২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাকিবই সিদ্ধান্ত নেবেন

ত্রিদেশীয় সিরিজের সময় আঙুলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ছেন সাকিব আল হাসান - সংগৃহীত

ত্রিদেশীয় সিরিজের সময় আঙুলে ব্যাথা পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সেই আঙুলে অস্ত্রোপচার কখন করানো হবে, এশিয়া কাপের আগে না পরে- তা নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। অবশেষে সিদ্ধান্তটি সাকিবের উপরই ছেড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, সাকিব যখন ভালো মনে করেন, তখনই হবে অস্ত্রোপচার।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ফিরে সাকিব জানান, আঙুলের অস্ত্রোপচারটা তিনি সারতে চান এশিয়া কাপের আগে।

একই দিনে সংবাদমাধ্যমকে নাজমুল হাসান জানান, তাদের চাওয়া, সাকিব অস্ত্রোপচার করান এশিয়া কাপের পর।

বর্তমানে সাকিব হজ পালন করতে সৌদি আরব গেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে ফিরেই গত রোববার রওনা হন তিনি। তবে এর আগে অস্ত্রোপচারের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

তবে মঙ্গলবার মিরপুরে বিসিবি সভাপতি জানান, বোর্ডের চাওয়া এশিয়া কাপের পরই হোক অস্ত্রোপচার। তবে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সাকিব নিজেই।

তিনি বলেন, 'যদি হাতে ব্যথা থাকে, তাহলে তো খেলতেই পারবে না। কিন্তু যদি পরে করার সুযোগ থাকে (অস্ত্রোপচার) তাহলে আমরা অবশ্যই চাইব যে জিম্বাবুয়ে সিরিজ কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সময় করলে ভালো হয় দলের জন্য। পুরোটাই নির্ভর করছে ফিজিও, ডাক্তার ও সাকিবের উপর।'

"সাকিব যাওয়ার আগে আমাকে ফোন করেছিল, জিজ্ঞেস করেছিল, কি করবে। আমি ওকে বলেছি, ‘তোমার যদি হাতে ব্যথা থাকে আর যদি মনে করো এভাবে খেললে সমস্যা হবে, তাহলে অপারেশন করে ফেল।’

''ঠিক এই কথাই বলেছি তাকে। এটাও বলেছি, ‘তুমি যদি মনে করো এশিয়া কাপে খেলা সম্ভব তাহলে এশিয়া কাপের পরে করো, দলের জন্য ভালো হবে। সিদ্ধান্ত তোমার উপর।"

বাঁ-হাতের কনিষ্ঠায় ব্যথা নিয়ে গত কিছু দিন খেলেছেন সাকিব। ব্যথা অসহনীয় হলে ম্যাচ খেলেছেন ইনজেকশন নিয়ে। এই ব্যথা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেতে অস্ত্রোপচারের বিকল্প নেই।

 

আরো পড়ুন : সাকিবকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিসিবি, অস্ট্রেলিয়ার ডাক্তারের শরণাপন্ন

সাকিব আল হাসানের বাঁহাতে পুরনো ব্যথা দূর করতে প্রয়োজন অস্ত্রোপচার। যতদ্রুত সম্ভব বাঁহাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুলে অস্ত্রোপচার করাতে চান সাকিব। গত বৃহস্পতিবার শোনা গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায় হবে সাকিবের অস্ত্রোপচার। এবার সেটির সত্যতায় বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানান, ‘সাকিবের অস্ত্রোপচারের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ডাক্তারের পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে।’

এ দিকে যখন ডাক্তার খোঁজা হচ্ছে তখন সাকিব সপরিবারে আজ রাতে হজ করতে যাচ্ছেন। গত বছর সপরিবারে ওমরা পালন করেছিলেন তিনি। এবার হজ পালন করতে রাতে সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা হবেন সাকিব। নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে সাকিব লিখেন, ‘এই পবিত্র জিলহজ মাসে, একজন অনুগত মুসলিম হিসেবে পরম করুণাময় আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় আল্লাহর ঘরে পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশে যাত্রা করতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আপনাদের সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি যেন সুস্থ ও সুন্দরভাবে পবিত্র হজ পালন করতে পারি। আমার বা আমার পরিবারের কোনো ভুলের জন্য আপনাদের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমিও আপনাদের সবার মঙ্গল এবং দেশ ও জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করব। সবার জন্য আমার তরফ থেকে ভালোবাসা রইল।’

ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে বাঁহাতের কনিষ্ঠায় আঘাত পান সাকিব। এরপর অস্ট্রেলিয়ার শৈল্যবিদ ডেভিড তাকে পর্যবেক্ষণ করেন এবং তার চিকিৎসাতেই ইনজেকশন দিয়ে প্রদাহ কমিয়ে আসছিলেন সাকিব। প্রদাহ কমাতে ইনজেকশন ব্যবহার করে কয়েক মাস ফ্রিভাবে খেলতে পারলেও সমস্যা থেকে যাচ্ছে সাকিবের। দীর্ঘমেয়াদে এ সমস্যা সারাতে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। অস্ত্রোপচার করালে দেড় থেকে দুই মাস রিহ্যাবে থাকতে হবে সাকিবকে। তাই আবার ডেভিড হয়’র শরণাপন্ন হয়েছে বিসিবি।

দলের ফিজিও থিলান চন্দ্রমোহন রয়েছেন মেলবোর্নে। সাকিবের আঙুলের রিপোর্ট নিয়ে ডেভিড হয়’র সাথে দেখা করবেন চন্দ্রমোহন। তার পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে বিসিবি। চোটগ্রস্ত আঙুলে ইনজেকশন ব্যবহার করার পক্ষে নন সাকিব। যত দ্রুত সম্ভব অস্ত্রোপচার করাতে চান। শতভাগ ফিট হয়ে মাঠে নামতে চান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সেটি হতে পারে এশিয়া কাপের আগেই। ওয়ানডে ফরম্যাটে আগামী মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে হবে এশিয়া কাপ। ফর্মে থাকা সাকিবকে না পাওয়া বাংলাদেশের জন্য হবে বড় চ্যালেঞ্জ।

যদি এশিয়া কাপের আগে অস্ত্রোপচার করান তাহলে নিশ্চিতভাবেই এশিয়া কাপ খেলা হবে না তার। এ দিকে এশিয়া কাপের পর সাকিবের অস্ত্রোপচার চাইছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বোর্ড প্রধান চাইছেন এশিয়া কাপ খেলুক সাকিব। এশিয়া কাপের পর জিম্বাবুয়ে সিরিজ বাংলাদেশের। সেটা মিস করলেও কোনো আপত্তি নেই তার। এ নিয়ে সাকিবের সাথে কথাও হয়েছে বোর্ড কর্তার। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি কেউই।


আরো সংবাদ



premium cement