২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আজই সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ

সাকিব
সাকিব আল হাসান - সংগৃহীত

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। আজ দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে মাশরাফি-সাকিবরা। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১২টায় ম্যাচটি শুরু হবে। তৃতীয় ম্যাচের অপেক্ষায় না থেকে সিরিজটা আগেভাগেই জিতে নিতে চায় তারা। তাই আজই সিরিজ নিশ্চিত করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ। এমনটাই জানালেন টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

তিনি বলেন, 'আমরা যখন খেলতে নামি, অবশ্যই চাই প্রতিটি ম্যাচই জিততে। কালকে (বুধবার) আরো বেশি চেষ্টা করতে হবে, কারণ আমি নিশ্চিত যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করবে। কালকে জিতে থাকতে পারলে সেন্ট কিটস নিয়ে আর টেনশনে থাকতে হবে না।'

সাকিব আরো বলেন, 'অবশ্যই চাইব যেন শেষ ম্যাচও জিততে পারি। তবে কালকের ম্যাচটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেন্ট কিটসেও এমনিতে খুব পার্থক্য হবে না। কিন্তু ওদের সুবিধা বেশি থাকবে। ভালো ব্যাটিং উইকেট হবে। রান ওখানে বেশি হবে, মাঠ ছোট। আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন এখানেই যতটা সম্ভব ভালো করতে পারি।'

তিনি আরো বলেন, 'আমরা জানি যে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গায়ানার উইকেটিই কেবল স্পিন সহায়ক। স্পিন সহায়ক না হলেও যেটা হয় তা বাংলাদেশের মতোই। এখানকার ঘাস, মাটিও দেখতে বাংলাদেশের মতোই। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক। এখানে দুটি ম্যাচ খেলেছি, দুটিতেই ফল আমাদের পক্ষে এসেছে। কালকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে। আমরা সেটি নিয়েই চিন্তা করছি।'

 

আরো পড়ুন : বুধবারের ম্যাচ নিয়ে কী ভাবছেন মাশরাফিরা

টেস্ট সিরিজে ব্যার্থ হওয়া বাংলাদেশ দলের প্রথম ওয়ানডের পারফরমেন্সে দ্বিতীয় ওয়ানডের দিকেই বুধবার নজর থাকবে। ক্যারিবিয়ান কন্ডিশনে যারা ব্যাট হাতে ছিল ব্যার্থ তারা এতটা পরিবর্তন হয় কি করে নিয়ে বেশ আলোচিতও হচ্ছে মাশরাফিদের পারফরমেন্স।

ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে বাকি দুই ওয়ানডে খেলেই দেশে ফিরবেন মাশরাফি। অন্য দুই ফরম্যাটে যেহেতু খেলেন না তিনি তাই টি-২০ সিরিজের আগে ফিরে আসছেন এ অধিনায়ক। যাওয়ার আগে বলেছিলেন, ওয়েস্টইন্ডিজে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ দিয়েই মুলত বিশ্বকাপ ২০১৯ এর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে বাংলাদেশের। এখনও ঢের বাকি। তবু মাশরাফির কথাটা বাস্তবেই পারফেক্ট।

এ সিরিজের আগেই যে কোচ নেয়া হয়েছে স্টিভ রোডসকে। তাও বিশ্বকাপের চিন্তা মাথায় রেখেই। যেহেতু ইংল্যান্ডে হচ্ছে আগামী বিশ্বকাপ ক্রিকেট। ফলে একজন ইংলিশ কোচই যথার্থ এ সময়ে। এখানে টেস্ট,টি-২০ এর প্লান বা এগিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা কিছুটা গৌণই থেকেছে। সে যা হোক, বিসিবি’র চিন্তাটাই মাশরাফি মুখে বলেছেন। প্রস্তুতিটা ভালভাবেই শুরু করেছে টিম বাংলাদেশ। হাজারো ব্যার্থতার ঝাপি মাথায় নিয়ে চলতে থাকা টিম বাংলাদেশ ওয়েস্টইন্ডিজের মাটিতে ক্রিস গেইল,এভিন লুইসদের দলকে হারানোটা ওয়ানডে শক্তির যথার্থতারই প্রমান মেলে।

ওই ম্যাচে শুধু জয়ই পায়নি টিম বাংলাদেশ। দলের প্রতিটা ডিপার্টমেন্টের শক্তিমত্বারও প্রদর্শন ছিল। যে ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তা গেছে টি-২০ ও টেস্টে। সে ব্যাটিং লাইন ৫০ ওভারের ম্যাচে কারিবিয়ান বোলারদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ২৭৯ রানের যে ইনিংসটা খেলেছে সেটা বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনের গভীরতারই বহিঃপ্রকাশ। দ্বিতীয় ম্যাচেও এমনটা থাকবে দল থেকে এটাই প্রত্যাশা। ওই ম্যাচে তামিম ও সাকিব ওয়ান ডাউনে যে পার্টণারশীপ খেলেছেন। সেটা এক কথায় দুর্দান্ত।

ওই দুই ক্রিকেটারের পরও মুশফিকু রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের মত অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের পাশাপাশি সাব্বির রহমান ও মেহেদি হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেকের মত ট্যালেন্ট ব্যাটসম্যান ছিলেন। যাদেরও সামার্থ রয়েছে বড় ইনিংস খেলার। তাদের তো মাঠেই নামতে হয়নি। ফলে ওয়ানডে ব্যাটিং লাইন নিয়ে আসলেই দুশ্চিন্তা কম। শুধু হেড কোচ স্টিভ রোডসই নন। দলের সাথে যোগ দিয়েছেন এক সময়ের দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান নেইল ম্যাকেঞ্জি। ব্যাটসম্যানদের এগিয়ে নেয়ার পেছনে তারও ভুমিকা থাকবে। বিশেষ করে ওয়েস্টইন্ডিজ,দক্ষিন আফ্রিকা,ইংল্যান্ডের মত কন্ডিশনে কিভাবে কী করতে হবে সেটা তিনি খুব ভাল বুঝাতে পারবেন।

বোলিংয়েও চমৎকার পারফরমেন্স ছিল। কোর্টনি ওয়ালশ বোলারদের সঙ্গে বেশ কিছুদিন যাবৎই আছেন। সেটার ফল পাচ্ছেন তারা। টেস্টে তিনি কী করবেন। বোলাররা যা করার করেছেণ। কিন্তু ব্যাটসম্যানরাই যখন ৪৩ রানে অল আউট হয়ে যায়। বা ১৪৪ রানে শেষ ইনিংস। তখন বোলারদের আর কী করার থাকে। ফলে ক্যারিবিয়ান কন্ডিশনে আসল পারফরমেন্সটা দেখাতেই পারেনি বোলাররা।

ওয়ানডেতে সেটা দেখিয়েছেন। মাশরাফি ছাড়াও রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজরা ভালই ভুগিয়েছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের। বিশেষ করে ক্রিস গেইল, এভিন লুইসের মত ব্যাটসম্যানরা সেভাবে খেলতে পারেননি। ব্যাট হাতে ক্রিজ আঁকড়িয়ে থাকতে হয়েছে। গেইল ৪০ করেছিলেন ৬০ বলে।এটা তো তার স্বভাবের বাইরে যেয়েই খেলেছিলেন। ফলে বোলারদের পারফরমেন্সের প্রশংসা করতেই হচ্ছে। সব মিলিয়ে খেলাটাতে বাংলাদেশ দল তাদের সম্মিলিত শক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পেরেছিলেন। আপাতত এটাই স্বস্থির। বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সুচনায়। এবং নতুন দুই কোচেরও সূচনাতে ক্যারিবিয়ান কন্ডিশনেও বাংলাদেশের যে সামর্থ সেটা দেখিয়ে দেয়ায় অ্যাডভান্সে থেকেই দলকে এগিয়ে নিতে পারবেন তারা।

এখনও বাকি দুই ম্যাচ। যার দ্বিতীয়টি বুধবার দিবাগত রাতে বা মধ্যরাতে। সেখানেও অনেক কিছু ইনপ্রুভের ব্যাপার রয়েছে। জয় তো অবশ্যই। একই সঙ্গে প্রতিটা ডিপার্টমেন্টের উন্নতিটাও প্রয়োজন। ওয়েস্টইন্ডিজ প্রথম ম্যাচে ব্যার্থ হওয়ার পর অবশ্যই বাংলাদেশ দলকে নিয়েও তারা প্রচুর হোম ওয়ার্ক করবে। কারন নিজের মাটিতে তো আর সিরিজে হারবে না তারা। ক্রিস গেইলরা এ লজ্জা থেকে মুক্ত থাকার জন্য আপ্রান লড়ে যাবেন এটা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। ফলে বাংলাদেশ পরের ম্যাচে আরো সতর্ক থেকেই খেলবে এবং নিজেদের লক্ষ্যমাত্রায় এগিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।


আরো সংবাদ



premium cement