২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

যৌন হয়রানির বিচার চেয়ে চাকরিচ্যুত স্কুল শিক্ষিকাকে উল্টো হয়রানি

-

মানহানি এবং যৌন হয়রানির বিচার চাইতে গিয়ে চাকরি হারিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন রাজধানীর তুরাগের কামারপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষিকা। শিক্ষিকার অভিযোগ, চাকরি থেকে বরখাস্ত করেই খ্যান্ত হয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। উল্টো তাকে বিভিন্ন হুমকি ও তার বিরুদ্ধে রটানো হচ্ছে নানা অপবাদ।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সহকারী শিক্ষিকা শাম্মী আক্তার জানান, ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর বাংলার সহকারী শিক্ষক হিসেবে কামারপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদান করেন তিনি। নিজস্ব শিক্ষাকৌশল এবং রোভার স্কাউটিংয়ের কারণে অল্পসময়ই শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। কিন্তু তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে পেছনে লাগেন তারই কয়েকজন সহকর্মী। এরই অংশ হিসেবে তারা শাম্মী আক্তারের ব্যক্তিগত চরিত্র নিয়ে নানা কুৎসা রটাতে থাকেন। এমনকি তাকে কুপ্রস্তাবও দেয়া হয়। এ ঘটনায় তিনি গণিত শিক্ষক সানোয়ার হোসেন, স্কুল ইনচার্জ জানে আলম এবং শিক্ষক হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক খুরশিদ জাহানের কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো শাম্মী আক্তারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।
প্রধান শিক্ষকের কাছে কোনো বিচার না পেয়ে শাম্মী আক্তার তিন শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে যৌন হয়রানি এবং মানহানির পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন।
শাম্মী আক্তার বলেন, আদালতে মামলা দায়েরের পর থেকে মামলা থেকে বাঁচার জন্য প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে অভিযুক্ত শিক্ষকরা তার বিরুদ্ধে একের পর এক বানোয়াট অভিযোগ দাঁড় করিয়ে তাকে শোকজ করে। এমনকি তার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রমূলক তার বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে পিটানোর মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। একপর্যায়ে বানোয়াট অভিযোগে তাকে গত ৫ সেপ্টেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তিনি ৮ সেপ্টেম্বর স্কুলে গেলে গেটে দারোয়ান বাধা দেয়। তাকে বরখাস্তের একটি চিঠি ধরিয়ে দিয়ে স্কুলে যেতে নিষেধ করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, সাধারণত সাময়িক বরখাস্ত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানে হাজিরা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু তিনি হাজিরার জন্য স্কুলে গেলেও তাকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। এঅবস্থায় তিনি মানসিক জীবনযাপন করছেন।
শাম্মী আক্তার জানান, বরখাস্তের প্রতিবাদে তিনি আদালতে পিটিশন দায়ের করেছেন। তিনি চাকরি ফিরে পেতে এবং ষড়যন্ত্রকারীদের কবল থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক খুরশিদ জাহানের মোবাইলে ফোন করলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে পরে প্রধান শিক্ষকের পক্ষে হুমায়ুন কবির নামে একজন ওই স্কুলের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে জানান, বিভিন্ন কারণে সহকারী শিক্ষক শাম্মী আক্তারকে স্কুল কমিটি অব্যাহতি দিয়েছে। এতে প্রধান শিক্ষক বা আমাদের কিছু করার নাই। তার দাবি শাম্মী আক্তার একাধিক অপরাধ করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement