২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
একান্ত সাক্ষাৎকারে রুহুল কুদ্দুস কাজল

প্রভাবমুক্ত বিচারব্যবস্থায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে

-

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আসন্ন নির্বাচনে সম্পাদক পদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রার্থী হিসেবে লড়তে চান তরুণ আইনবিদ ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল। তিনি বলেছেন, আদালতকে ব্যবহার এবং আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করার মতো হীন ষড়যন্ত্র বিভিন্ন পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় করা হয়েছে। সেগুলোকে মোকাবেলা করে আইনজীবীবান্ধব, সাধারণ বিচারপ্রার্থীবান্ধব বিচার ব্যবস্থায় মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে তিনি মনে করেন। নয়া দিগন্তকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন থেকে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীরা তাদের স্বার্থ থেকে এবং আদালত প্রাঙ্গণে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার প্রাপ্তি ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি সরকারের নানা চাহিদার কারণে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বন্দীরাও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং সরকার তাদের চাহিদাটা আল্টিমেটলি আদালতের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে। এক্ষেত্রে সাধারণ আইনজীবীরাই কিন্তু সাধারণ মানুষের ভয়েস আদালতের সামনে তুলে ধরছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আদালতে জামিন না পাওয়া প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আমরা যেকোনো মামলায় এমনকি নয় বা ১০ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামির মামলায়ও অহরহ জামিন পাচ্ছি। সেখানে আজকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, যিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তাকে একটা মিথ্যা বানোয়াট মামলায় দীর্ঘ দিন কারাগারে রাখা হয়েছে। তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না। জামিন নিয়ে কত তালবাহানা করা হচ্ছে। জামিনযোগ্য ধারায়ও তাকে জামিন দেয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্টে পর্যন্ত তার জন্য ফাইট করেও কাজ হয়নি। রাজনৈতিক কারণে এভাবে বিরোধী নেতৃবৃন্দকে হয়রানি করার জন্য আদালতকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে আদালতের মাধ্যমে এ ধরনের যে হীন চেষ্টা চলেছে, আইনজীবী সমিতির সম্পাদক নির্বাচিত হলে অবশ্যই আমি এগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করব, ইনশা আল্লাহ।
সাক্ষাৎকারে ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের কল্যাণে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এগুলোর মধ্যে আছেÑ বিচারপ্রার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে বিচারকার্যে বার সমিতির অংশগ্রহণ বাড়ানো, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে টাউট-বাটপার উচ্ছেদ, নবীন আইনজীবীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং বার ও বেঞ্চের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা। বিজয়ী হলে এগুলো বাস্তবায়ন করাই হবে তার অন্যতম অঙ্গীকার। এখানে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো :
নয়া দিগন্ত : সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে আপনার সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ আসতে পারে?
ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে রাজনৈতিকভাবে আইনজীবীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে থাকেন। আমি আশা করছি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে আমি প্রার্থী হবো এবং সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি আমার কাছে উঠে এসেছে সেটি হলো, বিভিন্ন সময় আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তর করার যে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র বিভিন্ন পক্ষ থেকে করা হয়ে থাকে সেগুলোকে মোকাবেলা করা। এক্ষেত্রে প্রশাসনিকভাবে আইনজীবী ও সাধারণ বিচারপ্রার্থীবান্ধব একটি বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া- যেখানে মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। নির্বাচিত হলে সেটি করাই আমার প্রথম লক্ষ্য হবে। দ্বিতীয়ত, যদি দেখি এ ধরনের প্রক্রিয়ায় কোনো কাজ হচ্ছে না, তাহলে আইনজীবীদের ন্যায় সঙ্গত দাবি আদায় ও আইন পেশার অধিকার রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করব। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি একটি বড় সংগঠন। যেকোনো কতৃর্পক্ষ বা কোনো ব্যক্তির একগুয়েমি বা পার্টিজান বা দলকানা আচরণের বিরুদ্ধে আইনজীবীরা নিশ্চই সোচ্চার ভূমিকা পালন করবেন।
নয়া দিগন্ত : কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন?
ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল: প্রথম কথা হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট সমিতির সম্পাদক আইনজীবীদের প্রতিনিধি হবেন। সুতরাং, সুপ্রিম কোর্টের অভিভাবক প্রধান বিচারপতির সাথে আমরা বসে আলোচনা করে এ বিষয়গুলো বিভিন্ন বেঞ্চে উত্থাপন করব। বিভিন্ন বেঞ্চে যেসব ভালো ও সিনিয়র বিচারপতি আছেন তাদেরকে আরো বেশি দায়িত্ব প্রদান করা এবং তারা যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন সেই লক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতা করা। বিভিন্ন সময় আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করার যে হীন চেষ্টা বিভিন্ন পক্ষ থেকে করা হয় সেগুলোকে মোকাবেলা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। সেটি করাই আমার প্রথম লক্ষ্য। আমি মনে করি উচ্চ আদালতের আইনজীবীদের অতীত ঐতিহ্য আছে, অতীত গৌরব আছে এবং সেই গৌরব থেকেই তারা আগামী দিনের কার্যক্রম নির্ধারণ করবেন।
নয়া দিগন্ত : বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল : আমি সুপ্রিম কোর্টে আমার ওকালতির বয়স ২৪ বছর। সুতরাং, প্রত্যেক আইনজীবীর সাথে আমরা ওঠাবসা এবং সুসম্পর্ক রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এই বারান্দায় প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের মধ্যে আমার বিচরণ। সুতরাং, এখানে দল বিষয় নয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির যেসব সদস্য আছেন তারা ভোটের অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে কাছের মানুষকে বেছে নেবেন। আমি তাদের সুখে-দুখে পাশে থাকি এবং আমার সাথে তাদের পেশাগত সম্পর্ক আছে। যেহেতু এটা একটা পেশাভিত্তিক সংগঠন সুতরাং এ পেশায় তারা আমার সম্পর্কটাই মূল্যায়ন করবেন। আমি বিশ্বাস করিÑ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রত্যেক সদস্যের সাথে আমার দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। আমি তাদের সাথে ওঠা বসা করি। এটা আমার সেকেন্ড হোম। আমি দিনের বেশির ভাগ সময় এখানে কাটাই। সুতরাং তাদের সাথে আমার পেশাগত ছাড়াও একটা আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আমি আশা করি এসব বিষয় তারা মূল্যায়ন করে আমাকে নির্বাচিত করবেন।
নয়া দিগন্ত : সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে আপনি কি দলীয় বা আইনজীবী ফোরামের সমর্থন পেয়েছেন?
ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল : আমাদের মনোনয়নের বিষয়িট এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে আমি দলের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত আশাবাদী। সিনিয়র আইনজীবীদের আমার প্রতি সমর্থন আছে বলে আমি মনে করি। তবে চূড়ান্তভাবে কেউ প্রার্থী হওয়ার পর আমাদের এই প্রতিযোগিতাটা আর থাকে না। যিনি প্রার্থী হন তার জন্য আমরা সবাই একত্রে কাজ করি।
ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল ১৯৯৫ সালে জজ কোর্টে এবং ১৯৯৬ সাল থেকে হাইকোর্টে আইন পেশা শুরু করেন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে মামলা করছেন। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের একজন সদস্য। মামলা জর্জরিত বিএনপি নেতাকর্মীদের পক্ষে সব সময় তিনি আদালতে দাঁড়ান। তিনি বিভিন্ন সময় হাইকোর্ট এবং আপিল বিভাগে বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলা করেছেন। তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে বা জনস্বার্থে অনেক মামলা করেছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সাভারে বুধবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে গাজা ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কে জনতার অবরোধ ভাঙতে টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে ১০টি সহযোগিতা নথি সই ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি’ মিলান ডার্বি জিতে শিরোপা পুনরুদ্ধার ইন্টারের কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক আহত অপহরণের ২৬ ঘণ্টা পর সাংবাদিকের বড় ভাই উদ্ধার মালয়েশিয়ায় ২ হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে ১০ নৌ-সদস্য নিহত প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে কাতারের আমির বাগাতিপাড়ায় আগুনে পুড়লো ৭ কৃষক পরিবারের বসতঘরসহ গরু-ছাগল

সকল