২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আইইবি নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ পুনর্নির্বাচন দাবি

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আইইবি নির্বাচনে উপস্থিত ভোটাররা : নয়া দিগন্ত -

বাংলাদেশ আইইবি নির্বাচন ২০২০-এ ব্যাপক কারচুপি, অনিয়ম ও জালিয়াতির ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দু’টি প্যানেল এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রকৌশলী মো: মাহমুদ হোসেন ও প্রকৌশলী মিয়া মোহাম্মদ কাইউমের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে জালিয়াতির নির্বাচন বাতিল করে গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থাপনার অধীনে আবার একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত আইইবি নির্বাচন ২০২০-এ তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের পক্ষ থেকে দু’টি প্যানেল এবং জাতীয়তাবাদী সমর্থক প্রকৌশলীদের একটি প্যানেল। বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের দু’টি প্যানেলের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দেন আইইবির বর্তমান ক্ষমতাসীনদের সমর্থক প্রকৌশলী মো: নুরুল হদার নেতৃত্বাধীন প্যানেল এবং অন্যটি বুয়েটের সাবেক ভিসি অধ্যাপক নজরুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন প্যানেল। জাতীয়তাবাদী সমর্থক প্রকৌশলীদের নেতৃত্ব দেন প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেন ও প্রকৌশলী মিয়া মো: কাইউম।
নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে অধ্যাপক নজরুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন প্যানেল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে আবার নির্বাচন দাবি করেছে। জাতীয়তাবাদী সমর্থক প্রকৌশলীদের প্যানেলের পক্ষ থেকে প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় যে, এবারের আইইবি নির্বাচন আইইবির ইতিহাসে এক জঘন্যতম কলঙ্কের নির্বাচন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। বর্তমান ক্ষমতাসীন আইইবি সভাপতি আ: সবুর সমর্থিত প্রকৌশলী নুরুল হুদার প্যানেলকে জয়ী করার জন্য ক্ষমতাসীনরা ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতির আশ্রয় নেয়। বহিরাগত লোক এনে সকাল থেকেই আইইবি অঙ্গন দখল করে রাখা হয়। বহিরাগতদের ব্যালট সরবরাহ করে ভুয়া ভোট দেয়ানো হয়। আইইবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আইইবি অঙ্গনে ক্যাম্প স্থাপনের নিয়ম না থাকলেও তারা অসংখ্য ক্যাম্প স্থাপন করেছে। প্রকৌশলীদের নামে বহিরাগতদের ভুয়া আইডি কার্ড সরবরাহ করেছে। বৈধ ভোটাররা ব্যালট সংগ্রহ করতে গেলে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। ভুয়া ব্যালট দিয়ে বাক্স ভর্তি করা হয়।
বেলা আড়াইটার মধ্যেই সব ব্যালট নিঃশেষ করে ফেলা হয়। বৈধ ভোটাররা ভোট দিতে লাইনে দাঁড়ালেও তাদের ব্যালট দেয়া হয়নি। ভোটের আগের রাতে অধ্যাপক নজরুলের প্যানেলের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আমিনুর রশিদ মাহমুদকে আক্রমণ করে মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয় এবং হাত ভেঙে ফেলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেন ও প্রকৌশলী মিয়া মো: কাইউম জানান, তারা জালিয়াতির নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিটির কাছে আবদেন করেছেন। আবেদনে বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যস্থাপনা, জালিয়াতি ও ভুয়া ভোটের ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। ভুয়া আইডি কার্ডধারী ভুয়া ভোটারকে হাতেনাতে ধরে নির্বাচন কমিটির কাছে হাজির করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আইইবি নির্বাচনে মোট ভোটার ১৮৮০৫ জন। ঢাকাসহ সারাদেশের ১৮টি কেন্দ্র এবং ৩২টি উপকেন্দ্রে ভোট হয়। ঢাকা কেন্দ্রে ভোটার ১২ হাজারের বেশি। সব কেন্দ্র এবং উপকেন্দ্রেই ভোট জালিয়াতি হয়েছে। ফলে পুরো নির্বাচনই তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই কারচুপির ফলে আইইবির মতো একটি সম্মানজনক পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, প্রকৌশলী জাকির হোসেন, প্রকৌশলী নিয়াজ উদ্দিন মিয়া, প্রকৌশলী কে এম আসাদুজ্জামান, প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম ও প্রকৌশলী হাসিন আহমেদ। এ ছাড়াও আইইবির সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী আ ন হ আকতার হোসেনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement