২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

আনসার আল ইসলামের ৬ সদস্য গ্রেফতার

-

রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুর ও সাতক্ষীরা থেকে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রবাদী সংগঠন আনসার আল ইসলামের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। গ্রেফতারকৃতরা হলেনÑ শফিকুল ইসলাম ওরফে সাগর ওরফে সালমান মুক্তাদির (২১), ইলিয়াস হাওলাদার ওরফে খাত্তাব (৩২), ইকরামুল ইসলাম ওরফে আমির হামজা (২১), আমির হোসেন (২৬), শিপন মীর ওরফে আব্দুর রব (৩৩) ও ওয়ালিউল্লাহ ওরফে আবদুর রহমান (২৫)। এ সময় তাদের কাছ থেকে আনসার আল ইসলামের বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদ সম্পর্কিত বই, লিফলেট, উগ্রবাদী ডিজিটাল কনটেন্ট, মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে র্যাব।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃতদের লোন উলফ অ্যাটাকের পরিকল্পনা ছিল। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা ‘কাট আউট’ পদ্ধতিতে নিজেদের মধ্যে প্রোটেকটিভ অ্যাপ ব্যবহার করে সাংগঠনিক কাজ করত।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো: মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুর ও সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর এলাকা থেকে আনসার আল ইসলামের সক্রিয় ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা দুই থেকে পাঁচ বছর ধরে আনসার আল ইসলামের সাথে জড়িত। তারা অনলাইনে বিভিন্ন প্রোটেকটিভ অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করত, যা কি না ইন্টারসেপ করা যায় না। তারা কথিত ইসলামী শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। তাদের আকস্মিক আক্রমণের পরিকল্পনাকে তারা তাদের সংগঠনের ভাষায় লোন উলফ অ্যাটাক বলে থাকে। এ ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় আগ্নেয়াস্ত্রের পরিবর্তে চাপাতি ব্যবহার করে।
মোজাম্মেল হক বলেন, উগ্রবাদী তৎপরতা, প্রশিক্ষণ ও করণীয় সম্পর্কে তারা নিজেদের মধ্যে অনলাইনে যোগাযোগ করে। তবে কোনো নাশকতার পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ, গোপনীয় তথ্য সরবরাহ ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মাঝে মধ্যে সরাসরি দেখা সাক্ষাৎ করে থাকে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতার শফিকুল ইসলাম বর্তমানে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পঞ্চম বর্ষের ছাত্র। সে শীর্ষ নেতার সাথে অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে পরিচিত হয় এবং নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিল। গ্রেফতার ইলিয়াস হাওলাদার অনলাইনে খাত্তাব ছদ্মনাম ব্যবহার করে উগ্রবাদী সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করে। ছাত্রজীবনে সে হরকাতুল জিহাদের সাথে যুক্ত ছিল। সে সবসময় সে সশস্ত্র উগ্রবাদে অংশগ্রহণে আগ্রহী ছিল। সংগঠনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য বিভিন্ন অনলাইন অ্যাপ হাতে কলমে শিক্ষা দেয়। সে শীর্ষ উগ্রবাদীদের মধ্যে একজন। এ ছাড়া গ্রেফতার ইকরামুল ইসলাম অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদসংক্রান্ত পোস্ট ডাউনলোড করে এবং বিভিন্ন উগ্রবাদীর সাথে পরিচয় হয়। সে উগ্রবাদী সংগঠনে বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তা করে। এ ছাড়া সে উগ্রবাদীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত এবং তাদের সাথে নিয়মিত মিটিংয়ের আয়োজন করত।
এ দিকে আমীর হোসাইন আনসার আল ইসলামের একজন সক্রিয় সদস্য। সে আনসার আল-ইসলামের বিভিন্ন ভিডিও, বইপত্র, মোবাইল অ্যাপ সংগ্রহ করতেন এবং সংগঠনে প্রতি মাসে চাঁদা দিত। সে ছয়টি উগ্রবাদী ফেসবুক পেজের অ্যাডমিন। আমীর হোসাইন সাতক্ষীরা জেলার আনসার আল ইসলামের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত। শিপন মীর আনসার আল ইসলাম শীর্ষ নেতার সাথে অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে পরিচিত হয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিল বলে দাবি করেছে র্যাব।
এ ছাড়া ওয়ালি উল্লাহ আনসার আল ইসলামের ভিডিও, বইপত্র, মোবাইল অ্যাপ সংগ্রহ করতেন এবং সংগঠন পরিচালনা ও ব্যয়নির্বাহের জন্য প্রতি মাসে চাঁদা দিতেন। তিনি আনসার আল ইসলামের ঢাকা দক্ষিণ বিভাগের অন্যতম শীর্ষ নেতা।
র্যাব-৪ এর সিও বলেন, উগ্রবাদীদের আটকের সময় তাদের দলের আরো বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়। তাদের আটকের প্রক্রিয়া চলমান আছে। অন্য দিকে আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement