গাজীপুরে বাসে গণধর্ষণ গ্রেফতার তিনজন আদালতে অভিযোগ স্বীকার

হত্যার ভয় দেখিয়ে আটকে রেখে গাজীপুরে যাত্রীবাহী বাসে পাঁচ সন্তানের জননীকে (৩৫) গণধর্ষণে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুতই অভিযোগপত্র দিবে পুলিশ। গত বুধবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া পেয়ারাবাগান এলাকায় ঢাকা বাইপাস সড়কে এক নারীকে (৩৫) বাসের ভেতরে গামছা দিয়ে বেঁধে বাসের চালক, কন্ডাক্টর ও হেলপার এবং অজ্ঞাত আরো এক ব্যক্তি পালাক্রমে ধর্ষণ করে। বৃহস্পতিবার এজাহারভূক্ত তিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ আদালতে পাঠালে ধর্ষকরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আসামীদের কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) এ কে এম আহসান হাবীব জানান, গ্রেফতার হওয়া এজাহারভূক্ত তিন ধর্ষক দোষ শিকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
গ্রেপ্তরকৃতরা হলো- চালক আমীর হোসেন(২৭) শেরপুরের নকলা থানার ধনাকুশ গ্রামের ওমর আলীর ছেলে, বাসের কন্ট্রাক্টর অমিত শীল (২২) একই জেলা ও থানার ইশিবপুর এলাকার সুশীল চন্দ্র শীলের ছেলে এবং বাসের হেলপার মোঃ মোজাম্মেল (২৩) ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ঠাকুরবাহাই এলাকার আতাউর রহমানের ছেলে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নন্দলাল চৌধুরী জানান, বুধবার রাতে এক নারী গাজীপুর মহনগরীর টঙ্গী থেকে গাজীপুর সদর উপজেলার মেম্বার বাড়ি এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। তিনি রাতেই অপর এক নারীসহ টঙ্গী যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্থানীয় মেম্বারবাড়ী বাসষ্ট্যান্ড হতে ইছামতি পরিবহনের একটি বাসে উঠেন। বাসটি গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তায় পৌছানোর পর বাস চালক ও সহকারীরা যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। তখন বাসে ওই দুই নারীসহ ৪/৫ জন যাত্রী ছিলেন। চালক বাসটি নিয়ে চান্দনা চৌরাস্তা হতে ভোগড়া বাইপাস মোড় পৌঁছার পর দুই নারী ছাড়া বাস থেকে অন্য যাত্রীদের ও নামিয়ে দেয় চালকের সহকারীরা। পরে ওই দুই নারী বাস থেকে নামার চেষ্টা করলেও বাসের চালকের সহযোগীরা তাদের ধাক্কা দিয়া বাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দ্রুত গতিতে পশ্চিমে ভোগড়া পেয়ারা বাগানের দিকে চলে যায়। পরে ধর্ষকরা রাত্র পৌনে ১২টার দিকে ভোগড়া এলাকার গরুকাটা ব্রিজের কাছে পৌঁছালে এক পর্যায়ে বাসের দরজা বন্ধ করে দেয় বাসের সহকারীরা। এসময় দুই নারী ডাকচিৎকারের চেষ্টা করলে ধর্ষকরা ওই দুই গৃহবধুকে হত্যার ভয় দেখিয়ে বাসের পিছনে নিয়ে বেঁধে রাখে। পরে গ্রেপ্তারকৃতরা এক নারীকে (৩৫) বাসের ভেতরে দুই সিটের মাঝে গামছা দিয়ে তার দুই পা সিটের সঙ্গে বেঁধে ফেলে। পরে বাসের চালক, কন্ট্রাক্টর ও হেলপার এবং অজ্ঞাত আরো এক ব্যক্তি মিলে ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। বৃহস্পতিবার ভোরে ধর্ষকরা বাস থেকে নেমে পালিয়ে যায়। পরে দুই নারীর ডাক চিৎকার শুনে স্থানীয়রা তাদের বাস থেকে উদ্ধার করে বাসন থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বাসটি জব্দ করে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার অপর নারী (৫০) বাসন থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই দিনই মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে। শনিবার তিন ধর্ষক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আসামীদের কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) এ কে এম আহসান হাবীব জানান, ধর্ষকরা দোষ শিকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামীদের স্থায়ি ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া সহ তদন্ত শেষে দ্রুতই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করবেন।