২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লর্ডস টেস্টে দাপুটে জয় পাকিস্তানের

লর্ডস টেস্টে পাকিস্তানকে জয় এনে দিয়েছেন মোহাম্মদ আমির ও মোহাম্মাদ আব্বাস(ছবি :এএফপি) - এএফপি

ব্যাটসম্যান-বোলারাদের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট ৯ উইকেটে জিতলো সফরকারী পাকিস্তান। এই জয়ে দু’ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সরফরাজ আহমেদের দল।

লর্ডসে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৭৯ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিন নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ইংল্যান্ড। উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা ও অধিনায়ক জো রুটের ৬৮ রানের পর মিডল-অর্ডার দুই উইকেটরক্ষক জশ বাটলার ও অভিষেক ম্যাচ খেলতে ডোমিনিক বেসের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ২৩৫ রান তুলে দিনের খেলা শেষ করে ইংলিশরা। ফলে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৫৬ রানের লিড নেয় ইংল্যান্ড।

চতুর্থ দিন লিড আরও বড় করার লক্ষ্য ছিলো ইংলিশদের। কিন্তু প্রতিপক্ষের লালিত স্বপ্ন চুরমার করে দেন পাকিস্তানের দুই পেসার মোহাম্মদ আমির ও মোহাম্মদ আব্বাস। পাল্টা প্রতিরোধ গড়া দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে ফেরান দুজনে। ৬৬ রান নিয়ে দিন শুরু বাটলারকে ৬৭ রানেই সাজ ঘরে পাঠান আব্বাস। বাটলারের মত নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি আগের দিন ৫৫ রানে শেষ করা বেস। ৫৭ রান করে আমিরের বলে বোল্ড হন তিনি। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন বেস।

বাটলার-বেসের পর বাকী দু’ব্যাটসম্যান খুব দ্রুতই আউট হলে ২৪২ রানেই গুটিয়ে যায় প্রথম ইনিংসে ১৮৪ রান করা ইংল্যান্ড। পাকিস্তানের আমির ও আব্বাস ৪টি করে উইকেট নেন। দুটি ‍উইকেট নেন লেগ স্পিনার শাদাব খান। আব্বাস প্রথম ইনিংসেও চার উইকেট নিয়েছিলেন।
জয়ের জন্য মাত্র ৬৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় পাকিস্তান। ৪ রান করে ইংলিশ পেসার জেমস অ্যান্ডারসনের শিকার হন ওপেনার আজহার আলী। এরপর অবিচ্ছিন্ন ৫৪ রানের জুটি গড়ে চতুর্থ দিনেই দলকে জয়ের স্বাদ দেন আরেক ওপেনার ইমাম-উল-হক ও হারিস সোহেল। ইমাম ১৮ ও হারিস ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন। আগামী ১ জুন লিডসে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ১৮৪ ও ২৪২, ৮২.১ ওভার (রুট ৬৮, বাটলার ৬৭, আমির ৪/৩৬)।
পাকিস্তান : ৩৬৩ ও ৬৬/১, ১২.৪ ওভার (সোহেল ৩৯*, ইমাম ১৮*, এন্ডারসন ১/১২)।
ফল : পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মোহাম্মাদ আব্বাস

সিরিজ : দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল পাকিস্তান।

আরো পড়ুন: 

ভারত-শ্রীলঙ্কা গল টেস্ট পাতানো ছিল : বোমা ফাটালো আলজাজিরা
হিন্দুস্থান টাইমস ও আলজাজিরা
গত বছর শ্রীলঙ্কার মাটিতে অনুষ্ঠিত অন্তত দুটি টেস্ট ম্যাচ পাতানো ছিলো বলে প্রমাণ পেয়েছে আল জাজিরা। কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেলটি জানিয়েছে, এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত প্রমাণ পেয়েছে তারা। ‍ওই ম্যাচ দুটি ছিলো গত বছর জুলাইয়ের ভারত-শ্রীলঙ্কা গল টেস্ট, যে ম্যাচে ৩০৪ রানে জিতেছিলো ভারত ও তার আগের বছরের একই মাঠে অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট।

দুটি ম্যাচেই প্রভাব ছিলো বাজিকরদের। তার চেয়েও আশ্চর্য কথা হচ্ছে, আগামী নভেম্বরে এই গলের মাঠেই গড়াতে যাওয়া ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা টেস্টও নাকি পাতানোর সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে!

আল-জাজিরার একটি গোপন তদন্তে ধরা পড়েছে ম্যাচ-পাতানোর সঙ্গে জড়িতরা। জুয়াড়িদের কাছ থেকে জানা গেছে, ম্যাচের আগেই তারা মাঠকর্মীদের ঘুষ দিয়ে পিচ বানিয়ে নিয়েছিল নিজেদের চাহিদা মতো। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে বানানো হয়েছিল ব্যাটিং পিচ, অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জিতে নেওয়া ম্যাচে উইকেট ছিল বোলিং বান্ধব।

আর এই দুটি ম্যাচ পাতানোর নেপথ্য নায়ক মুম্বাইয়ের জুড়ারি রবিন মরিস। দ্য অস্ট্রেলিয়ান পত্রিকার এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের সাবেক প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার রবিন বরিসের ওপর নজরদারির জন্য আলজাজিরা গোপন ক্যামেরা ব্যবহার করেছ। রবিনের সাথে দুবাইয়ে বসবাসকারী ভারতীয় ব্যবসায় গৌরব রাজকুমার ও গল স্টেডিয়ামের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার থারাঙ্গার আলোচনা ধরা পড়েছে গোপন ক্যামেরায়।

আল জাজিরা জানিয়েছে, এই রবিনই সব পরিকল্পনার মূল হোতা। গল মাঠের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা সহকারী ব্যবস্থাপক থারাঙ্গা ইন্দিকার কাছে আলজাজিরা রিপোর্টারের প্রশ্ন ছিল, চাইলেই কি তারা পিচ বানাতে পারে ইচ্ছামতো! ইন্দিকার উত্তরটা ছিল ‘হ্যাঁ, আপনি যেভাবে চান সেভাবেই পিচ বানানো সম্ভব’।

এ বিষয়ে বিস্তারিত উঠে এসেছে আল জাজিরার একটি অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্রে। আগামীকাল রোববার প্রামাণ্য চিত্রটি প্রচার করবে আল জাজিরা বিকেল চারটায়। তাই এখন পর্যন্ত তাদের দাবির পক্ষে বিস্তারিত জানা যায়নি। আগামীকাল অনুষ্ঠানটির দিকে তাই চোখ থাকবে ক্রিকেট বিশ্বের। ‘ক্রিকেট’স ম্যাচ ফিক্সারস’ নামের একটি তথ্যচিত্রটি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে দর্শকরা চাইলে অনলাইনেও দেখতে পারবেন।

অবাক করা বিষয় এই বাজিকর গোপনে তদন্ত চালিয়ে যাওয়া আল-জাজিরা প্রতিবেদককেও দিয়েছে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব! শুধু তাই নয়, যদি প্রতিবেদকের দল জিতে যায় তবে তাঁকে দেওয়া হবে বাজির মোট অর্থের ৩০ শতাংশ! রবিনই আসছে নভেম্বরের ফিক্সিং নিয়ে তথ্য দিয়েছে আল-জাজিরা সংবাদদাতাকে।

এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরই তোলপাড় শুরু হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যেই ওই দুটি ম্যাচ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। আইসিসি তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, একটি সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসা ফিক্সিং অভিযোগ আমরা গুরুত্বের সাথে নিচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement