২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজশাহী পলিটেকনিক অধ্যক্ষকে লাঞ্ছনায় আরো ৪ ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার

-

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে টেনেহেঁচড়ে তুলে নিয়ে গিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগের আরো চার কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলোÑ রাজশাহী নগরীর সিপাইপাড়া মহল্লার বাহারাম বাদশার ছেলে মাহাবুব হোসেন (১৯), একই এলাকার সাহেদ আলীর ছেলে নাঈম ইসলাম (১৯), নূর হোসেনের ছেলে মামুন হোসেন শিপন (২০) এবং শিরোইল কলোনি এলাকার কামরুজ্জামানের ছেলে নাইমুজ্জামান (১৯)। সবাই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী।
জড়িতদের ছাড় নেই : বাদশা
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে লাঞ্ছিত করে তুলে নিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়ার ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তার জন্য তিনি ‘যুদ্ধ’ করবেন। গতকাল দুপুরে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে সহানুভূতি জানাতে তার কার্যালয়ে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মূল অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়নি। স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে। রাজশাহীতে তাদের খাতির করা হলেও ঢাকায় হবে না। বিষয়টি নিয়ে তিনি সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এবং শিক্ষামন্ত্রীর সাথে কথা বলবেন জানিয়ে বাদশা বলেন, এই পলিটেকনিকে ছাত্রমৈত্রী নেতা সানিকে খুন করা হয়েছে। তার রক্তের দাগ না মুছতেই মাত্রা অতিক্রম করে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করা হলো। তাদের দমন করা এখন অপরিহার্য দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি ঢাকায় সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথা বলব, যেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়।
বাদশা এ সময় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ওই ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া সংগ্রহ করেন ঘটনার সময়ের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ। এসব তিনি সংসদীয় কমিটি এবং শিক্ষামন্ত্রীকে দেখাবেন বলে জানিয়েছেন।
এ সময় অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, পাওয়ার বিভাগের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান, ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের প্রধান শহিদুল ইসলাম, ইলেকট্রিক মেডিক্যাল বিভাগের প্রধান মো: ইউনুস, পলিকেটনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক পরিষদের সভাপতি এসএম হুমায়ুন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অ্যাকাডেমিক) আলতাফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মিডটার্মে ফেল এবং ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে গত ২ নভেম্বর সকালে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনের কার্যালয়ে গিয়ে চাপ দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে অধ্যক্ষের সাথে তাদের কথাকাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে ওই দিন দুপুরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার পর টেনেহেঁচড়ে তুলে নিয়ে গিয়ে তাকে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়া হয়। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০ জনকে আসামি করে ওই রাতে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেন অধ্যক্ষ।
এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


আরো সংবাদ



premium cement