২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
‘অপকর্ম ঢাকতেই মানববন্ধন’

রাবি শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গঠন

-

রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) ফাইন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহরাব মিয়াকে ছাত্রলীগের দুই কর্মী রড দিয়ে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলার জড়িতদের অপকর্ম ঢাকতেই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভিকটিম সোহরাব মিয়া। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও অভিযুক্তদের বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আরিফ বিল্লাহর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন, শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ছাত্রলীগ কর্মী আকরাম হোসেন, নবাব আব্দুল লতিফ হলের ছাত্রলীগ কর্মী রুহুল আমিন, মশিউর রহমান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আবদুল কাদের জিলানী। মানববন্ধন শেষে তারা ছয় দফা দাবি জানিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাকে চিঠি দেন।
দাবিগুলো হলো, অবিলম্বে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, ঘটনার রহস্য উদঘাটন, আবাসিক হলে বহিরাগতদের মাদক আড্ডা বন্ধ করা, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রদান করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার মূল হোতাকে শাস্তির আওতায় আনা, ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত ও এক পক্ষের তথ্য নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না দেয়ার দাবি জানান তারা।
এ দিকে মারধরের ঘটনায় গত রোববার বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন থেকে হামলায় জড়িত দুই ছাত্রলীগ কর্মী ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো: রাকিবুল ইসলাম আসিফ লাক এবং বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো: হুমায়ুন কবির নাহিদকে সাময়িক বহিষ্কার করেন প্রশাসন।
এ ছাড়া বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এম এ বারী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সিন্ডিকেট সদস্য ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: হুমায়ুন কবীরকে সভাপতি ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানকে সদস্যসচিব করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।
তদন্ত কমিটির অন্যান্যরা হলেন, সিন্ডিকেট সদস্য ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো: জুলকার নায়েন ও সহকারী প্রক্টর ড. মো: হাসানুর রহমান। বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
এর আগে গত শুক্রবার মধ্যরাতে সোহরাব মিয়াকে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ২৫৪ নম্বর রুমে ডেকে নিয়ে রড দিয়ে মাথা ও হাতে বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মী রাকিবুল ইসলাম (আসিফ লাক) ও হুমায়ুন কবির নাহিদ। একপর্যায়ে সোহরাব রক্তাক্ত হলে তারা মারধর বন্ধ করে। পরে সোহরাবের বন্ধুরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে ও পরে রামেকে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় পরদিন শনিবার ভুক্তভোগী সোহরাব হোসেন নিজে বাদি হয়ে রাকিবুল ইসলাম ওরফে আসিফ লাক, হুমায়ুন কবির নাহিদ এবং আকিবুল ইসলাম রিফাতের নাম উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। সেদিন বিকেলে আকিবুল ইসলাম রিফাতকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে মতিহার থানা পুলিশ।
বাকিদের গ্রেফতার বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, ওই দুই আসামি এখন রাজশাহীর বাইরে অবস্থান করছে বলে জেনেছি। তার গ্রেফতারের জন্য পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement