২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ফেনী নদীর উৎপত্তি নিয়ে বিভ্রান্তি!

বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করুন

-

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সূত্রে বাংলাদেশের ফেনী নদীর নাম এখন ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। কারণ এই সফরকালে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যবর্তী সীমান্তের ফেনী নদী থেকে ভারত পানি প্রত্যাহার করে নিতে পারবে। বাংলাদেশের জন্য জরুরি হলেও তিস্তার মতো বড় নদীর পানি পাওয়ার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। যা হোক, ফেনী নদীকে সীমান্তের ‘আন্তর্জাতিক অভিন্ন নদী’ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এর উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশেই বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে প্রতিবেশী দেশটি ‘অসত্য বক্তব্য’ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
নয়া দিগন্ত’র একটি প্রতিবেদনের শিরোনামÑ ‘ফেনী নদীর উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ হলেও অসত্য বক্তব্য ভারতের’। এতে ফেনী নদীর পাশের এলাকা, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে পত্রিকাটির প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ‘ফেনী নদীর উৎপত্তি বাংলাদেশে। ভারত অযথা নদীটির উৎপত্তিস্থল তাদের দেশে বলে দাবি করছে। দীর্ঘ সময় ধরে নদীর মিরসরাইয়ের মুহুরী প্রকল্প থেকে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার আচালং এলাকার ভগবানটিলা পর্যন্ত অনুসন্ধান করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বলা হতো, ফেনী নদী আন্তর্জাতিক। বাংলাদেশ ও ভারতকে বিভক্তকারী এই নদীর উৎপত্তি ত্রিপুরা রাজ্যে। অথচ অনুসন্ধানে প্রমাণিত, এটি বাংলাদেশের সম্পদ। এর উৎপত্তি মাটিরাঙ্গার ভগবানটিলায়। নদীর ১০৮ কিলোমিটারের কোনো অংশ ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেনি।’ প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয় যে, ‘সরেজমিন দেখা যায়, মিরসরাইয়ের আমলীঘাট সীমান্তে পাইপ বসিয়ে ভারতের উপেন্দ্রনগরের জন্য পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। রামগড়ের অদূরে সাব্রুম শহরের পানির সঙ্কট মেটাতে ১৭টি পাইপ বসিয়ে পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে অনবরত।’ ফেনী নদীর বিভিন্ন স্থানে ৩৪টি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মেশিন দিয়ে পানি নিচ্ছে ভারত। এ ছাড়া, আচালং মৌজায় এক হাজার ৭০০ একর জমি ভারত বেদখল করে রেখেছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। বাংলাদেশের একমাত্র নদী গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ফেনী নদী সম্পর্কে আশানুরূপ তথ্য না থাকার অভিযোগের পাশাপাশি বলা হয়েছে, বাংলাপিডিয়া ও উইকিপিডিয়াসহ একাধিক মানচিত্রগ্রন্থে এ নদী সম্পর্কে রয়েছে ভুল তথ্য। এর দূরত্ব নিয়েও গরমিল আছে এগুলোতে। উল্লিখিত প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, বাংলাদেশের বহু উপনদী, খাল-ছড়া ফেনী নদীতে এসে মিশেছে। এ ক্ষেত্রে ভারত পিছিয়ে আছে। এ নদীর পানির অ বেশির ভাগ উৎস বাংলাদেশে। অথচ আচালং থেকে আমলীঘাট পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটারের কোথাও বাংলাদেশীরা এ নদীর পানি ব্যবহার করতে পারছে না। ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ আখ্যা দিয়ে বিএসএফ তটস্থ করে রেখেছে আমাদের সীমান্তরক্ষী থেকে শুরু করে সাধারণ বাসিন্দাদের। খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম বলেছেন, ‘ফেনী নদীর উৎপত্তি এ দেশেই। মাটিরাঙ্গা সদর থেকে ৫৫ কিলোমিটার পূর্বে আচালং তাইন্দং এলাকার কাছাকাছি থেকে এ নদীর যাত্রা শুরু।’
ফেনী নদীর পানিবণ্টন নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘ দিনের। এবার প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরকালে ভারত কর্তৃক ফেনী নদী থেকে পানি প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সম্মত হওয়ার কথা প্রচার করা হয়েছে। এরপর মিডিয়ায় একবার জানানো হলো, কখন কী পরিমাণ পানি ভারত নেবে, তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি; আরেকবার বলা হয়েছে, ফেনী নদীর যে পরিমাণ পানি প্রত্যাহার করে নেবে পড়শি দেশ, তা ‘সামান্য’। এসব খবরে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে, যা ফেনী নদীর পানি নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সুরাহা করার অনুকূল নয়। বরং সংশ্লিষ্ট সবাই বাস্তবভিত্তিক, সুনির্দিষ্ট তথ্যের নিরিখে এবং আন্তর্জাতিক আইনকানুন ও রীতিনীতি, সেই সাথে সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণকে গুরুত্ব দিয়ে মতামত দেয়াই দায়িত্ব।
আমাদের প্রত্যাশা, ফেনী নদীসহ সংশ্লিষ্ট সব নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বাংলাদেশ যেন বঞ্চিত না হয়, সরকার তা অবিলম্বে নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।


আরো সংবাদ



premium cement
মৃত মায়ের গর্ভে জন্ম নিলো নতুন প্রাণ দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে কেউ মারা যায়নি : পুলিশ সুপার হামাসকে কাতার ছাড়তে হবে না, বিশ্বাস এরদোগানের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১০ দেশের অংশগ্রহণে সামরিক মহড়া শুরু করল আরব আমিরাত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা? কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ উদ্ধার

সকল