২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আশরাফুলের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে দু’দিন পর

মোহাম্মদ আশরাফুল। ছবি - সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মুহাম্মদ আশরাফুলের উপর থেকে পাঁচ বছর যাবত যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল তা এই ১৩ আগস্ট শেষ হচ্ছে। আশরাফুল জাতীয় দলের হয়ে আবারো মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছেন। ২০১৬ সাল থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরলেও বন্ধ ছিল জাতীয় দল ও বিপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্টের দরজা।আগামী সোমবার থেকে সেসব নিষেধাজ্ঞাও উঠে যাচ্ছে।

আবারও জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার জন্য লড়তে চাওয়া কিংবা ফ্র্যাঞ্চাজিভিত্তিক টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারার আগ্রহটা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আশরাফুলকে।তিনি বলেন, ‘এই দিনটার জন্য আমি পাঁচ বছর ধরে অপেক্ষা করেছি।’

আশরাফুল বলেন, ‘২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট দিনটার জন্য আমি অপেক্ষায় আছি। এটা আসলে পাঁচ বছরের চেয়েও বেশি কিছু। যদিও আমি গত দুই মৌসুম ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছি। এবার জাতীয় দলের জন্য চেষ্টা করার ব্যাপারে আমার আর কোন বাধা রইল না। আবারও বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারাটা আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হবে।’

২০১৭-১৮ মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আশরাফুল দারুণ খেলেছেন। লিস্ট-এ টুর্নামেন্টে তিনি দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে পাঁচটি সেঞ্চুরি করেন। প্রথমজন হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার আলভিরো প্যাটারসন।

ঘরোয়া নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফেরার পর প্রথম মৌসুম খুব ভালো খেললনি আশরাফুল। ১৩ ম্যচে তার রানের গড় ছিল ২১ দশমিক ৮৫ করে। কিন্তু দ্বিতীয় মৌসুমে ৪৭ দশমিক ২৩ করে রান করে ভালো অবস্থান তৈরী করেছেন। আশরাফুল বলেন, আমার ফেরাটার পর ‘প্রথম মৌসুমটা খুব সুবিধাজনক হয়নি। কিন্তু পরের মৌসুমেই আমি ভালো করেছি। সামনের মৌসুমগুলোতে আরও ভালো করতে পারব বলে আশাবাদী।’

তিনি বলেন, ‘এবার আমি আমার পারফরম্যান্স দিয়ে নির্বাচকদের নজরে আসতে পারব। আমি এরই মধ্যে লম্বা সময়ের ট্রেনিং করেছি। ১৫ আগস্টের পর আসন্ন জাতীয় ক্রিকেট লিগকে সামনে রেখে অনুশীলন শুরু করব।’

২০১৪ সালের জুনে বিপিএলের এন্টি-করাপশন ট্রাইবুন্যাল আশরাফুলকে ৮ বছরের নিষেধাজ্ঞা ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে। একই বছরের সেপ্টেম্বরে বিসিবির ডিসিপ্লিনারি প্যানেল সেই নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে ৫ বছরে নিয়ে আসে।

 

 

আরো দেখুন : সবার প্রতি দায় পরিশোধের পালা : আশরাফুল
১৪ আগস্ট ২০১৬

তুষের আগুনের মতো প্রতি মুহূর্তেই জ্বলেছেন। হালকা হওয়ার জন্য কিংবা প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য যতটুকু বলতে পেরেছেন তার চেয়ে শতগুণ বেশি চাপা কষ্ট বুকে ধারণ করেছেন। অপোর পালাও শেষ। বুকের ওপর থেকে বিশাল বোঝা নেমে গেল সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক আশরাফুলের। এখন থেকে আশরাফুল আর ‘নিষিদ্ধ’ ক্রিকেটার নন। তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে তিনি মুক্ত, ফিরছেন ক্রিকেটে। আবারো ক্রিকেটে ফিরতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছেন লিটল মাস্টার আশরাফুল। গতকাল সকালে লন্ডন থেকে দেশে ফিরেন তিনি। মোবাইলের আলাপচারিতায় তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবারো ক্রিকেটে ফিরতে পেরে আনন্দিত, সেই সাথে কৃতজ্ঞ বিসিবি ও দেশের মানুষের প্রতি। আমার ভুলের কথা মাথায় আছে। এবার সবার প্রতি আমার দায় পরিশোধের পালা।’ 

২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট প্রাথমিকভাবে আট বছর নিষিদ্ধ হন ওয়ানডেতে ৩৪৬৮ ও টেস্টে ২৭৩৭ রান করা সাবেক এই অধিনায়ক। পরে এই রায়ের বিপে আপিল করলে শাস্তির মেয়াদ তিন বছর কমে পাঁচ বছরে আনা হয়। সাথে আরো একটা শর্তও জুড়ে দেয়া হয়। বিসিবি ও আইসিসির অধীনে আয়োজিত দুর্নীতিবিরোধী কর্মশালা ও ট্রেনিং প্রোগ্রামে নিয়মিত অংশ নিলে আরো দুই বছরের সাজা মওকুফ হবে। যেটির মেয়াদ শেষ হলো গতকাল। আশরাফুল ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে এবং অর্থের বিনিময়ে পাতানো খেলায় অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করে হয়েছিলেন নিন্দিত। এবার আশরাফুলের সামনে আবারো নিজেকে ফিরে পাওয়ার পরীা। সে অগ্নিপরীায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন আশরাফুল। সবার ভালোবাসা ফিরিয়ে আনতে মাঠে পারফরম্যান্সকেই যোগ্য মনে করছেন এই ব্যাটসম্যান। এখনো দেশকে অনেক কিছু দেয়ার আছে বলেও মনে করেন তিনি। ‘দেশের হয়ে আমার কিছু সেরা ইনিংস আছে। তবে আমি মনে করি আমার এখনো সেরাটা দেয়ার বাকি। আর আমি সেরাটা দিয়েই সবার মন জয় করতে চাই। আর এ জন্য মাঠে আমাকে পারফরম্যান্স করতে হবে। সবার ভালোবাসা আদায় করতে মাঠে যা করণীয় তাই করতে মুখিয়ে আছি।’

একসময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের অপরিহার্য সদস্য ছিলেন ৩২ বছর বয়সী আশরাফুল। বিশ্বের বাঘা বাঘা বোলারকে নিমিষেই মাটিতে নামিয়ে নিতে সময় নিতেন না ৬১টি টেস্ট, ১৭৭টি ওয়ানডে ও ২৩টি টি-২০ খেলা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এ দিকে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরলেও এখনই জাতীয় দলে ফেরা হচ্ছে না আশরাফুলের। জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘আমি জানি, নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও আমাকে কোনো বড় আসরে অংশ নিতে খানিক অপো করতে হবে এবং লড়াই করেই জায়গা নিতে হবে। সে মানসিক প্রস্তুতি আছে আমার। নিজেকে সেভাবেই তৈরি করছি। আমাকে লড়াই করেই জাতীয় দলে জায়গা পেতে হবে। শারীরিক ও ক্রিকেটীয় প্রস্তুতির পাশাপাশি মানসিক দৃঢ়তা বাড়ানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টাও করছি। ’

আশরাফুল জাতীয় দলের হয়ে এবং বিপিএল বা এই ধরনের ফ্রাঞ্চাইজি-ভিত্তিক টুর্নামেন্ট ও বাইরের দেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলতে পারবেন কি না তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। আইসিসিই দিকনির্দেশনা দেবে আশরাফুল কোন টুর্নামেন্ট খেলতে পারবে আর কোন টুর্নামেন্ট খেলতে পারবে না। সব কিছুর উত্তর পাওয়া যাবে আজ এমনটাই জানালেন বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন।


আরো সংবাদ



premium cement