২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দ্রুত বিধিমালা করার নির্দেশ

-

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য দ্রুত বিধিমালা করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সুশীল সমাজকে অন্তর্ভুক্ত করে এ বিধিমালা প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ মিরপুরের গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা একটি রিটের নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন।
আদালত বলেন, মানবাধিকার কমিশন আধা বিচারিক সংস্থা হিসেবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের যেকোনো তথ্য উপস্থাপনের নির্দেশ দিতে পারে। আইনে তাদের ক্ষমতা দেয়া হয়নি এটা অসত্য। সংস্থাটির ক্ষমতা নেই এটা তারা বলতে পারে না। আর সরকার মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশ প্রতিপালন না করলে সংস্থাটি উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাইতে পারবে।
রায়ে আগামী ছয় মাসের মধ্যে গৃহকর্মী খাদিজার অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে বলেছেন আদালত। রায়ে সাত দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলোÑ মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়ে যে খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে সেই বিধিমালাটি সুশীল সমাজের পরামর্শ নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
এ ছাড়া কমিশনকে আইনের ১৬-ধারা অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই ধারা অনুসারে কমিশন দেওয়ানি আদালতের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে এবং তদন্ত বা অনুসন্ধানের স্বার্থে সাক্ষী ও নথি তলব অথবা জামিনযোগ্য পরোয়ানাও ইস্যু করতে পারে।
যদি কমিশনের কোনো সুপারিশ সরকার অমান্য করে তাহলে সংশ্লিষ্ট কমিশন আইনের ১৯-ধারা এবং সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টের নজরে আনতে হবে।
কমিশন থেকে যেসব আদেশ দেয়া হয় সেসব আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি ৩০ দিনের মধ্যে ইস্যু করতে বলা হয়েছে। এমন মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে তাদের পদ্ধতিগুলো নির্ধারণ করে নিতে হবে।
কমিশনে কোনো অভিযোগ আসার পর তা যেন একজন ব্যক্তির স্বাক্ষরে নিষ্পত্তি বা আদেশ দেয়া না হয়। কমিশন আইনের ১১(৩) বা ২৮-ধারার নিয়ম অনুসারে যথাযথ ক্ষমতা প্রয়োগ করে আদেশ প্রদানকারীদের নাম ও পরিচয় লিখতে হবে।
আদালত বলেছেন, খাদিজার বিষয়ে মানবাধিকার কমিশনকে ৬০ দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ সময়ে খাদিজা ও পরিবারের বক্তব্য শোনে তার মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে কমিশনের ১৯-ধারা অনুসারে অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারকে সুপারিশ করতে হবে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ হাইকোর্টে খাদিজার অভিযোগ নিষ্পত্তিতে মানবাধিকার কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনটি দায়ের করে।
গত ১০ জানুয়ারি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যথাযথ প্রতিকার দিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে নাÑ তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একই সাথে ২০১৩ সালে রাজধানীর মিরপুরে গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনায় কেন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি সে ব্যাপারে এক মাসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতেও স্বরাষ্ট্র সচিবের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

 


আরো সংবাদ



premium cement