২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এ কী হাল সাকিবদের!

এ কী হাল সাকিবদের! - ছবি : সংগৃহীত

ভয়াবহ অবস্থায় পড়েছে সাকিব আল হাসানের বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তাদের দুঃসময় কাটছেই না। প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতার রেশ দ্বিতীয় ইনিংসেও দেখা গেছে। তবে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনই মনে হচ্ছে, তারা ইনিংস পরাজয়ের দিকে যাচ্ছে।

সকালে না হলেও দুপুর পেরোবে না, সেটা একপ্রকার নিশ্চিত। অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটে এই নিশ্চয়তা দেয়ার সুযোগ মিলছে বাংলাদেশ দলের বিভীষিকাময় ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে। প্রথম ইনিংস ৪৩ রানেই শেষ। জবাবে উইন্ডিজের সংগ্রহ ৪০৬ রান। তাতেই ৩৬৩ রানের লিড। ইনিংস হার এড়াতে তুলতে এই রান। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসেও একই পথে বাংলাদেশ। ৬২ রানেই নেই ছয় উইকেট।

বাকি থাকা চার উইকেটের মধ্যে ব্যাটসম্যান দুজন; মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নুরুল হাসান সোহান। এই দুজন অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন। তাতে অবশ্য আশার পালে হাওয়া লাগার কোনো সম্ভাবনা নেই। একবার আউট হয়েও নো বলের কল্যাণে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়ার সুযোগ পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। এছাড়া উইন্ডিজ পেসারদের সামনে আগের কয়েক ব্যাটসম্যানের অসহায় আত্মসমর্পণ বলে দেয় মাহমুদউল্লাহ ও নুরুল হাসানের পথচলা দীর্ঘ হবে না।

সাকিব আল হাসানের দলের নতুন আশা হতে পারে ১০০ রানের ‘মাইলফলক’ ছোঁয়া। অবশ্য এই মাইলফলক ছুঁতেও আরও ৩৮ রান দরকার। সংখ্যাটা বড় না হলেও বাংলাদেশের জন্য এই রান তোলা এখন রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষার সামিল। যে পরীক্ষায় পাস করতে তাদেরকে পেরোতে হবে শ্যানন গ্রাব্রিয়েল, জেসন হোল্ডার, কেমার রোচদের বাধা।

তাই ৬২ তেও স্বস্তি মিলতে পারে বাংলাদেশের। অন্তত এটা বলে সান্ত্বনা দেয়া যাচ্ছে যে, এবার তো ৪৩ পেরোনো গেছে! যদিও ৫০ রানের নিচেই আরো একবার অলআউট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ১২ ও মাহমুদউল্লাহর অপরাজিত ১৫ রানের সুবাদে সেটা হয়নি।

ইনিংস ব্যবধানে হার মেনে নেয়ার এই অপেক্ষা দ্বিতীয় দিনেই ফুরোতে পারত বাংলাদেশের। কিন্তু অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের বেশিরভাগ সময় নিয়ে নিয়েছিল উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশ ১৮ ওভার ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছে। যে ১৮ ওভারে ৬২ রান তুলতেই একে একে ফিরে গেছেন তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। আর কয়েকটি ওভার থাকলেই হয়তো খেল খতম হয়ে যেত।

প্রথম ইনিংসে ক্যারিবীয় পেসার কেমার রোচের ঝড়ের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশ। শুরুর পাঁচ উইকেট চোখের পলকে তুলে নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস ছত্রখান করে দিয়েছিলেন রোচ। দ্বিতীয় ইনিংসে রোচ বোলিং-ই করলেন না। কিন্তু শ্যানন গ্রাব্রিয়েলের আগুনেই পুড়ে ভস্ম বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। বাংলাদেশের যাওয়া ছয় উইকেটের চারটিই গেছে গ্যাব্রিয়েলের ঝুলিতে। বাকি দুটি উইকেট নিয়েছেন উইন্ডিজ অধিনায়ক হোল্ডার।

৪৩ রানে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার পর অনেকেই ওটাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে ধরে নিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম, লিটন, মুমিনুলরা প্রমাণ করেছেন, উইন্ডিজের পেসারদের বিপক্ষে তারা আসলেই অসহায়। দলীয় ১৪ রানেই তামিমকে বিদায় করেন গ্যাব্রিয়েল। একই ওভারে স্টাম্প উপড়ে মুমিনুলকেও সাজঘর চেনান ডানহাতি এই ক্যারিবীয় পেসার।

১৬ রানের মাথায় হোল্ডারের বলে লিটন পরাস্থ। তিন উইকেট হারিয়ে দিকাহারা হয়ে ওঠা বাংলাদেশকে পথ দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন মুশফিক ও সাকিব। কিন্তু তাদের চেষ্টা বেশি পথ পাড়ি দেয়নি। গ্যাব্রিয়েলের বিষে নীল হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মুশফিক, সাকিবকে। এরপর মিরাজও টিকতে পারেননি। হোল্ডারের বলে উইকেটরক্ষক শেন ডউরিচের হাতে ক্যাচ দিয়ে থামেন তিনি।

প্রথম ইনিংসে ৪৩ রান করে অনেক বিব্রতকর রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং বাংলাদেশকে আরও বিব্রতকর রেকর্ডের পথে নিয়ে যাচ্ছে। কোনো ইনিংসই ১০০ পেরোয়নি, বাংলাদেশের রেকর্ডে এমন টেস্ট নেই। এবার সেই পথেই এগোচ্ছেন সাকিব, তামিম, মুশফিকরা।


আরো সংবাদ



premium cement