২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘আন্তর্জাতিক আদালতের রায় মানতে সবাই বাধ্য’

রোহিঙ্গা ইস্যু
জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ক সেমিনার : নয়া দিগন্ত -

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় সব দেশ মানতে বাধ্য বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, মিয়ানমার আইসিসি (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) বা আইসিজের (আন্তর্জাতিক বিচার আদালত) সদস্য হোক বা না হোক, অং সান সু চিসহ দেশটির ঊর্ধ্বতন ২০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রায় হলে তারা অন্য দেশে গেলে গ্রেফতার হবেন।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে দৈনিক ভোরের কাগজ আয়োজিত ‘আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বের অনেক দেশে নিজেদের মধ্যেই দ্বন্দ্বে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতাকে বড় করে দেখেছেন বলেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের নিরসন রাতারাতি সম্ভব না। তবে প্রত্যাবাসন হতেই হবে।
শাহরিয়ার আলম আরো বলেন, তদন্তের জন্য আইসিসির নির্দেশের পর রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমার ছাড়াও অনেক দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলর অং সান সু চিকে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে এ অঞ্চল অস্থিতিশীল হবে।
আলোচনা সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল বলেন, উখিয়া ও টেকনাফে বাংলাদেশী রয়েছে সাড়ে ৪ লাখ, আর রোহিঙ্গা ১১ লাখ। এটা এক দিনের সমস্যা না। ৪১ বছর ধরে এই সঙ্কট চলছে। আমরা যদি ভাবি ৪১ বছরের সমস্যা এক দিনে সমাধান করব, সেটা সম্ভব নয়। এজন্য আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের বন্ধু দেশগুলো বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ভাগ করে নিজেদের দেশে থাকার ব্যবস্থা করলে এই সমস্যার অনেকাংশে সমাধান হয়ে যাবে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব:) সাখাওয়াত হোসেন, মিয়ানমার একটি ভিন্ন প্রকৃতির কঠিন রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রটিকে আমরা কতটুকু বুঝি, তাতে সন্দেহ রয়েছে। অথচ মিয়ানমার থেকে পচা পেঁয়াজ আমদানি করতে আমরা দৌড়ঝাপ করছি। তিনি বলেন, আগামী ১০ বছরে আমি সঙ্কটের কোনো সমাধান দেখছি না। কেননা এই সঙ্কটের সুরাহার জন্য রোহিঙ্গাদের ভয়েজ তৈরি করতে হবে। আমরা যদি এখনই রোহিঙ্গাদের ভয়েজ সৃষ্টিতে উদ্যোগ না নেই, তবে এই অঞ্চলে আরেকটি প্যালেস্টাইন জন্ম নেবে।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব:) এমদাদ বলেন, চীন যতক্ষণ মিয়ানমারকে সমর্থন করে যাবে, ততদিন পর্যন্ত রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান কষ্টসাধ্য। এটা সুরাহায় শক্ত কিছু করা যাবে না।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সুরাহার চাবিকাঠি চীনের হাতে। তাই প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে চীনের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, অভিবাসী বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির, সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির ও দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত।


আরো সংবাদ



premium cement