২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আফ্রিদি ক্যালিসের পাশে সাকিব

নতুন উচ্চতায় সাকিব আল হাসান - ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনন্য এক রেকর্ড স্পর্শ করলেন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৩০২ ম্যাচে ব্যাট হাতে অন্তত ১০ হাজার রান এবং বল হাতে অন্তত ৫শ’ উইকেট শিকারের নজির গড়লেন অলরাউন্ডার সাকিব। তার মত এমন অর্জন এর আগে স্পর্শ করেছেন বিশ্বের দুই অলরাউন্ডার দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস ও পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি।

ক্যালিস ও আফ্রিদির মত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অন্তত ১০হাজার ও ৫শ’ উইকেট শিকার করে তাদের পাশে বসেন সাকিব। তবে তাদেরকে ছাড়িয়ে বিশ্বরেকর্ডই গড়লেন তিনি। কারণ ক্যালিস ও আফ্রিদির যেখানে লেগেছে ৫শ’র বেশি ম্যাচ, সেখানে সাকিবের লাগলো ৩০১তম ম্যাচ।

দেরাদুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ টি-২০ ম্যাচে ১৬ রানে ১ উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৫শ’ উইকেট শিকার করেন সাকিব। অবশ্য ব্যাট হাতে আগেই ১০হাজার রান পূর্ণ করেছেন তিনি।

টেস্টে ৩৫৯৪, ওয়ানডেতে ৫২৪৩ ও টি-২০তে ১২৬৫  রান করেন সাকিব। বল হাতে টেস্টে ১৮৮, ওয়ানডেতে ২৩৫ ও টি-২০তে ৭৭ উইকেট শিকার করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব।

হোয়াইটওয়াশ নিয়ে যা বললেন সাকিব

আফগানিস্তানের সাথে সান্ত্বনার জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নেমেও পারল না বাংলাদেশ। হোয়াইটওয়াশ লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো তাদের। পুরো সিরিজ জুড়েই বাংলাদেশ তেমন চোখে পড়ার মতো পারফরম্যান্স করেছে খুবই কম। তাই তো ম্যাচ শেষে অধিনায়কের কথায় ফুটে উঠলো হতাশা।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আগের দুই ম্যাচের চেয়ে আমরা ভালো খেলেছি। তবে সিরিজটা আমরা যেভাবে খেলেছি, অবশ্যই খুবই হতাশার। আরও ভালো পরিকল্পনা নিয়ে নামতে হবে আমাদের।’

গতকালের ম্যাচ নিয়ে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘তাদেরকে অল্প রানে আটকে রাখতে পেরেছিলাম। বিশ্বাস ছিল, এই রান তাড়া করার মতো ব্যাটিং আমাদের আছে। দূর্ভাগ্যজনক ভাবে পারিনি। আজকে অনেক কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু মাঝের কিছু ওভারে মাত্র ৩-৪ রান করে হয়েছে। এটার মূল্য দিতে হয়েছে।’

মিডল অর্ডারে মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং অবশ্য প্রশংসা পেয়েছে অধিনায়কের। তিনি বলেন, ‘মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক ভালো খেলেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেষ করতে পারেনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমনটি হতেই পারে। ’

কন্ডিশন নিয়েও সন্তুষ্টু ছিলেন না বাংলাদেশ দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। দেরাদুনের কন্ডিশন বাংলাদেশের মতো নয় যেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিলো বলে মনে করেন। আর উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আফগান স্পিনারা যে সুবিধা নিয়েছে সেটিকে কৃতিত্ব দিতেও ভুল করলেন না। আর সবগুলো সেক্টরের উন্নতির তাগিদ অনুভব করছেন বলেই জানালেন।

দারুণ লড়াইয়ের পরও হোয়াইটওয়াশ লজ্জা

দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেও তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ১ রানে পরাজিত হয়ে হোয়াটওয়াশ হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বৃহস্পতিবার ভারতের দেরাদুনে শেষ ম্যাচে আফগানদের দেয়া ১৪৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৪৪ রানে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। এর ফলে ক্রিকেটের নতুন উদীয়মান শক্তি আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ লজ্জা বরণ করতে হলো বাংলাদেশকে।

রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে বাংলাদেশ। দলীয় ১৬ রানে ওপেনার তামিম ইকবাল ফিরে যাওয়ার পর ৩২ ‍ও ৩৫ রানে রান আউটের শিকার হন সৌম্য সরকার ও লিটন দাস। এর কিছুক্ষণ পর ফিরে যান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। দলীয় রান তখন ৫৩।

এরপর মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের পঞ্চম উইকেটের জুটি লড়াইয়ে ফেরায় বাংলাদেশকে। দুজনে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকেন। মুশফিক কিছুটা ধীর গতিতে ব্যাটিং করলেও মাহমুদুল্লাহর ব্যাট ছিলো চড়াও। তবে রশিদ খানের করা ১৮তম ওভারে মাত্র ৩ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। এখানে পিছিয়ে যায় টাইগার বাহিনী।

শেষ দুই ওভারে দরকার ছিলো ৩০ রান। করিম জানাতের করা ১৯তম ওভারে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন 
মুশফিক। টানা ৫টি বাউন্ডারি আদায় করে নেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। শেষ বলে একটি সিঙ্গেল নিয়ে ওই ওভার থেকে আসে ২১ রান। ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ। 

শেষ ওভারে দরকার ছিলো ৯ রান। বল করতে আসে আফগানিস্তানের সেরা বোলার লেগ স্পিনার রশিদ খান। রশিদের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান মুশফিক। ৩৭ বলে ৪৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটি শেষ হয় ডিপ স্কয়ার লেগে নাজিবুল্লাহ জাদরানের ক্যাচে।

৫ বলে দরকার ৮ রান। মাহমুদুল্লাহ এক রান নেয়ার পর নতুন ব্যাটসম্যান আরিফুল পরের বলে নেন দুই রান। এর পরের বলে আরেকটি সিঙ্গেল নিলে সমীকরণ দাড়ায় ২ বলে ৫ রানের। পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নেন মাহমুদুল্লাহ। শেষ বলে দরকার চার। আরিফুলের উচু করে মারা শট বাউন্ডারি দারুণ ফিল্ডিং করে ম্যাচ বাঁচান আফগান ফিল্ডার শফিক। দৌড়ে দুই রান নেন ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশ হারে এক রানে। 

৩৮ বলে ৪৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে এক উইকেট নেয়া রশিদ খান এই ম্যাচেও আফগানদের জয়ের নায়ক।


আরো সংবাদ



premium cement