২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সেমিনারে অভিমত

হেলথ টেকনোলজির ৫৭ হাজার দক্ষ জনবল অনিশ্চয়তায়

-

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দেশের প্রায় ৪ শত মেডিক্যাল টেকনোলজিতে অধ্যয়নরত প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী এবং পাস করে কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত ৩২ হাজার মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট এবং নার্স অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে নার্সিং ও মেডিক্যাল টেকনোলজি কোর্সে চলতি বছর ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করে দেয়ায় বিকাশমান প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ধ্বংসের অপেক্ষায়।
বোর্ড অ্যাফিলিয়েটেড সোসাইটি ফর মেডিক্যাল টেকনোলজি ইনস্টিটিউশনের (বামির) উদ্যোগে গতকাল জাতীয় প্রেস কাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এই অভিমত দেন। বক্তারা স্বাস্থ্য খাতে দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে নার্সিং ও মেডিক্যাল টেকনোলজি শিক্ষাকে আরও যুগোপযোগী করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, সার্কুলার দিয়ে জাতীয় সংসদে পাসকৃত কোনো আইন রহিত বা বাতিল করা যায় না। তারা বলেন, বিদ্যমান আইনে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ‘ডিপ্লোমা-ইন-মেডিক্যাল টেকনোলজি ও নার্সিং’ কোর্স পরিচালিত হয়ে আসছে। এখন আমলাতান্ত্রিক প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যেই এটিকে রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদের অধীনে নেয়ার আড়ালে বিকাশমান এ সেক্টরকে ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে। তারা এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আ আ স ম আরেফিন সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম। সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান। সভাপতিত্ব করেন বামি উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক ডা: এম এ বাসেদ। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বামি সভাপতি অধ্যাপক ডা: এম এম কিরন। সঞ্চালন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো: সোহরাব হোসেন।
সাবেক ভিসি অধ্যাপক আ আ স ম আরেফিন সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধু কেরানীনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তে স্বাধীন দেশের উপযোগী কারিগরি ও প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ জনবল গড়ে তোলার লক্ষ্যে কুদরত-ই খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন। সে চিন্তার আলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করছে। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে স্বাস্থ্য সেক্টরে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। মেডিক্যাল চিকিৎসার মানোন্নয়নে টেকনোলজিস্টদের ভূমিকা তুলে ধরে এ শিক্ষাবিদ বলেন, কোনো পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই দেশের বিকাশমান টেকনোলজি ও নার্সিং শিক্ষার কর্তৃত্ব পরিবর্তন যুক্তিযুক্ত নয়।
সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, জাতীয় সংসদের আইন কোনো আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে বাতিলের সুযোগ নেই। তিনি বলেন, শিক্ষা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লালিত স্বপ্ন নস্যাতে আমলাতান্ত্রিক এ চক্রান্ত চলছে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশের যেকোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সনদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদান করতে পারে। অন্য কোনো সংস্থার এ ধরনের এখতিয়ার নেই।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা: এম এম কিরন বলেন, সার্কুলার দিয়ে কোর্স বন্ধের সিদ্ধান্ত নার্সিং ও মেডিক্যাল টেকনোলজি শিক্ষা ধ্বংসের চক্রান্তের অংশ। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে নার্সিং ও মেডিক্যাল টেকনোলজি কোর্সে চলতি বছর ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করে দেয়ায় বিকাশমান প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস ছাড়াও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement