প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই পাপিয়া গ্রেফতার : কাদের

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই পাপিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘পাপিয়ার ঘটনা প্রধানমন্ত্রী নিজেই জানতেন। আর প্রধানমন্ত্রী নিজেই নির্দেশ দিয়েছেন গ্রেফতার করে পাপিয়াকে শাস্তি দিতে। দলীয় কর্মীদের শাস্তি দেয়ার সৎসাহস একমাত্র শেখ হাসিনারই রয়েছে। সুতরাং, অপরাধ করে কেউ পার পাবে, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এ বিষয়ে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অব্যাহত রয়েছে।’
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সেতু ভবনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের চুক্তি সই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। কাদের আরো বলেন, ‘বিএনপিও তো ক্ষমতায় ছিল, তাদের নেতাকর্মীরা কত লুটপাট ও দুর্নীতি করেছে কিন্তু কোনো অপকর্মের জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের শাস্তি দিয়েছে এ নজির নেই। এ সৎসাহস তাদের নেই। এ সৎসাহস একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রয়েছে। কঠোর শাস্তি আমরাই দেই।’ অপকর্মের কারণে ছাত্রলীগ-যুবলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের অব্যাহতি দেয়ার মতো যুব মহিলা লীগের ক্ষেত্রেও এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ ধরনের সিদ্ধান্ত আমাদের দলের অভ্যন্তরের বিষয়, যেটা দলের অভ্যন্তরে আলোচনা হবে। এমনিতেই যুব মহিলা লীগের সম্মেলনের সময় চলে এসেছে। মার্চে তাদের মেয়াদ শেষ হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত শুদ্ধি অভিযানের মধ্যেই পাপিয়ার এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসা অভিযানের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কি না- এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ কত কোটি লোকের দেশ? বাংলাদেশে এর আগে যারা ক্ষমতায় ছিল সেই বিএনপি কোনো নেতা কোনোকর্মীকে অপকর্মের জন্য শাস্তি দিয়েছে? যে সৎসাহস শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন, এই সৎসাহস বাংলাদেশে আর কোনো রাজনৈতিক দল দেখাতে পারেনি। আমরা একটি বড় দল, এই দলে ভালো-খারাপ সবই আছে। সব আমরা ভালো লোক, এই দাবি আমি করি না। তবে খারাপ লোকদের চিহ্নিত করে তাদের অপকর্মের জন্য শাস্তি দেয়ার বিধান এই দলে আছে।’
জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে নিতে সরকার নিজেই দলের ‘মুখরোচক’ অপকর্ম প্রকাশ করছে- বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কাদের বলেন, ‘বিএনপি অভিযোগ আনবেই, অভিযোগ আনা বিএনপির স্বভাব। অভিযোগ আনা ছাড়া বিএনপির আর কোনো রাজনীতি নেই।’
দলের যেসব নেতা পাপিয়া-স¤্রাটের পেছনে থেকে ইন্ধন দিচ্ছেন তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নিচ্ছে কি না- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সবার ব্যাপারে ভাবনা আছে, কারা কাদের পেছনে আছে। কত রকমের শাস্তি আছে, অনেকে হয়তোবা দৃশ্যপটের বাইরে আছে। দেখা গেছে, তারা দলে বা সরকারের কোনো পদে পদায়ন পাচ্ছে না, এটাও তো শাস্তি।’
নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন শামীমা নূর পাপিয়া। গত শনিবার ঢাকা বিমানবন্দর এলাকা থেকে শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন এবং তাদের দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর যুব মহিলা লীগ থেকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আজীবনের জন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়।
মাদক-অস্ত্র চোরাচালান, জমি দখল করিয়ে দেয়া, হোটেলে নারীদের দিয়ে যৌনবাণিজ্য থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জনের অভিযোগে পাপিয়াকে গ্রেফতার এখন সারা দেশে আলোচিত ঘটনা।