২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যা করে পলিয়েছে ঘাতক স্বামী

শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যা করে পলিয়েছে ঘাতক স্বামী - নয়া দিগন্ত

রাজধানী লাগোয়া শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় শ্বাসরোধে নারী পোশাক শ্রমিক স্ত্রী সাথী(২৬) কে হত্যার পর ঘাতক স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান লিমন(৩৫) পালিয়ে গেছে। ঘটনায় লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টায় আশুলিয়ার তাঁজপুর রংপুর মার্কেট এলাকার সামসুল হকের নির্মিত ভবনের নিচ তলার ফ্লাটের একটি কক্ষ হতে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত সাথী রংপুর পীরগঞ্জ থানার পার্বতীপুর এলাকার ওয়াজেদ মন্ডলের মেয়ে। সে আশুলিয়ার তাঁজপুর রংপুর মার্কেটের সামসুল হকের মালিকানাধীন ভবনের নিচতলার ফ্লাটের একটি কক্ষে সাবলেট নিয়ে থাকতেন। সে ধনাইদ ইউসুফ মার্কেট এলাকার জেনারেশন নেক্সট নামে একটি পোশাক কারখানার সুইং অপারেটর হিসেবে চাকুরি করতো। লিরা আক্তার সৃষ্টি(৭) নামে তার একমাত্র কণ্যা সন্তান রয়েছে।

ঘাতক স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান লিমন রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানাধীন তুলারামপুর এলাকার বাসিন্দা। সে রাজধানী শ্যামলী কাজি অফিস এলাকার আশা নামে একটি রিক্সা গ্যারেজের ম্যানেজার। সেখানেই সে বসবাস করে।

এ ব্যাপারে ঘাতক লিমনের ভাই পোশাক কর্মী সাকিব জানান, তার বড় ভাই লিমন রাজধানীর শ্যামলী কাজি অফিস এলাকার আশা নামে একটি রিক্সা গ্যারেজের ম্যানেজার হিসেবে চাকুরি করে। মাসে দু’একবার তার ভাবীর বাসায় আসে। তারা একই ফ্লাটের ৩টি কক্ষে স্বজনরা থাকেন। একটি কক্ষে তিনি ও আরেকটি কক্ষে ভাবীর বোন ও তার জামাই জয়নাল আবেদীন থাকেন। অপর কক্ষে ভাবী সাথী তার শিশু কণ্যা কে নিয়ে থাকতেন। গত ৩দিন আগে তার বড় ভাই লিমন ওই বাসায় আসে। শুক্রবার সাথীর পোশাক কারখনা বন্ধ ছিল। তবে সে পার্শ্ববর্তী সিগমা লিঃ নামে পোশাক কারখানায় ডিউটিরত ছিলেন। দুপুর সোয়া ১২টায় তিনি খবর পেয়ে এসে দেখেন তার ভাবী সাথী মৃত্যু অবস্থায় খাটের ওপরে পরে রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, তার ভাই ৩/৪টা বিয়ে করেছেন। সে তাস ও জুয়া খেলায় অভ্যস্ত। প্রায়ই সে তার ভাবীর কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে যেত। এ নিয়ে দু’নের মধ্যে বিরোধ থাকতে পারে।

নিহতের ৭ বছরের কন্যা সৃষ্টি জানান, দুপুরে পাশের কক্ষের খালার মেয়ের সাথে খেলা করছিলেন। এক ফাঁকে সে তাদের রুমে এসে দেখেন ভিতর থেকে দরজা বন্ধ। এসময় মা মা করে ডাকাডাকি করার একপর্যায় তার বাবা লিমন জানান, একটু পরে এসো। এর কিছুক্ষণ পর আবার রুমে গিয়ে দেখতে পান দরজা খোলা এবং তার মা চাদর মুড়ি দেয়া। তার বাবা রুমে নেই। চাদর সরিয়ে মাকে ডাকাডাকি করার পরও যখন সাড়া মেলে না তখন খালা ও খালুর কাছে বিষয়টি বলেন। তারা গিয়ে তাকে মৃত্যু অবস্থায় দেখতে পান। তার গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন রয়েছে। এ অবস্থায় বিষয়টি বাড়ির মালিকসহ প্রতিবেশিদের জানালে তারা থানা পুলিশকে অবহিত করেন। ঘটনায় লিমন পালিয়ে যায় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে থানার উপপরিদর্শক আজহার জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মৃত্যু দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে এবং নিহতের পরিবারের পক্ষ হতে বাদি হয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।


আরো সংবাদ



premium cement