মুখ দিয়ে লিখে জিপিএ ৫ অদম্য লিতুন জিরার মুখে হাসি ফোটাল বসুন্ধরা গ্রæপ
- আবদুল মতিন মনিরামপুর (যশোর)
- ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
‘বসুন্ধরার খাতাতেই আমি লিখি। বসুন্ধরার গ্রæপের নাম আমি শুনেছি। সেই বসুন্ধরা গ্রæপের স্যারেরা ঢাকা থেকে আমার বাড়িতে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমাকে পাঁচ লাখ টাকার চেক, স্কুল ব্যাগ, আমার পরিবারের সবার জন্য ম্যালা উপহারসামগ্রী দিয়েছেন। আমি খুবই খুশি, আমি আনন্দিত। এ দিনটি আমার জীবনে একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে’। এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করে কথাগুলো বলছিল মনিরামপুরের দুই হাত, দুই পাবিহীন প্রতিবন্ধী সেই শিশু লিতুন জিরা।
গতকাল শনিবার দুপুরে লিতুন জিরার বাড়িতে গিয়ে বসুন্ধরা গ্রæপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান সানবীর এর পÿে বসুন্ধরা গ্রæপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (হেড অব বাল্ক সেলস) মো: রেদোয়ানুর রহমান লিতুন জিরার হাতে পাঁচ লাখ টাকার চেক, স্কুল ব্যাগ ও উপহারসামগ্রী তুলে দেন। এ সময় বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড ও বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রডাক্ট লিমিটেডের উইং ম্যানেজার মো: মাহবুবুর রহমান, বসুন্ধরা গ্রæপের বাল্ক সেলসের ডেপুটি ম্যানেজার মো: শহিদুল ইসলাম, ডিভিশনাল সেলস ইনচার্জ জিএম কামরুজ্জামান, এরিয়া সেলস ম্যানেজার মো: জাহিদুল ইসলাম, টেরিটরি সেলস এক্সিকিউটিভ মো: রঞ্জু সরকার উপস্থিত ছিলেন।
চেক ও উপহারসামগ্রী তুলে দেয়ার সময় রেদোয়ানুর রহমান বলেন, বসুন্ধরা গ্রæপ অসহায় প্রতিবন্ধীদের সেবা ও তাদের কল্যাণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে কাজ করছে। লিতুন জিরার পরিবার চাইলে বসুন্ধরা গ্রæপের প্রতিষ্ঠিত সেসব প্রতিষ্ঠানে তাকে সংযুক্ত করা যেতে পারে। তার পরিবারের পÿ থেকে লিতুন জিরাকে ভবিষ্যৎ লেখাপড়াসহ সব দায়িত্ব নেয়ার আবেদন করলে তা বসুন্ধরা গ্রæপের ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা করা যাবে।
লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, বসুন্ধরা গ্রæপ আজ আমার বাড়িতে এসে পাঁচ লাখ টাকার চেকসহ উপহারসামগ্রী তুলে দিয়েছেন, আমার সন্তান ও আমার পরিবারের সাথে কথা বলেছেন। ভবিষ্যতেও আমরা চাইলে লিতুন জিরার জন্য সব কিছুর দায়িত্ব নেয়ারও প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। এতেই প্রমাণ হয় বসুন্ধরা গ্রæপ দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে।
উলেøখ্য, মনিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগমের মেয়ে লিতুন জিরা। দুই হাত-পাবিহীন অবস্থায় জন্ম নেয় সে। লিতুন জিরা স্থানীয় খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালের প্রাথমিক শিÿা সমাপনী পরীÿায় (পিইসি) অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে। নয়া দিগন্তসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বর্তমানে লিতুন জিরা স্থানীয় গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। অদম্য মেধা আর ইচ্ছা শক্তি তার। হাত-পা না থাকায় মুখ দিয়ে লেখে সে। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে শুধু ক্লাসে ফার্স্ট হয়নি, হয়েছে স্কুলেও ফার্স্ট। লেখাপড়া শিখে সমাজের অন্যদের মতো মানুষ হতে চায় লিতুন জিরা। সমাজের বোঝা কিংবা পরনির্ভরশীল নয়, আত্মনির্ভরশীল হতে চায় সে। সহপাঠী বান্ধবী মুন্নী আক্তার জানায়, লিতুন জিরা আমাদের ভালো বন্ধু। সে খুব মেধাবী। আমরা কোনো কিছু না বুঝলে তার কাছ থেকে বুঝে নিই। প্রতিবেশী শিÿক কায়ছেদ আলী বলেন, লিতুন জিরা অস্বাভাবিক শিশু হলেও তার মধ্যে রয়েছে অদম্য মেধা ও ইচ্ছাশক্তি।
লিতুন জিরার প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিÿক সাজেদা খাতুন বলেন, শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের চেয়ে ভালো সে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা