২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চীনের উহান থেকে ভারতীয়দের সাথে ২৩ বাংলাদেশীও দিল্লিতে

করোনাভাইরাস
-

করোনা সংক্রমণে সুস্থ হওয়ার পর আবারো আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। চীনে এমন ঘটনা ঘটছে। করোনাভাইরাসের উৎস চীন থেকে ও চীনের বাইরের দেশগুলোতে করোনা আক্রান্তের মোট সংখ্যা বেড়ে গেছে। এ দিকে বাংলাদেশের পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এমপি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন বলে সারাদিন রাজধানীতে মানুষের মুখে মুখে ছিল খবরটি। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আছেন। তবে এ ব্যাপারে আইইডিসিআরের পরিচালক খবরটি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানান, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হননি। তিনি ফ্ল্ ুধরনের নিয়মিত ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই ভাইরাসটির নাম ‘২২৯-ই’। এটা সাধারণ সর্দি-জ্বর করে থাকে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি চীনে নতুন করে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪১১ জন এবং চীনের বাইরে বিভিন্ন দেশে একই করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪২৭ জন। এককভাবে চীনেই বেশি হলেও চীনের বাইরে দিন দিন করোনা আক্রান্তের হার বেড়ে যাচ্ছে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
এ দিকে চীনের হোবেই প্রদেশের উহান থেকে ভারতীয় ৭৬ নাগরিকদের সাথে ২৩ বাংলাদেশী নাগরিককে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে এবং ভারতীয়দের সাথে বাংলাদেশীদের দিল্লির কাছে একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন (কোয়ারেন্টাইন) করে রেখেছে। ভারতীয় ও বাংলাদেশী নাগরিকদের সাথে আরো কয়েকটি দেশের ৩৬ জন নাগরিককেও দিল্লিতে নিয়ে এসেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) থেকে জানানো হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া আইইডিসিআরকে একটি পিসিআর মেশিন এবং ৫০টি করোনাভাইরাস টেস্ট কিট দিয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ্জ্জুামান খান বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করছেন। গতকালই দক্ষিণ কোরিয়া কোম্পানির প্রতিনিধিরা যন্ত্রটি আইইডিসিআরে স্থাপন করেন ও সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের যন্ত্রটি ব্যবহারের নিয়ম-কানুন বুঝিয়ে দেন।
আইইডিসিআর জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার বাংলাদেশস্থ দূতাবাসের উপ-প্রধান সিওল স্যাং কিম আইইডিসিআরে আসেন। তিনি কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে বাংলাদেশের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশস্থ কোরীয় নাগরিকদের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের অতিথি পরায়ন ভূমিকার জন্যও তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। দক্ষিণ কোরিয়াতে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় তিনি বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। দক্ষিণ কোরিয়াতে অবস্থানরত বাংলাদেশের নাগরিকদের কেউ এখনো কোভিড-১৯ আক্রান্ত হননি এবং সেখানকার বাংলাদেশীদের প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া সরকার বিশেষ যতœবান রয়েছে বলেও তিনি জানান। গতকাল আইইডিসিআরে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পরিচালক জানান, বাংলাদেশে গতকাল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। বিদেশ আগতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা অব্যাহত রয়েছে।
ডেইলি মেইল জানিয়েছে, চীনের গোয়াংডং প্রদেশের ১৪ শতাংশ কোভিড-১৯ আক্রান্ত নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে। অন্য কথায় প্রতি ১০ জনের একজন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে।
গোয়াংডন সেন্টার ডিজিজ কন্ট্রোলের উপ-প্রধান সং তি বলেন, স্থানীয় গণমাধ্যম রিপোর্ট করেছে যে যারা করোনায় সংক্রমিত হয়েছিল এদের অনেকে এখনো ফুসফুস সংক্রমণে সুস্থ হননি। পরীক্ষায় এখনো ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। ‘গোয়াংডংয়ের পিপলস হসপিটাল এন ডিগ্রি ৮’- থেকে ১৩ জনকে ছেড়ে দেয়ার পর তাদের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি (পজিটিভ) পাওয়া যায় কিন্তু কারো দেহে কোনো লক্ষ্মণ পাওয়া যায়নি। মলের নমুনায় তারা ভাইরাস পেয়েছেন যদিও গলা ও নাকের নমুনায় পাওয়া যায়নি।
চীনের অন্যান্য প্রদেশ যেমন সিচোয়ান প্রদেশে, হাইনান প্রদেশে নতুন করে ভাইরাসটির সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। চীনের মোট সংক্রমিতদের ৮০ শতাংশ মৃদু এবং ১৪ শতাংশ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। অবশিষ্ট ৬ শতাংশ খুবই মারাত্মক অবস্থানে। এদেরকে আইসিইউতে রাখতে হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement