১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জয়ের জন্য এক উইকেট দরকার ভারতের

জয়ের জন্য এক উইকেট দরকার ভারতের - ছবি : সংগৃহীত

জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ভারত’। বিরাট কোহলিদের দরকার আর মাত্র একটি উইকেট। মঙ্গলবার দিনের শেষে ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১১ রান তুলেছে। জিততে তাদের দরকার এখনও ২১০ রান। যা একপ্রকার অসম্ভব। তবে নবম ও দশম উইকেটে স্টুয়ার্ট ব্রড ও জেমস অ্যান্ডারসনের সঙ্গে জুটি বেঁধে অনবদ্য ব্যাটিং করেন আদিল রশিদ। মূলত তার লড়াইয়ের জন্যই ম্যাচটি গড়ায় পঞ্চম দিনে। রশিদ ৩০ ও অ্যান্ডারসন ৮ রানে ক্রিজে আছেন।

পঞ্চম উইকেটে বেন স্টোকসকে সঙ্গে নিয়ে জস বাটলার ১৬৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুলে ‘টিম ইন্ডিয়া’র জেতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। এই জুটি ভাঙতে কালঘাম ছুটে যায় ভারতীয় বোলারদের। বিরাট কোহলির কোনো কৌশলই কাজে দিচ্ছিল না। শেষ আশা বুকে নিয়ে নতুন বলের অপেক্ষায় ছিলেন ভারত অধিনায়ক। আশি ওভারের পর কোহলি নতুন বল পেয়েই তুলে দেন বুমরাহর হাতে। ফলও মেলে তৎক্ষণাৎ। নতুন বলে দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিতে বাটলারকে এলবিডব্লু করেন বুমরাহ। আম্পায়ার আউট দেয়ার পর বাটলার রিভিউ নিলেও তা কাজে দেয়নি। ১৭৬ বলে ২১টি বাউন্ডারির সাহায্যে বাটলার ১০৬ রান করেন। আঙুলে চোট থাকায় পরে ব্যাট করতে নামেন জনি বেয়ারস্টো (০)। কিন্তু প্রথম বলেই তিনিও বুমরাহর দুরন্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন। দ্বিতীয় ইনিংসে বুমরাহর চতুর্থ শিকার ক্রিস ওকস (০)। চাপের মুখে ভেঙে পড়ে বেন স্টোকসের প্রতিরোধও। ৬২ রানে হার্দিক পান্ডিয়ার বলে তিনি লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়তেই জয়ের আগাম আনন্দে মেতে ওঠে কোহলি বাহিনী। কিন্তু নবম উইকেটে আদিল রশিদ ও স্টুয়ার্ট ব্রড ৫০ রান যোগ করে ভারতীয় বোলারদের নতুন করে ঘাম ঝরাতে বাধ্য করেন। যদিও বুমরাহর বলে রশিদ দু’রানে ক্যাচ দিয়েছিলেন স্লিপে। নো বল হওয়ায় বেঁচে যান তিনি। ব্রডকে ২০ রানে আউট করে ইনিংসে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন বুমরাহ।

তবে যশপ্রীত বুমরাহর বলেই উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্থ যদি বাটলারের ক্যাচটি ঝাঁপিয়ে ধরতে পারতেন তাহলে তৃতীয় টেস্টে ‘টিম ইন্ডিয়া’র জয়ের প্রতীক্ষা এতটা দীর্ঘায়িত হতো না। বাটলার তখন এক রানে ব্যাট করছিলেন। ২৭তম ওভারের চতুর্থ বলে বুমরাহর দুরন্ত ডেলিভারি খেলতে বাধ্য হন বাটলার। বলটি ব্যাট ছুঁয়ে প্রায় প্রথম স্লিপে যাচ্ছিল। উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্থ নিজের জায়গায় ছিলেন না। কিছুটা বাঁ-দিকে সরে গিয়েছিলেন। তাড়াহুড়ো করে ডানদিকে শরীরটা ছুঁড়ে দিলেও বলের নাগাল পাননি। ঋষভের হাতে লেগে বলটি বেরিয়ে যায়। আপসোস করতে থাকেন ক্যাপ্টেন কোহলি।

জীবন ফিরে পাওয়ার পর বাটলার দাপটের সঙ্গে ব্যাট করেন। লাঞ্চের পর পুরো একটা সেশন ভারতীয় বোলিংকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে লড়াই করেন বেন স্টোকসও। বাটলার ১৫২ বলে টেস্ট কেরিয়ারে প্রথম শতরানটি পূর্ণ করেন।

চতুর্থ দিনে ইংল্যান্ড বিনা উইকেটে ২৩ রান নিয়ে শুরু করে। দুই ওপেনার অ্যালিস্টার কুক ৯ ও কিয়েটন জেনিংস ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। তবে শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। প্রথম ওভারেই কিয়েটন জেনিংস (১৩) পেসার ইশান্ত শর্মার বলে উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্থের হাতে ধরা পড়েন। অ্যালিস্টার কুক শুরুটা ভালো করলেও তিনি ইশান্তের বলে ১৭ রানে স্লিপে লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন। জোড়া ধাক্কায় কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। অধিনায়ক জো রুট ও অলিভার পোপ কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু যশপ্রীত বুমরাহর বলে লোকেশ রাহুল স্লিপে আরও একচি দুরন্ত ক্যাচ তালুবন্দি করেন। রুট করেন ১৩ রান। অলিভার পোপের (১৬) ক্যাচ স্লিপে ঝাঁপিয়ে ধরেন বিরাট কোহলি। ইংল্যান্ডের স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৬২ রান। জয়ের কাউন্ট-ডাউন শুরু করে দিয়েছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা। কিন্তু ইংল্যান্ড যে বাটলার-স্টোকসের ব্যাটে ভর করে এভাবে লড়াইয়ে ফিরে আসবে, তা হয়তো অনেকেই ভাবেননি।

চতুর্থ দিনের স্কোর : প্রথম ইনিংসে ভারত ৩২৯
 ইংল্যান্ড ১৬১। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ৩৫২/৭ (ডিঃ)
 ইংল্যান্ড-কুক ক রাহুল বো ইশান্ত ১৭, জেনিংস ক পন্থ বো ইশান্ত ১৩, রুট ক রাহুল বো বুমরাহ ১৩, পোপ ক কোহলি বো সামি ১৬, স্টোকস ক রাহুল বো পান্ডিয়া ৬২, বাটলার এলবিডব্লু বো বুমরাহ ১০৬, বেয়ারস্টো বো বুমরাহ ০, ওকস ক পন্থ বো বুমরাহ ৪, রশিদ ব্যাটিং ৩০, ব্রড ক রাহুল বো বুমরাহ ২০, অ্যান্ডারসন ব্যাটিং ৮, অতিরিক্ত ২২, মোট ১০২ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১১।
উইকেট পতন : ২৭-১, ৩২-২, ৬২-৩, ৬২-৪, ২৩১-৫, ২৩১-৬, ২৪১-৭, ২৪১-৮, ২৯১-৯।
বোলিং : বুমরাহ ২৯-৮-৮৫-৫, ইশান্ত ২০-৪-৭০-২, অশ্বিন ২২-৮-৪০-০, সামি ১৮-৩-৭৬-১, পান্ডিয়া ১৩-৪-২২-১।


আরো সংবাদ



premium cement