ্রেম কাকে বলে, তার চরম পরাকাষ্ট্রা প্রদর্শন করলেন তামিম ইকবাল। একে একে যখন একপাশে উইকেটের পর উইকেট পড়ছে, তখন অন্য পাশে অপরাজিত থেকে যান সেঞ্চুরি করা মুশফিকুর রহীম। এ পরিস্থিতিতে ম্যাচের ৪৭তম ওভারের ৫ম বলে আউট হয়ে যান মোস্তাফিজুর রহমান। বল তখনও বাকি ১৯টি। দলীয় রান ২২৯। এ পরিস্থিতিতে অপরাজিত থাকা তামিম ইকবাল মাঠে নামলে মুশফিকের সঙ্গে জুটি বাঁধতে পারেন।

কিন্তু তামিম তো আহত। ভাঙা হাত নিয়ে কীভাবে মাঠে নামবেন তিনি? সবাইকে অবাক করে দিয়ে মাঠে নামলেন তামিম। ভাঙা হাত। কব্জিতে ব্যান্ডেজ বাঁধা। মাঠে নেমে সুরাঙ্গা লাকমালকে এক হাত দিয়ে মোকাবেলা করেন তামিম। বডি লাইনে আসা বলটি এক হাত দিয়ে ধরা ব্যাটে মোকাবেলা করলেন। এরপর বাংলাদেশ দল আরও ১৫ বল মোকাবেলা করেছে শ্রীলঙ্কাকে। প্রতিটি বলই খেলেছেন মুশফিক। তামিমের সঙ্গে সিঙ্গেল ছিল ২টি। অর্থ্যাৎ, দুই ওভারের শেষ দুই বলে। মুশফিক গেছেন স্ট্রাইকে।

মুশফিককে সঙ্গ দিয়ে তামিম বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন আরও ৩২টি রান। অবিশ্বাস্য! সবগুলো রানই হয়তো নিয়েছেন মুশফিক। কিন্তু তামিমের অসাধারণ সাহসিকতা না থাকলে তো এটা মোটেও সম্ভব হতো না। শেষ মুহূর্তে মুশফিক হয়তো চড়াও হয়ে খেলেছেন। তামিমের সাহসের নিজের মধ্যে আরও বেশি সাহস সঞ্চার করার চেষ্টা করেছেন।

সেই সাহসে বলিয়ান হয়ে লঙ্কান বোলারদের একের পর এক পাঠিয়েছেন মাঠের বাইরে। মুশফিক চেষ্টা করেছেন তামিমের এই আত্ম নিবেদনের মূল্য রাখতে। তিনি পেরেছেন। সফল হয়েছেন। নিজের স্কোর হয়তো ব্যাক্তিগত ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। কিন্তু তামিমের সাহসিকতাই এখানে সবার কাছে মূখ্য হয়ে উঠেছে।

টুইটারে ঝড় বয়ে গেছে তামিমের এভাবে মাঠে নামা দেখে। দ্বীপ নামে একজন লিখেছেন, ‘আমি আত্মনিবেদনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ দেখতে পাচ্ছি এই মুহূর্তে।’ নোমান নামে একজন লিখলেন, ‘ও ভাই!!! এই লোককে স্যালুট জানাতে হয়। তামিম ইকবাল ইউ আর গ্রেট।’

আবু তালহা মীর নামে একজন লিখেছেন, ‘ব্যাট হাতে তামিম মাঠে হাঁটছেন...। আমি স্বপ্ন দেখছি না তো!’ আতাউর রহমান বলেন, ‘কেউ যদি বলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে কোনো দৃঢ় সংকল্প নেই, সে যেন তামিম ইকবালকে দেখে।’

অ্যাডলি নামে একজন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ দলের স্কোর যা হয় এখন, সবগুলোই তামিমের নামে লিখে দেয়া উচিৎ।’ রুশদি নামে একজন লিখেছেন, ‘এটাই হলো সাহসী আত্মা। এটাই সাহস। এটাই হচ্ছে সঠিক দেশপ্রেম। হ্যাটস অব তামিম।’

আরো পড়ুন : তামিমের এশিয়া কাপ শেষ

নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কব্জির ইনজুরির কারণে মাঠ থেকে সোজা হাসপাতালে। এবার সেখান থেকে খবর এলো, এশিয়া কাপই আর খেলতে পারছেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান, ওপেনার তামিম ইকবাল। তার কব্জিতে ছিড় ধরা পড়েছে। যে কারণে, তার এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচগুলো খেলা আর সম্ভব হবে না। ক্রিকইনফো, ক্রিকবাজ জানিয়েছে এ সংবাদ।

আঙ্গুলের ইনজুরির কারণে এমনিতেই শঙ্কায় ছিলেন তামিম ইকবাল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলতে পারবেন কি পারবেন না তা নিয়েও ছিল সংশয়। তবে শেষ পর্যন্ত তামিমকে নিয়েই মাঠে নামে বাংলাদেশ।

কিন্তু মড়ার উপর খাঁড়ার গা- বলতে যায় বোঝায় ঠিক তাই হলো। আহত আঙ্গুল বাঁচাতে গিয়েই হয়ত বাম হাতের কব্জিতে আঘাত পেলেন তিনি। ম্যাচের শুরুতেই লাসিথ মালিঙ্গার তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই লিটন আর সাকিবের উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে শুরু করে। বিপদের ওপর বিপদ হয়ে দেখা দেয় পরের ওভারেই তামিমের আহত হয়ে পড়া।

সুরঙ্গা লাকমালের ওভারের শেষ বলটি কব্জি মোচড়ে খেলতে যান তামিম। তাতেই আঘাতটা পান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তামিমকে নিয়ে যাওয়ায় মাঠের বাইরে এবং সেখান থেকে হাসপাতালে।

স্টেডিয়ামের কাছাকাছি স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে দ্রুত স্ক্যান করে দেখা হয় তামিমের কব্জির কী অবস্থা। সেখানেই দেখা গেলো, ভালো ছিড় ধরা পড়েছে। অবস্থা এতটাই নাজুক যে, চলতি এশিয়া কাপে আর খেলতেই পারবেন না তামিম। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানকে হারাল বাংলাদেশ।

মাশরাফির দলের জন্য এটা বড় একটি ধাক্কা। এই ধাক্কা সামলে কতদূর বাংলাদেশ এগুতে পারবে সেটাই একটি বড় দেখার বিষয়। কারণ, দলে এমন কেউ নেই যে তামিমের জায়গাটা তাকে দিয়ে পূরণ করা যাবে। যদিও তামিমের ব্যাকআপ হিসেবে শেষ মুহূর্তে দেশ থেকে আরব আমিরাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মুমিনুল হককে। এছাড়া নাজমুল হোসেন শান্ত রয়েছেন দলে। কে পূরণ করতে পারবেন তামিমের এই জায়গাটা?


আরো সংবাদ



premium cement