২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ড্যাবের অভিযোগ

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের তথ্য গোপন করা হচ্ছে

-

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দেয়ার অপপ্রয়াসে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গোপন এবং অসত্য সংবাদ পরিবেশন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়-বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) বিএসএমএমইউ শাখার নেতৃবৃন্দ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তোলেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য পাঠ করেন ড্যাব বিএসএমএমইউ শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা: শেখ ফরহাদ। তিনি বলেন, ইদানীং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা অসত্য, বিভ্রান্তিমূলক ও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা মনে করি খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দেয়ার অপপ্রয়াসে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অসত্য সংবাদ পরিবেশন করেছেন।
ডা: শেখ ফরহাদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল প্রতিবেদন গত ৫ ডিসেম্বর আদালতে দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আবারো ১২ ডিসেম্বর পুনরায় প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন একজন রোগীর মেডিক্যাল রিপোর্ট পেশ করতে এত সময় লাগার কারণ নেই। আমাদের জানা মতে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা তার মেডিক্যাল রিপোর্ট দুই দফা প্রস্তুত করে বিএসএমএমইউ’র ভিসির কাছে জমা দিয়েছেন। তদুপরি অধিকতর পরীক্ষার নামে কালক্ষেপণের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে স্বাস্থ্যঝুঁকির দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে, যা বাংলাদেশের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এটা খালেদা জিয়াকে মৃত্যঝুঁকির দিকে ধাবিত করার অপকৌশল।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে ড্যাব বিএসএমএমইউ শাখা এই সংবাদ সম্মেলন করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ড্যাবের নেতা অধ্যাপক ডা: মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা: মো: সহিদুর রহমান, অধ্যাপক ডা: মুজিবুর রহমান হাওলাদার, ডা: মো: মেহেদী হাসান, যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক ডা: কাজী মাযাহারুল ইসলাম দোলন, ডা: শাহ মুহাম্মদ আমানউল্লাহ, ডা: মো: শহিদুল ইসলাম বাবুল, ডা: এরফানুল হক সিদ্দিকী, ডা: শহিদুল ইসলাম, ডা: হাসনুল আলম শামীম, ডা: মো: রিদওয়ানুল ইসলাম, ডা: শহিদুল হক রাহাত, ডা: মুহাম্মদ জাফর ইকবালসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
ডা: শেখ ফরহাদ বলেন, খালেদা জিয়া চরম অসুস্থতায় ভুগছেন। বাস্তবিক অর্থে তিনি ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে যাচ্ছেন। এই সময় যথাযথ চিকিৎসা না দিলে তার এই অবস্থা স্থায়ীরূপ নিতে পারে। অথচ বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ সরকারের অশুভ ইশারায় জাতিকে বিভ্রান্ত করতে ও খালেদা জিয়ার প্রাপ্য জামিন ভণ্ডুল করতে সত্য গোপন করছেন। জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দ্বারা তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। তাকে জামিন দিয়ে মুক্ত পরিবেশে, তার পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ দেয়া হোক। অন্যথায় চিকিৎসক সমাজ নীরবে বসে থাকবে না। দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন গড়ে তুলবে।
ডা: ফরহাদ বলেন, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে নিজে হেঁটে জেলখানায় প্রবেশ করেন। নিজে হেঁটে দোতলায় তার নির্ধারিত রুমে যান। এমনকি জেলখানা থেকে আগেরবার যখন বিএসএমএমইউতে আসেন তখন গাড়ি থেকে নেমে নিজে লিফট পর্যন্ত হেঁটে যান। সময়ের পরিক্রমায় তিনি কিভাবে আজকের অবস্থায় উপনীত হলেন? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে সঠিক চিকিৎসার অভাবে তিনি ধীরে ধীরে এই অবস্থায় উপনীত হয়েছেন। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ ২৮ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে যা বলেছেন তা সত্যের অপলাপ।


আরো সংবাদ



premium cement